fbpx

পৃথিবীর শেষ প্রান্ত প্রাইকেস্টোলেন

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

পৃথিবী যেহেতু গোলাকার, তাই এর শেষ প্রান্ত বলে আসলে কিছু নেই। তবে নরওয়েতে একটি পাহাড় চূড়া আছে, যেখানে গেলে মনে হবে আপনি হয়তো পৃথিবীর শেষ প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছেন। এই জায়গার নাম ‘প্রাইকেস্টোলেন’। এটি ‘পালপিট রক’ হিসেবেও পরিচিত। এটি নরওয়ের একটি সেরা দর্শনীয় স্থান। একুশ শতকের গোড়ার দিকে এই জায়গায় পর্যটন বৃদ্ধি পেয়েছে, ১৫০,০০০ থেকে ২,০০,০০০। বেস জাম্পাররা প্রায়শই প্রাইকেস্টোলেন খাড়া পাহাড় থেকে লাফ দেয়।

পৃথিবীর শেষ প্রান্ত প্রাইকেস্টোলেন

 

প্রাইকেস্টোলেন নামকরন হয় ১৯০০ সালের দিকে। প্রাচীন স্থানীয়দের কাছে হ্যাভলাটোন নামে পরিচিত। ১৯০০ শতকে স্থানীয় পর্যটন সংস্থা স্টাভ্যাঞ্জার তুরিস্টফোরিংট্রেকিংয়ের জন্য উন্মক্ত করে দেয়।

পৃথিবীর শেষ প্রান্ত প্রাইকেস্টোলেন

 

প্রাইকেস্টোলেন খুব ঝুকিপূর্ন এরিয়া হলেও ২০১৩ সাল অব্দি কোন দুর্ঘটনা ঘটেনি।২০০০ সালে ফেব্রুয়ারীতে একজন অস্ট্রিয়ান মহিলা এবং একটি নরওয়েজিয়ান ব্যক্তি আত্মহত্যা চুক্তি করার পরে ক্লিফ থেকে একসাথে লাফিয়ে যৌথভাবে আত্মহত্যা করেছিল। ২০০৪ সালের অক্টোবরে, একটি অল্প বয়স্ক জার্মান দম্পতি আত্মহত্যা করার জন্য পাহাড়ে যাচ্ছিল কিন্তু এই কাজটি করার আগে নরওয়েজিয়ান কর্তৃপক্ষ তাকে থামিয়ে দিয়েছিল। ২০১৩ সালের একজন স্প্যানিশ পর্যটকে প্রথম দুর্ঘটনা কবলিত ব্যক্তি হিসেবে ধরা হলেও পরে জানা যা সেটিও আত্মহত্যা ছিল।কারন তার ফেসবুক অ্যাকাউন্টে দুর্ঘটনার আগেই সুইসাইড নোট পোস্ট করা হয়েছিল।

 

ধারণা করা হয়, প্রায় ১০ হাজার বছর আগে বরফ যুগে সুবিশাল হিমবাহের প্রভাবে জায়গাটি এমন আকৃতি লাভ করেছে। অতীতে প্যাগান ধর্মের লোকেরা এখানে উপাসনা করতো। ১৯০০ সালে সর্বপ্রথম এই জায়গায় পর্যটন ব্যবস্থা চালু হয়। দুই হাজার ফুট উঁচুতে থাকা পাহাড়চূড়াটি প্রায় ৮২ বর্গ ফুট প্রশস্ত। এখানে পৌঁছাতে পায়ে হেঁটে প্রায় চার কিলোমিটার পাহাড়ি পথ পাড়ি দিতে হয়।

পৃথিবীর শেষ প্রান্ত প্রাইকেস্টোলেন

নরওয়ের বাতাস পৃথিবীর সবচেয়ে বিশুদ্ধ বাতাসগুলোর মধ্যে অন্যতম। তার মধ্যে পালপিট রক এলাকার বাতাস বিশুদ্ধতম। সেজন্য এখানকার বাতাস বোতলজাত করে বিক্রিও করা হয়। এখানকার আট লিটারের বোতল বাতাসের দাম প্রায় এক হাজার ৫০০ টাকা।

পৃথিবীর শেষ প্রান্ত প্রাইকেস্টোলেন

দুঃসাহসী পর্যটকেরা নানা রকমের কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে এখানকার রোমাঞ্চ আরো বাড়িয়ে নিতে পারে। বেস জাম্পিং, উইংসুট, রোপ ওয়াকিং, ক্লিফ হ্যাঙ্গিং বা ফ্রি হ্যাঙ্গিংয়ের মতো নানান ধরনের একশন স্পোর্টস বেশ জনপ্রিয়। সাম্প্রতিক সময়ে একাধিক পপ কালচারের মাধ্যমে বিশেষ এই প্রাকৃতিক জায়গাটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

পৃথিবীর শেষ প্রান্ত প্রাইকেস্টোলেন

 

২০১৪ সালে ভাইকিংস টেলিভিশন ধারাবাহিকের একটি দৃশ্য এখানে ধারণ করা হয়। সেখানে দেখা যায়, গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্র পালপিট রকের কিনারায় বসে আছে। ২০১৭ সালে মিশন ইম্পসিবল ৬ চলচ্চিত্রের শুটিংয়ের কারণে প্রাইকেস্টোলেন এক সপ্তাহ পর্যটকদের জন্য বন্ধ ছিল। হলিউড অভিনেতা টম ক্রুজকে এখানে দুর্দান্ত অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয় করতে দেখা যায়।

পৃথিবীর শেষ প্রান্ত প্রাইকেস্টোলেন

 

প্রতিবছর প্রায় তিন লাখেরও বেশি লোক প্রাইকেস্টোলেনে ঘুরতে আসে নয়নাভিরাম। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কারণে জায়গাটির বিখ্যাত পর্যটন কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply