প্রায় সব বাড়িতে গোসলের জন্য একটাই সাবান রাখা হয়। পরিবারের সব সদস্যই এক সাবান ব্যবহার করেন।বিষয়টি পারতপক্ষে স্বাভাবিক। তবে এর ক্ষতিকর দিকও আছে।
প্রত্যেকের বাড়িতে সব সদস্যরা দাঁত মাজার জন্য আলাদা ব্রাশ ব্যবহার করেন। আবার অনেকের বাড়িতে সবার গোসলের তোয়ালে, চিরুনিও আলাদা। অথচ,গোসলের জন্য রাখা সাবানটি এক। বাথরুমে ঢুকে প্রয়োজন-অপ্রয়োজনে পরিবারের সবাই ওই একটিই সাবান ব্যবহার করেন। এমনকী বাইরে থেকে ঘুরে এসে বা ধুলোবালি, নোংরা মাখা হাতে যে সাবান ধরছেন, সেই একই সাবান আবার গোসলেও ব্যবহার করছেন।
২০০৬ সালে ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব ডেন্টাল রিসার্চ’-এর গবেষণায় বলা হয়েছিল, সাবানের ওপরের স্তরে কমপক্ষে পাঁচ ধরণের ভাইরাসের অস্তিত্ব থাকতে পারে। তারপর অনেকদিন আর এ নিয়ে আলোচনা তেমন হয়নি। অনেক পরে একই বিষয়ে ২০১৫ সালে আবার একটি সমীক্ষা চালায় ‘আমেরিকান জার্নাল অব ইনফেকশন কন্ট্রোল’
তারা জানায় একটি হাসপাতালে ব্যবহৃত প্রায় ৬২ শতাংশ বার সাবানে নানা ধরনের রোগজীবাণু রয়েছে। এই সংক্রামিত সাবান ব্যবহার করলে সেখান থেকে ব্যাক্টেরিয়াগুলি মানবদেহে ছড়িয়ে পড়তেই পারে বলেও ইঙ্গিত দেয় তারা।
মজার বিষয় হলো, এই সাবানই কিন্তু আবার রোগজীবাণু ছড়ানো আটকাতে কাজ করে। সাবানে থাকা ফ্যাট জীবাণু ধুয়ে ফেলতে সাহায্য করে। তাহলে কি একই সাবান পরিবারের সবাই ব্যবহার করতে পারবেন? বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাবানের চেয়ে বেশি সমস্যা সাবান রাখার পাত্রে জমা পানিতে। এই পানি হলো নানা ধরনের জীবাণুর বাসা। যে কারণে সেখান থেকেই বেশি জীবাণু ছড়িয়ে পড়ে।
বিশেষজ্ঞদের বলছেন, সাবানের নিচে জমে থাকা থেকে সংক্রমিত হতে পারেন যে কেউ। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে বার সাবানের বদলে তরল সাবান ব্যবহার করতে পারেন। বার সাবান ব্যবহার যদি করতেই হয় তবে রাখার জায়গাটি শুকনো রাখতে হবে। বাড়িতে যদি কেউ অসুখে ভুগে থাকে তবে তার সাবান আলাদা রাখাই ভালো।
বাড়িতে তাই একই সাবান ব্যবহার করলে ক্ষতি আছে এমন নয়। শুধু গোসলের সময় গায়ে সাবান দেওয়ার আগে সাবানটি পানিতে ধুয়ে নিন। ওপরের স্তরে জীবাণু বা ময়লা দূর হয়ে যাবে৷