জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতিবিষয়ক সংস্থা ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি জানিয়েছে, বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক তৈরিকৃত সুন্দরবনের টেকসই উন্নয়নের আরো গবেষণা ও তথ্য সংগ্রহের পরিকল্পনার প্রয়োজন রয়েছে। সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সংস্থাটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী পরিষদের ৪৫তম বর্ধিত সভার এক অধিবেশনে এ সুপারিশগুলো করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) ঢাকার ইউনেস্কো অফিস এ তথ্য জানিয়েছে।
রিয়াদের সম্মেলনে ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি সুন্দরবনের প্রতিরক্ষা উন্নয়ন ও ২০১৯ সালে যৌথ বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্র রিঅ্যাকটিভ মনিটরিং মিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের অগ্রগতিতে বাংলাদেশকে প্রশংসা করেছে। মূল অর্জনের মধ্যে রয়েছে কৌশলগত পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা (সেম্প), ডলফিন সংরক্ষণ পরিকল্পনা ও দুর্ঘটনাজনিত কারণে তেল জাতীয় পদার্থের ছড়িয়ে পড়া নিয়ন্ত্রণের জাতীয় কৌশলনীতি প্রণয়ন। এগুলো বনের অনন্য জীববৈচিত্র্য ও ঐতিহ্য রক্ষার জন্য শক্তিশালী সমন্বয় এবং ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থা প্রদান করবে।
সুন্দরবনের আরো টেকসই ব্যবস্থাপনার দিকে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি কৌশলগত পরিবেশ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনায় (সেম্প) অনুযায়ী বাংলাদেশ সরকারের আরো গবেষণা পরিচালনা ও একটি তথ্যসংগ্রহ পরিকল্পনা প্রতিষ্ঠার প্রয়োজনীয়তা চিহ্নিত করেছে।
কমিটি আরো উল্লেখ করেছে যে, আগামী ২০ বছরে দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের উন্নয়ন থেকে প্রত্যক্ষ, পরোক্ষ ও ক্রমবর্ধমান প্রভাব প্রতিরোধ করার জন্য ভবিষ্যতে সুন্দরবনের ভূমি ও সামুদ্রিক ব্যবস্থার বাস্তুসংস্থান উন্নয়নে যাতে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত না করে তা নিশ্চিত করার জন্য কৌশলগত পরিবেশ মূল্যায়নে (সেম্প) যেমন উল্লেখ করা হয়েছে, তেমনি অব্যাহত প্রচেষ্টার প্রয়োজন।
সুন্দরবনের অসামান্য সার্বজনীন মূল্যবোধের গবেষণা ও পর্যবেক্ষণের বিষয়ে পর্যালোচনার জন্য বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির কাছে বাংলাদেশকে শিগগিরই প্রতিবেদন জমা দেবার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
ইউনেস্কো কমিটি বাংলাদেশকে সুন্দরবনের দীর্ঘমেয়াদি সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকার ভবিষ্যতের সমস্ত শিল্প কারখানা বিকাশের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়, বিশ্ব ঐতিহ্যের প্রেক্ষাপটে প্রভাব মূল্যায়নের জন্য নির্দেশিকা ও টুলকিট ব্যবহার করতে অনুরোধ করা হয়েছে। এ পদক্ষেপগুলো সুন্দরবনের দীর্ঘমেয়াদি স্থায়িত্বের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বৈঠকে কমিটি বিশ্ব ঐতিহ্য স্থানটির অসামান্য সার্বজনীন মূল্যবোধকে প্রভাবিত করতে পারে এমন কোনো উল্লেখযোগ্য প্রকল্পের বিষয়ে বিশ্ব ঐতিহ্য কেন্দ্রকে অবহিত করার জন্য বাংলাদেশকে অনুরোধ করেছে।
এ সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বাংলাদেশকে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগের মাধ্যমে ১ ডিসেম্বর, ২০২৫ এর মধ্যে একটি অগ্রগতি প্রতিবেদন ও ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৯ সালের মধ্যে একটি স্টেট অব কনজারভেশন রিপোর্ট জমা দিতে অনুরোধ করা হয়েছে।