নানা ঘাটের জল খেয়ে শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জিএম কাদেরের ছিনতাই হওয়া আইফোনটি উদ্ধার করে পুলিশ। তারা জানায়, কয়েক দফায় হাত বদল হয়ে সর্বশেষ তা ২২ হাজার টাকায় বিক্রি হয়।
বিমানবন্দর জোনের সহকারী পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় ছিনতাই ও বিক্রির সঙ্গে জড়িত পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িত আজিজুল (২১) ও মো. আজিজ (১৯)। ইসমাইল (২৪), সানাউল্লাহ (৩২) এবং সুবল চন্দ্র ঘোষ (৩২) তিন দফায় মোবাইল ফোনটি কেনেন। বুধবার বিকালে রাজধানীর বসুন্ধরা শপিং মল এলাকায় সুবলের কাছ থেকে মোবাইল ফোনটি কেনার কথা বলে তা উদ্ধার করা হয় বলে জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
তিনি বলেন, ‘আমরা এর পেছনে লেগে ছিলাম, একটার পর একটা ছিনতাইকারীকে ধরে মোবাইলটি উদ্ধার করেছি। উদ্ধারের পর জানা গেল মোবাইলটি ব্যবহার হয়নি।’
সাইফুল ইসলাম জানান, ‘ঘটনার সময় ছিনতাইকারীকে ধরতে জিএম কাদেরের নিরাপত্তা কর্মী ধাওয়া করেছিল, কিন্তু চাকুর ভয় দেখিয়ে সে পালিয়ে যায়। পুলিশ সেই চাকু উদ্ধার করেছে। আর ৫-৬ ধাপে মোবাইলটি হাতবদল হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা একজনকে ধরি, সে বলে আরেকজনের কাছে বিক্রি করেছে, তাকে চিহ্নিত করার পর জানায় আরেক জনের কাছে আছে। এভাবে খোঁজ নিয়ে সর্বশেষ কার কাছে মোবাইলটি আছে নিশ্চিত হওয়ার পর তার কাছ থেকে মোবাইল কেনার জন্য কৌশল অবলম্বন করে বসুন্ধরা সিটিতে আসতে বলা হয়। পরে আমরা পুরোপুরি অক্ষত অবস্থায় জিএম কাদেরের আইফোনটি উদ্ধার করি।’
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে তিনি জানান, প্রথমে আজিজুল এবং আজিজ নামে দুই চিহ্নিত মোবাইল চোরকে ধরার পর তারা জিএম কাদেরের মোবাইল ফোনটি ছিনতাইয়ের কথা স্বীকার করে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানায়, ইসমাইলের কাছে ১৮ হাজার টাকায় ফোনটি বিক্রি করে দিয়েছে। পরে ইসমাইলকে গ্রেপ্তার করা হলে সে জানায়, সানাউল্লাহর কাছে ২০ হাজার টাকায় মোবাইল ফোনটি বিক্রি করেছেন।
সানাউল্লাহকে চিহ্নিত করার পর তিনি বলেন, সুবল চন্দ্র ঘোষের কাছে ২২ হাজার টাকায় ফোনটি বিক্রি করে দিয়েছেন। পরে সানাউল্লাহর মাধ্যমে আইফোনটি অন্য ব্যক্তির জন্য কেনার কথা বলে সুবলকে বসুন্ধরা শপিং মলে আসতে বলা হয়। সুবল মোবাইল নিয়ে আসলে তাকে গ্রেপ্তার করে ফোনটি উদ্ধার করা হয়।
গ্রেপ্তারকৃত এই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।
বিমানবন্দর থানার এসআই রুবেল শেখ বলেন, ‘আজিজুল এবং আজিজ মূল ছিনতাইকারী। আজিজুল ফোনটি টান দিয়ে নিয়ে যায়। এরা দুজনেই ঘটনাস্থলে ছিলেন। সানাউল্লাহ এবং সুবল বসুন্ধরা শপিং মলে দোকানে দোকানে মোবাইল সার্ভিসিংয়ের কাজ করে।’
এর আগে গত ৩১ অগাস্ট রাতে শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের থার্ড টার্মিনালের কাছে সংসদের বিরোধী দলীয় উপনেতা জিএম কাদেরের মোবাইল ফোনটি ছিনতাই হয়।
পুলিশ জানায়, সেসময় গাড়ির জানালা খোলা ছিল এবং আইফোনটি তার হাতে ছিল। এসময় যানজটের মধ্যে গাড়ির গতি একটু ধীর হলে ছিনতাইকারী ছোঁ মেরে ফোনটি নিয়ে যায়। এ ঘটনায় বিমানবন্দর থানায় একটি মামলা হয়।