ইভিএম নিয়ে এখন আর প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। এই প্রসঙ্গে উদাহরণ হিসেবে সামনে আনেন সদ্য সমাপ্ত গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন।
তিনি বলেছেন, গাজীপুর সিটিতে পড়ালেখা না জানা গার্মেন্টস কর্মীদের ভোট দিতে দেখেছেন। ইভিএম নিয়ে এখন আর প্রশ্ন তোলার কোনো অবকাশ নেই।
বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে প্রার্থীদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। গতকাল শনিবার (২৭ মে) রাতে জেলা শিল্পকলা একাডেমির হলরুমে এ সভার আয়োজন হয়।
সিইসি বলেন, কালো টাকা আর পেশি শক্তি কঠোর হস্তে প্রশাসন দমন করবে। আর একজন ভোটার একাধিক প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিলে সে ভোট তো একজনকেই দিবে। তাই ভোটারদের মন জয় করেন। ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীকেই ভোট দিবেন।
সিসিটিভি ক্যামেরা দিয়ে বরিশাল সিটি নির্বাচন মনিটর করা হবে- উল্লেখ করে বলেন, গাজীপুর সিটিতে ভোটে সিসিটিভি দিয়ে আমরা মনিটরিং করেছি। সেখানে কোনো অনিয়ম হয়নি। বরিশাল সিটিতেও আশা করি হবে না। ইভিএম ইন্টারনেট সংযোগ যুক্ত নয়। এটি আইসোলেটেড। ইভিএম নিয়ে আর কোনো বিতর্ক নয়। যেকোনো রকম অনিয়ম-মাস্তানি কঠোর হস্তে দমন করা হবে। নির্বাচন বিধি লঙ্ঘন করলেও ছাড় দেয়া হবে না।
প্রতিদ্বন্ধীতাপূর্ণ নির্বাচনের আহ্বান জানিয়ে প্রার্থীদের উদ্দেশে হাবিবুল আউয়াল আরো বলেন, ভোটের দিন সকলকে জাগ্রত থাকতে হবে। কেউ ভোট প্রভাবিত করার চেষ্টা করলে আপনারা আমাদের কর্মকর্তাদের জানান। আমরা তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার মো. আমিন উল আহসানের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন বিসিসি নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসার হুমায়ুন কবির। বিশেষ অতিথি ছিলেন নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান ও ইসি সচিব মো. জাহাংগীর আলম।
উপস্থিত ছিলেন বরিশাল রেঞ্জের ডিআইজি এসএম আক্তারুজ্জামান, জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর হোসেন, বরিশাল মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার সাইফুল ইসলাম, জেলা পুলিশ সুপার ওয়াহিদুল ইসলাম প্রমুখ।
আওয়ামী লীগের মনোনীত মেয়র প্রার্থী আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত, সাবেক মেয়র বিএনপি নেতা আহসান হাবিব কামাল পুত্র স্বতন্ত্র প্রার্থী কামরুল আহসান রুপন, জাতীয় পার্টির লাঙল প্রতীকের প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন তাপস, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মুফতি ফয়জুল করিম, জাকের পার্টির মিজানুর রহমান বাচ্চু, স্বতন্ত্র প্রার্থী আসাদুজ্জামান আসাদ ও আলী হোসেন উপস্থিত ছিলেন মতবিনিময় সভায়।
জাতীয় পার্টির ইকবাল হোসেন তাপস বলেন, ইভিএম নিয়ে জনগণের মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়া রয়েছে। তাই আমি বারবার ব্যালটে ভোট চাইছি। আপনারা বিষটি নিয়ে কোনো কথা বলছেন না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মেয়র প্রার্থী মুফতি ফয়জুল করিম বলেন, ইভিএমের গেজেট প্রকাশ করার পাশাপাশি ডিভাইসসহ সব তথ্য জানাতে হবে। নচেৎ ব্যালটে ভোট দিন।
সুষ্ঠূ নির্বাচন করতে ব্যর্থ হলে পদত্যাগ করবেন কি না প্রধান নির্বাচন কমিশনারের কাছে সে অঙ্গীকারও চান তিনি।
আওয়ামী লীগ মনোনীত আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ বলেন, এখন পর্যন্ত নির্বাচনী পরিবেশ সুন্দর রয়েছে। ইভিএম নিয়ে আমি সন্তষ্ট। ইভিএম নিয়ে আমার কোনো অভিযোগ নেই।
এ সময় বিভিন্ন ওয়ার্ডের কাউন্সিলর প্রার্থীরা অভিযোগ তুলে ধরলে সমাধানের প্রতিশ্রুতি দেন সচিব মো. জাহাংগীর আলম। ওয়ার্ডে দায়িত্বশীল সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ডেকে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেন।