পাহাড়ি ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতের কারণে সিলেটের সুনামগঞ্জ ও নেত্রকোণা জেলার হাওর অঞ্চলসহ বেশ কিছু নদ-নদীর পানি বিপৎ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এরই মধ্যে ভারী বৃষ্টিপাতের আভাস দিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
তাদের তথ্যমতে, সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ ও ছাতক পয়েন্টে বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। বিপৎসীমার উপরে উঠে গেছে সীমান্ত নদী যাদুকাটা ও সোমেশ্বরীর পানি।
সোমবার সকালের পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী ২৪ ঘণ্টায় সুরমা-কুশিয়ারাসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সব প্রধান নদ-নদীর পানি সমতলে বৃদ্ধি অব্যাহত থাকতে পারে এবং ভারী বৃষ্টিপাতের পরিপ্রেক্ষিতে কিছু স্থানে বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী-২ মো. শামসুদ্দোহা বলেন, “টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের বিভিন্ন নদ-নদীর পানি গত এক সপ্তাহ ধরে বাড়ছে। সোমবার সকালে সুরমা নদীর পানি সুনামগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার এবং ছাতক পয়েন্টে ৮৯ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।”
এছাড়া তাহিরপুর উপজেলার সীমান্ত নদী যাদুকাটার পানি বিপৎসীমার ১১ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। নেত্রকোণা জেলার সীমান্ত নদী সোমেশ্বরী কলমাকান্দা পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে বইছে।
তিনি আরও বলেন, জেলার লাউড়েরগড় পয়েন্টে ১৯০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত, ছাতকে ১২০ মিলিমিটার, সুনামগঞ্জ সদরে ৭৯ মিলিমিটার এবং দিরাইয়ে ৬৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
অন্যদিকে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে বিশ্বম্ভরপুর-তাহিরপুর সড়কের শক্তিয়ারখলা সাব-মার্জিবল সড়ক ডুবে যান চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। এছাড়া সুনামগঞ্জের সাহেববাড়ি ঘাট ও জগন্নাথবাড়ি এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এই এলাকার প্রধান সড়ক ডুবে গেছে।
সিলেট আবহাওয়া কার্যালয়ের আবহাওয়াবিদ সাইদুর রহমান চৌধুরী বলেন, সোমবার থেকে আগামী তিন দিন সুনামগঞ্জে ও সুনামগঞ্জের উজানে টানা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস আছে। এতে আবারও বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হতে পারে।
পাশাপাশি বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, সারা দেশেই প্রধান প্রধান নদ-নদীর পানি বাড়ছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং সংলগ্ন ভারতের আসাম, মেঘালয় ও হিমালয় পাদদেশীয় পশ্চিমবঙ্গের কিছু স্থানে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে। যার প্রভাবে দেশের ব্রহ্মপুত্র, যমুনা, তিস্তা, ধরলা ও পদ্মা নদীর পানি আগামী ৪৮ ঘণ্টা বাড়তে পারে। তবে তিস্তা নদীর পানি আগামী ২৪ ঘণ্টা স্থিতিশীল থাকতে পারে।