Advertisement
ক্যাসিনোসহ বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও দুর্নীতির অভিযোগে অনুসন্ধানের জন্য চট্টগ্রামের পটিয়ার সংসদ সদস্য ও জাতীয় সংসদের হুইপ শামসুল হক চৌধুরীসহ ছয়জনের দেশত্যাগের ওপর নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে আদালত।
২১ জুন (সোমবার) ঢাকা মহানগর সিনিয়র বিশেষ জজ কে এম ইমরুল কায়েশ এই আদেশ দেন।
পুলিশের বিশেষ শাখার (এসবি) পক্ষ থেকে বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনকে এ নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
৭ জুন এই ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞার আবেদন করেন। ওই আবেদনে বলা হয়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তাদের শত শত কোটি টাকা ঘুষ দিয়ে বড় বড় ঠিকাদারী কাজ নিয়ে বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাত, ক্যাসিনো ব্যবসা করে শত শত কোটি টাকা অবৈধ প্রক্রিয়ায় অর্জনপূর্বক বিদেশে পাচার ও জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন সংক্রান্ত অভিযোগের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে এবং অনুসন্ধানকালে প্রাপ্ত তথ্য প্রমাণে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা প্রমাণিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
হুইপ শামসুল হক চৌধুরীসহ আদালত যাদের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন তারা হলেন, সুনামগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন রতন, ভোলা-৩ আসনের সংসদ সদস্য নুরুন্নবী চৌধুরী, গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম প্রধান সাজ্জাদুল ইসলাম, গণপূর্ত অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (বর্তমানে অবসরপ্রাপ্ত) মো. আব্দুল হাই এবং ঢাকার ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের কর্মচারী আবুল কালাম আজাদ।
দুদকের অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা পরিচালক সৈয়দ ইকবাল তার আবেদনে আরও বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তিনি জানতে পারেন যে, সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ব্যক্তিরা দেশ ত্যাগ করে অন্য দেশে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। তারা যেন দেশ ত্যাগ করতে না পারেন, সেজন্য ২০১৯ সালের ২২ অক্টোবর বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন, ল্যান্ড অ্যান্ড সি পোর্ট) স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ, মালিবাগ বরাবর অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা একটি পত্র প্রেরণ করেন। এছাড়া, সংশ্লিষ্ট অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিদেশ গমন নিষেধাজ্ঞা প্রদানে মাননীয় হাইকোর্ট বিভাগে রিট পিটিশন নং ৮২৪/২০২১ সংক্রান্তে গত ১৬/৩/২১ ইং তারিখে রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে দুর্নীতি দমন কমিশন প্রধান কার্যালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী আদালতের পূর্বানুমতি গ্রহণের আবশ্যকতা রয়েছে।
শুনানি শেষে আদালতের আদেশে বলা হয়, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তিরা বিদেশে পালিয়ে গেলে অনুসন্ধান কার্যক্রম দীর্ঘায়িত ও ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা কর্তৃক দাখিলকৃত দরখাস্ত ও অভিযোগের গুরুত্ব বিবেচনায় দরখাস্তটি মঞ্জুরযোগ্য বলে প্রতীয়মান হয়। সেই সাথে বিশেষ পুলিশ সুপার (ইমিগ্রেশন, ল্যান্ড অ্যান্ড সি পোর্ট), স্পেশাল ব্রাঞ্চ, বাংলাদেশ পুলিশ, মালিবাগ এবং ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ঢাকাসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ প্রদান করা হলো।’
ক্যাসিনোকাণ্ডসহ বিভিন্ন উপায়ে জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জনের অনুসন্ধানে উঠে এসেছে হুইপ শামসুল হকের নাম। অভিযোগ আছে তার সম্পদের পরিমাণ এক হাজার ৫৪৬ শতাংশ বেড়েছে।
Advertisement
