বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশনকে (বিএফডিসি) বলা হয় ঢাকাই সিনেমার ‘আঁতুর ঘর’। এখানেই নির্মিত হয় সিনেমা। বসে অভিনয়শিল্পী, পরিচালক, প্রযোজক ও কলাকুশলীদের আড্ডা। কিন্তু সিনেমা নির্মাণ কমে যাওয়ায় এখন আর লাইট, ক্যামেরার ঝলকানি, পরিচালকের অ্যাকশন, কাট শব্দগুলো তেমন আর শোনা যায় না। আগের মতো তারায় তারায় মুখরিত হয় না এফডিসি। একসময়ের কোলাহলপূর্ণ এফডিসি বর্তমানে অনেকটাই নীরব, নিস্তব্ধ। এফডিসি এখন শুধু সমিতি চর্চা হয়। এমনটাই মনে করছেন ঢালিউড সুপারস্টার শাকিব খান। সম্প্রতি সংবাদমাধ্যমে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে শাকিব বলেন, ‘এফডিসি এখন হয়েছে পরিত্যক্ত পাটকলের মতো।’
এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘অনেকে কাজ বাদ দিয়ে সমিতি নির্ভর হয়ে পড়ল। এফডিসি হয়ে গেল, চলচ্চিত্র নয় সমিতি নির্ভর একটি প্রতিষ্ঠান। কিছু অযোগ্য লোকের কাছে সিনেমার পরিবর্তে সমিতি হয়ে গেল ধ্যান-জ্ঞান। সমিতির নির্বাচন, পিকনিক, ইফতার পার্টি নিয়ে তাদের যেভাবে ব্যস্ত থাকতে দেখা যায় সিনেমা নিয়ে তত নয়। এতে করে চলচ্চিত্রের বারোটা বেজেই চলেছে।’
এ অভিনেতা মনে করেন, সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আধুনিক হয়ে উঠতে পারেনি প্রতিষ্ঠানটি। তার মতে এফডিসি থেকে সার্ভার সিস্টেমের মাধ্যমে ছবি প্রদর্শন করা, এফডিসিতে পোস্ট প্রোডাকশনের কাজের ব্যবস্থা করা এখন সময়ের দাবি। তাহলেই চলচ্চিত্রের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারবে প্রতিষ্ঠানটি।
তিনি বলেন, ‘আমার বিশ্বাস এই সংকট অচিরেই কেটে যাবে। এ জন্য দরকার চলচ্চিত্রের প্রত্যেকের কাজের প্রতি সততা ও ডেডিকেশন।’
গত ৯ মার্চ জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ২০২১ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, ‘সিনেমা একজন মানুষের জীবনকে পাল্টে দিতে পারে, সমাজকে পাল্টে দিতে পারে। তাই অনুকরণ না করে এ ধরনের মানসম্মত সিনেমা তৈরিতে সংশ্লিষ্টদের মনোযোগ দিতে হবে।’
পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী আগামী বাজেটে সরকারি অনুদান প্রাপ্ত সিনেমাগুলোর টাকার পরিমাণ আরও বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রীর এমন কথায় মুগ্ধ শাকিব। তার ভূয়সী প্রশংসা করে এ তারকা বলেন, ‘আমাদের প্রধানমন্ত্রী সবসময়ই শিল্প-সংস্কৃতি আর চলচ্চিত্রবান্ধব। দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, প্রধানমন্ত্রী সব সেক্টরের উন্নয়নে শতভাগ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তার এই প্রচেষ্টাকে সফল করার দায়িত্ব যাদের ওপর, এর দায়ভার ন্যস্ত হয় তাদের। সবাই যদি সততা ও একাগ্রতা নিয়ে কাজ করে যায় তাহলে প্রধানমন্ত্রীর সব স্বপ্নই সার্থক হবে। বাংলাদেশ সত্যিকার অর্থে সোনার বাংলায় পরিণত হবে।’
