নেপালে করোনা সংক্রমণ বাড়তে থাকায় দেশজুড়েই উদ্বেগ ছড়িয়ে পড়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় এখানে নতুন করে শনাক্ত হয়েছে ৯ হাজার ৩১৭ জন রোগী। মারা গেছেন দুইশরও বেশি মানুষ।
দিন দিনই দৈনিক সংক্রমণ বাড়তে থাকায় ভেঙ্গে পড়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। সংবাদ মাধ্যম বিবিসি এই তথ্য দিয়েছে।
দেশটির দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের নারায়ণপুরে অক্সিজেন ও ভ্যান্টিলেটরের অভাবে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না রোগীরা।
সুন্দর মাউরা নামের মধ্য বয়স্ক এক রোগী ভীষণ শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। ছেলে পরশুরাম মাউরা তাকে নিয়ে এক হাসপাতাল থেকে অন্য হাসপাতালে ছুটছেন, কিন্তু কোথাও ভর্তি করাতে পারেননি। বেড, অক্সিজেন ও ওষুধের পর্যাপ্ত যোগান না থাকায় কোনো হাসাপাতাল তাকে ভর্তি করাতে রাজি হয়নি। শত চেষ্টায় যখন একটি বেড মিলেছে, তখন খুব দেরি হয়ে গেছে। বাঁচানো যায়নি বাবা সুন্দর মাউরাকে।
সংবাদ সাধ্যম বিবিসিকে পরশুরাম বলেন, ‘আমরা একেবারেই ভেঙ্গে পড়েছি। পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ছিলেন বাবা। এখন আমাকেই পরিবার ও ছোট তিন ভাইয়ের দায়িত্ব নিতে হবে। মা তো কেঁদেই যাচ্ছেন।’
নেপালে করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে প্রতিদিনই স্বজন হারাচ্ছেন এমন শতশত মানুষ।
সমীর কুমার আধিকারী নামের এক চিকিৎসক জানান, ‘এখনই যদি করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে নেয়া না যায় তবে পরিস্থিতি খুব ভয়াবহ হয়ে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘রাজধানী কাঠমান্ডুতে কোনো ইনটেনসিভ কেয়ার ( নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র) ও ভেন্টিলেটর ফাঁকা নেই। এমনকি অন্যসময়ে যেই হাসপাতালগুলোতে বেড পাওয়া সহজ ছিল, সেখানে এখন কোনো রোগী ভর্তি করা হচ্ছেনা। অক্সিজের সংকট দেখা দিয়েছে। এমন কি আমাদের ভ্যাকসিনও শেষ হয়ে গেছে।’
দেশটিতে এ পর্যন্ত করোনা শনাক্ত হয়েছে ৪ লাখ ২২ হাজারেরও বেশি মানুষ। মারা গেছে ৪ হাজার ২৫২ জন।