fbpx

অস্ত্রোপচারে পেট থেকে বের হলো ৬ ইঞ্চি লম্বা কাঁচি!

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

২০২০ সালের ৩ মার্চ, ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক তরুণীর অস্ত্রোপচারের পর পেটের মধ্যেই কাঁচি রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়। সেই ঘটনার প্রায় দুই বছর অর্থাৎ ৬৪৩ দিন পর আজ সেই তরুণীর পেট থেকে আনুমানিক ছয় ইঞ্চি লম্বা আকৃতির ওই কাঁচিটি বের করা হয়।

শনিবার (১১ ডিসেম্বর) একই হাসপাতালে ১৯ বছর বয়সী মনিরা খাতুনের অস্ত্রোপচার করা হয়। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত টানা তিন ঘণ্টা সার্জারি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. রতন কুমার সাহার নেতৃত্বে অস্ত্রোপচারের পর পেট থেকে বের করা হলো কাঁচিটি।

মনিরার শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক উল্লেখ করে অস্ত্রোপচারকারী এক চিকিৎসক ডা. রতন কুমার এ বিষয়ে সংবাদমাধ্যমকে জানান, ৭২ ঘণ্টার আগে এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা যাচ্ছে না। প্রায় দুই বছর ধরে কাঁচিটি পেটে থাকার কারণে তার পেটের নাড়ির কিছু অংশে পচন ধরেছে। পচনগুলো কেটে ফেলতে হয়েছে। এমনও হতে পারে তার কৃত্রিম নাড়ি লাগানো লাগতে পারে।

এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সংশ্লিষ্ট হাসপাতালের পরিচালক সাইফুর রহমান বলেন, ঘটনাটি কীভাবে ঘটেছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য একটি কমিটি গঠন করা হবে। কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ সূত্র থেকে জানা যায়, ২০২০ সালের ৩ মার্চ ওই হাসপাতালের সার্জারি বিভাগ ইউনিট ২–এর সহযোগী অধ্যাপক মোল্লা সরফউদ্দিনের অধীন ভর্তি ও অস্ত্রোপচার করা হয় মনিরার। তিনি সে সময় মেজিনট্রিক ফিস্টজনিত (রক্তের দলা) সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ওই সময় তার পেটের মধ্যে চিকিৎসকদের অজ্ঞাতসারে ছয় ইঞ্চি লম্বা মিডিয়াম সাইজ অর্টারি ফরসেপ রেখে সেলাই করে দেওয়া হয়।

মনিরার পারিবারিক সূত্র থেকে জানা যায়, অস্ত্রোপচারের কয়েক দিন পরই তাকে বিয়ে দিয়ে দেওয়া হয়। বিয়ের পর তিনি পেটের ব্যথা অনুভব করেন এবং একপর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হন। পরে মনিরার পেটের বাচ্চা নষ্ট হলে তাকে বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। এরপর বিভিন্ন পল্লিচিকিৎসক দিয়ে চিকিৎসা করানো হলেও তার পেটের ব্যথা কমেনি। দুই দিন আগে মনিরার পেটে অসহনীয় ব্যথা উঠলে গত বুধবার স্থানীয় একটি বেসরকারি ক্লিনিকে চিকিৎসার জন্য নেওয়া হয় তাকে। সেখানেই এক্স-রে’র মাধ্যমে চিকিৎসক দেখতে পান, মনিরার পেটে একটি কাঁচি রয়েছে।

এরপর গতকাল শুক্রবার তাকে ফরিদপুর নিয়ে একটি বেসরকারি ক্লিনিকে আবারও এক্স-রে করা হলে ওই একই রিপোর্ট আসে।

এরপর আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মনিরার অস্ত্রোপচার করা হয়।

মনিরার ভাই কাইয়ুম জানিয়েছে, গতকাল রাতে এ বিষয়ে তারা আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় গিয়েছিল। কিন্তু থানার ওসি বলেছেন, অস্ত্রোপচার করে রোগীর কাঁচি বের করে রোগীর সুস্থতা ফিরে আসার পরই আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply