করোনা মহামারির মধ্যে যেখানে অসংখ্য প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের ছাটাই করার পাশাপাশি বেতন-ভাতা কমিয়ে দিয়েছে, সেখানে পিএইচপি ফ্যামিলি শিল্পগ্রুপটি স্থাপন করেছে ব্যতিক্রমী দৃষ্টান্ত। চট্টগ্রামের এই শিল্পগ্রুপটি এ বছর ঈদের আগেই প্রায় ১০ হাজার কর্মীকে ১১টি বোনাস দিয়েছে!
পিএইচপি ফ্যামিলির কর্মীরা এ বছর মূল বেতনের সমপরিমাণ ১২টি বোনাস পাচ্ছেন। শিল্পগ্রুপটি বছরের নিয়মিত বোনাসের বাইরে তাদের ২৭টি প্রতিষ্ঠানের প্রায় ১০ হাজার কর্মীকে ১০টি বাড়তি বোনাস দিয়েছে। তাই পিএইচপি ফ্যামিলির কর্মীরা এ বছর সব মিলিয়ে মূল বেতনের সমপরিমাণ ১২টি বোনাস পাচ্ছেন। যার মধ্যে ১১টি বোনাসই হাতে পেয়েছেন তারা। আর বাকি একটি বোনাস দেওয়া হবে আগামী ঈদুল আজহায়।
শনিবার (৮ মে) প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক মোহাম্মদ আকতার পারভেজ সংবাদমাধ্যমকে জানান, পিএইচপি ফ্যামিলির কর্পোরেট সামাজিক দায়বদ্ধতার উদ্যোগের একটি ধারাবাহিকতা হলো এটি। গ্রুপের চেয়ারম্যান সুফি মোহাম্মদ মিজানুর রহমান দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। করোনার এই সংকটের সময় কর্মীদের পাশে থাকার জন্য এই বোনাস দেওয়া হয়েছে বলে জানান গ্রুপটির চেয়ারম্যানের ছেলে আকতার পারভেজ।
পারভেজ আরও বলেন, মহামারী পরিস্থিতির আগে বাসে করে যে কর্মী অফিসে আসতেন, তাকে লকডাউনের সময় গণপরিবহন বন্ধ থাকায় অতিরিক্ত ব্যয় করতে হচ্ছে। এছাড়া, করোনা মহামারি শুরুর পর থেকেই নানা সমস্যায় ভুগছেন পিএইচপি সহকর্মীরা। আর তাই নিয়মিত দু’টি ঈদ বোনাসের পাশাপাশি কোভিড পরিস্থিতির বিবেচনায় আরও ১০টি বোনাস দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
পিএইচপি ফ্যামিলির কর্মীরা জানান, গত বছর করোনা পরিস্থিতিতে তারা ছয়টি বোনাস পেয়েছেন। আর এবার তার প্রায় দ্বিগুণ বোনাস পেয়েছেন তারা। করোনায় দেশের এই পরিস্থিতিতে একসাথে এতোগুলো বোনাস কাজের ক্ষেত্রে তাদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মন্তব্য করেন কর্মীরা।
১৯৯৯ সালে যাত্রা শুরু করে পিএইচপি ফ্যামিলি শিল্পগ্রুপ। গাড়ি সংযোজন, মোটরসাইকেল, ইস্পাত, টেক্সটাইল, ফ্লোট গ্লাস, কৃষি, বিদ্যুৎসহ বহু খাতে ব্যবসা রয়েছে এই শিল্পগ্রুপের। এই গ্রুপে বর্তমানে ১০ হাজার সদস্য কর্মী নিযুক্ত রয়েছেন এবং তাদের মাসিক বেতনের পরিমাণ প্রায় ১১ কোটি টাকা। গ্রুপের একজন পরিচালক জানিয়েছেন, প্রতি মাসে কর্মীদের বেতন-ভাতা বাবদ তাদের ব্যয় সাড়ে ১৪ কোটি টাকা।