১৯৮৯ সালে ফেব্রুয়ারিতে (ফাল্গুন ১৩৯৫) শেখ হাসিনার লেখা ‘ওরা টোকাই কেন’ বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় আগামী প্রকাশনী থেকে। বইয়ের উৎসর্গ পাতায় তিনি লেখেন ‘বাবা ও মা’। বইটির ভূমিকা ড. আনিসুজ্জামানের লেখা। এ বইয়ের প্রচ্ছদকার শিল্পী রফিকুন নবী। ‘ওরা টোকাই কেন’ বইয়ের ‘লেখকের কথা’ অংশে শেখ হাসিনা লিখেন :
প্রকাশকের অনুরোধ কিছু লিখতেই হবে। কত কথা যে মনে পড়ে। কত কথা যে বুকের গভীরে সাজানো থাকে। কোনটা রাখি কোনটা লেখি। মনের ভাবনার সঙ্গে কলম কি তাল মেলাতে পারে?
আমি প্রাবন্ধিক নই। তাই প্রবন্ধ লেখার নির্দিষ্ট নিয়ম আমি মানতে পারিনি। আমার লেখাগুলো আসে মনের ভাবনা থেকে। আমার চারপাশের জীবন ও তার ঘটনাবহুল অভিজ্ঞতাকে লিখে রাখার অভ্যাস আমাকে এই গ্রন্থের প্রবন্ধগুলি লিখতে দু:সাহসী করে তোলে। কোন দৃশ্য বা ঘটনা কিভাবে দেখি, কি হওয়া উচিত বা কিভাবে দেখতে চাই – আমার সেই ভাবনাগুলি শব্দে গেঁথে রাখতে চেষ্টা করি। তাই প্রবন্ধের ছকে বাঁধা নিয়মে আমার লেখাগুলো হয়ে ওঠে না। এগুলিকে আমার রাজনৈতিক চিন্তা-চেতনার প্রবন্ধ হিসেবে পাঠক সমাজ গ্রহণ করবেন বলে আশা রাখি।
আমার শ্রদ্ধেয় শিক্ষক ড. আনিসুজ্জামান লেখাগুলো সযত্নে পড়ে যে মূল্যবান ভূমিকা লিখে দিয়েছেন তার জন্য আমি কৃতজ্ঞ। আমার চিন্তা-চেতনায় সেটাই একটা বিরাট আত্মবিশ্বাস অর্জন। টোকাই চরিত্রের উদ্ভাবক শিল্পী রফিকুন নবীর সুন্দর প্রচ্ছদটির জন্য অভিনন্দন। ফটো সাংবাদিক পাভেল রহমানের জীবিত নূর হোসেনের প্রতিবাদী ছবিটি এ বইটিকে অনেকখানি সমৃদ্ধ করেছে।
আমার চলার পথটি সহজ নয়। বহু চড়াই-উৎরাই পার হতে হচ্ছে। নানা সমস্যা চোখে পড়ে। দু:খ- দারিদ্র্যক্লিষ্ট আমাদের সমাজ জীবনের এই দিকগুলি সবাই চিন্তা করুক। সমাজ ও দেশ উন্নয়নের কাজে রাজনৈতিক ও মানবিক চেতনায় সবাই উজ্জীবিত হয়ে উঠুক, এটাই আমার একমাত্রা আকাঙ্ক্ষা।
শেখ হাসিনা
১১ আগস্ট ১৯৮৯
বঙ্গবন্ধু ভবন
বাড়ি নং ১০ সড়ক নং ১১ (নতুন)
ধানমন্ডি আবাসিক এলাকা
ঢাকা – ১২০৫