fbpx

শেরপুরে মাছি চাষ হচ্ছে

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

শেরপুর জেলায় চাষ হচ্ছে ‘ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই’ বা প্যারেট পোকা খ্যাত এক প্রজাতির মাছি। এটি মাছ ও মুরগীর একটি উৎকৃষ্ট মানের প্রাকৃতিক খাদ্য।

শেরপুরের নকলার নারায়নখোলার সফিকুর ও জেসমিন দম্পতি ইউটিউব দেখে প্রথববারের মত প্যারেট পোকা চাষ শুরু করে। এই প্রজাতির মাছি চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন তারা। মাছ, মুরগীর খাদ্য সংকট দূরীকরণে এই প্রাকৃতিক খাদ্য ব্যাপক ভূমিকা রাখবে বলে আশা তাদের। এছাড়াও আরো অনেকে আগ্রহী হচ্ছে এই প্রজাতির মাছি চাষ করতে।

শেরপুরে এ পোকা আর কোথাও দেখা যায়নি এর আগে। আর এসব দেখতে ভিড় জমিয়েছে স্থানীয়রা। ‘ব্ল্যাক সোলজার ফ্লাই’ থেকে প্যারোট পোকা উৎপন্ন করতে দরকার মশারি নেট, কয়েকটি পাতিল ও কয়েকটি কাঠের টুকরো।

উদ্যোক্তা শফিকুর রহমান বলেন, ২০২১ সালের শেষ দিকে গাইবান্ধা থেকে ৩ হাজার ৫০০ টাকা খরচ করে ১ কেজি মাছির লার্ভা ক্রয় করার মাধ্যমে কার্যক্রম শুরু করি। ৬/৭ মাসেই আমাদের খামারে ২ হাজার ৭০০ কেজি লার্ভা উৎপাদন হয়। আমরা দুইমাস থেকে পারিবারিক সমস্যার কারণে একটু সময় কম দেয়ায় উৎপাদন কমেছে। এখন আবার সময় দেয়া শুরু করেছি। আশা করি উৎপাদন আগের মত হবে। অল্প খরচে স্বল্প জায়গায় এই মাছি চাষাবাদ করে আমরা ব্যাপক সাফল্য পেয়েছি।

উদ্যোক্তা শফিকুর আরও বলেন, আমরা যে খাওয়া ফেলে দেই। ওই উচ্ছিষ্ট খাবারই এই মাছির প্রধান খাদ্য। বিভিন্ন মানুষের বাসা-বাড়ি/বাজার থেকে ফেলে দেয়া খাদ্য-দ্রব্য (মুরগির বিষ্ঠা, পঁচা সবজি ও মাছের আঁশ) সংগ্রহ করে খামারে নিয়ে আসি। এবং এগুলো মাছিদের খেতে দেই। এতে যেমন পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা যায় তেমন একদিকে তাদের খাদ্যের যোগান হয়। এই মাছি কোন জীবানুবহন না করায় এটি মাছ মুরগীর একটি আদর্শ খাদ্য। ভবিষ্যতে আমি আরো বড় পরিসরে চাষাবাদ করতে চাই প্রাণী সম্পদের সহযোগিতা পেলে। আর পাশাপাশি মানুষের মাঝে উপকারী এই মাছি চাষাবাদ পদ্ধতি পৌঁছে দেয়ার ইচ্ছেও আছে আমার।

উদ্যোক্তা শফিকুরের স্ত্রী জেসমিন আক্তার জানান, আমি আমার স্বামীর খামারে একসাথে কাজ করি। লার্ভা খেয়ে মুরগী সহজেই বড় স্বাস্থ্যবান হচ্ছে এবং ডিমও দিচ্ছে বেশি। আমরা এখনো বিক্রি শুরু করিনি। আমরা আমদের খামারের মুরগিদের খাওয়াচ্ছি আপাতত। এখন বড় আকারে বিক্রির জন্য চাষ শুরু করেছি।

আশপাশের অনেকেই আগ্রহী হয়ে দেখতে আসছে এই মাছির খামার। অনেকেই এটি ব্যবহারে আগ্রহী হয়ে উঠছেন।
নকলা থেকে আসা নাহিদুর রহমান রিজন বলেন, এই পোকা বাস্তবে এই প্রথম দেখলাম আমি। ইউটিউবে আমি এর আগেও দেখছি। এখন বড় খামার করার কাজ শুরু করেছি। আগে অনেকবার করবার চেয়েছিলাম কিন্তু করা হয়নি। কারণ এই পোকা অনেক দূর থেকে আনতে হয়। এখন বাড়ির কাছে পেয়ে তাই চাষ শুরু করব বলো ভাবছি। শেরপুর জেলা প্রাণী সম্পাদ কর্মকর্তা ডা. মো. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, শেরপুরে এ প্রথম তারা এ প্যারেট পোকার চাষ হয়েছে। বাজারে প্রচলিত খাদ্যের চেয়ে এই খাদ্য অনেক বেশি মানসম্পন্ন হওয়ায় মাছ ও মুরগীর জন্য অনেক উপকারী।

অল্প খরচে ছোট জায়গায় এটি চাষ করে লাভবান হওয়া সম্ভব। তাদের এ কাজে সকল ধরনের সহায়তা করবো আমরা। ধীরে-ধীরে এর পরিধি বাড়বে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply