fbpx

সরকারি অফিস থেকেই হোক বিদ্যুৎ সাশ্রয়

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দেশে যখন বিদ্যুত নিয়ে হাহাকার, লোডশেডিং নিয়ে আতঙ্কগ্রস্ত সারাদেশের মানুষ, ঠিক সেই সময়ে সরকারি দপ্তরগুলোতে হাজার হাজার টন এসির ব্যবহার সীমিত না করে, উল্টো সাধারণ মানুষকে বিদ্যুত ব্যবহারে নানাভাবে সাশ্রয়ী হবার পরামর্শ দিচ্ছে সরকার।

জাতীয় দৈনিক দেশরূপান্তরে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, সরকারের ৬টি দপ্তরের সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশনে ব্যবহার হচ্ছে ৯ হাজার ২০০ টন এসি। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হচ্ছে সরকারের রাজস্ব ভবনে, ২ হাজার ৫০০ টন। অতিরিক্ত বিদ্যুত খরচের মিছিলে এরপর এগিয়ে আছে রাজধানীর পান্থপথের সবচেয়ে দৃষ্টিনন্দন পানি ভবন। প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার বর্গফুট আয়তনের ১২ তলা ভবনকে ঠাণ্ডা শীতল রাখতে ব্যবহার করতে হচ্ছে ২ হাজার ৪০০ টন এসি। যার জন্যে প্রতি মাসে বিদ্যুত বিল দিতে হচ্ছে ২৫ থেকে ২৮ লাখ টাকা। বছরে যার পরিমাণ দাড়ায় ৩ কোটি টাকার বেশি। বলা বাহুল্য পানি ভবনের অনেক রুম এখনো খালিই পড়ে আছে।

সরকারি ১৩টি ভবনে রয়েছে সেন্ট্রাল এসির ব্যবস্থা। বাংলাদেশ সচিবালয়ে ৩৬টি মন্ত্রণালয়ে ব্যবহার করা হচ্ছে ৪ হাজার টন শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র। শুধু অর্থ মন্ত্রণালয়ের ভবনে ব্যবহৃত হচ্ছে পনেরশো টন এসি, এক মাসেই যার বিদ্যুত বিল গুনতে হয় ২৮ থেকে ৩০ লাখ টাকা। পিছিয়ে নেই পুলিশ সদর দপ্তরও। এনেক্স ভবনেই ব্যবহার হয় ১ হাজার ২০০ টন এসি। পুরো অফিসে যদি একজনও থাকেন, তবুও করিডোর, সিড়ি, লবি, লিফটজুড়ে চলমান থাকবে সেন্ট্রাল এয়ার কন্ডিশন।

সরকারের এসব নামীদামী দপ্তর ছাড়াও বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ১ হাজার ২০০ টন, বিজ্ঞান জাদুঘরে ১ হাজার টন, জাতীয় আর্কাইভ ভবনে ৬০০ টন, ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ২৫০ টন আর সরকার নিয়ন্ত্রিত দেশের ফাইভ স্টার হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে ব্যবহার হচ্ছে ৯২০ টন এসি। এছাড়া জাতীয় সংসদ ভবন, নির্বাচন কমিশন, আইসিটি ভবন, পর্যটন ভবন, বিডা ভবন, বিটিআরসি ভবন, সিপিটিইউ ভবনে রয়েছে সম্পূর্ণ শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ব্যবস্থা।

বিশেষজ্ঞদের মতে, বহুতল ভবন নির্মাণের সময় সাত বা আট তলার উপরে আর এয়ার কন্ডিশনের প্রয়োজন পড়ে না। পর্যাপ্ত আলো বাতাস আসা যাওয়ার সুযোগ থাকলে এমনিতেই ঠান্ডা থাকে ভবন। এখন যেহেতু দেশে নানা করণেই বিদ্যুতের ঘাটতি দেখা দিয়েছে, তাই বিদ্যুত সাশ্রয়ের দৃষ্টান্ত আগে সরকারি অফিস থেকেই শুরু হওয়া উচিত।

একাধিক প্রকৌশলীর অভিমত, শুধুমাত্র সৌন্দর্য বৃদ্ধির জন্য এসব বহুতল ভবনের পুরোটিকে সেন্ট্রাল এসির মধ্যে রাখা হয়। রূমের সৌন্দর্য যাতে নষ্ট না হয়, তাই এখন বেশীরভাগ ভবনেই সিলিং ফ্যান টানানোর ব্যবস্থা রাখা হয় না। রাজধানীসহ সারাদেশের বহুতল ভবনের উপরিভাগে যদি এয়ারকন্ডিশন ব্যবহার না করা হয়, তাহলে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুত সাশ্রয় হবে। সরকারি বিলাসবহুল এসব ভবনের শীতাতপ নিয়ন্ত্রণযন্ত্র বন্ধ রাখলে, সাধারণ মানুষের ঘরে আরও একটু বেশী সময় আলো জ্বলবে, ফ্যান ঘুরবে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply