fbpx

খুলনায় পরিবহন ধর্মঘট, বিপাকে সাধারণ মানুষ

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

খুলনায় শুরু হয়েছে দুই দিনের আন্তঃজেলা বাস পরিবহন ধর্মঘট। আগামীকাল শনিবার বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশের আগে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে শহরে কোনো পরিবহন প্রবেশ করতে পারছে না। খুলনা থেকে বেরও হচ্ছে না কোনো যান।

খুলনা থেকে প্রতিদিন গড়ে এক হাজার ২০০টি বাস সারাদেশের ১৮টি রুটে চলাচল করে। আজ শুক্রবার সকাল ৬টা থেকে শনিবার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ডাকা ধর্মঘটের কারণে পুরো গণপরিবহন ব্যবস্থা অচল হয়ে গিয়েছে।

ঢাকা-খুলনা রুটের বাস ঢাকা থেকে যশোর ও গোপালগঞ্জ পর্যন্ত চলছে। সাতক্ষীরামুখী যেসব বাস যশোর হয়ে চলে, সেগুলো চলছে। সব মিলিয়ে খুলনায় কোনো বাস প্রবেশ বা বাইরে যাচ্ছে না।

জেলা বাস, মিনিবাস, কোচ, মাইক্রোবাস মালিক সমিতি বলছে, সড়ক ও মহাসড়কে নছিমন, করিমন ও ভটভটি, ইজিবাইকসহ সব অবৈধ যান চলাচল বন্ধের দাবিতে তারা ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে। এর সঙ্গে একাত্ম প্রকাশ করেছে খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়ন।

অবশ্য এ বিষয়ে বাস মালিক ও মোটর শ্রমিক নেতাদের একেকজনের ভাষ্য একেক রকম। তবে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিকজন বলেছেন, বাস বন্ধ রাখার পেছনে রাজনৈতিক চাপ রয়েছে।

খুলনা মোটর শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন বিপ্লব বলেন, বাস মালিক সমিতির সিদ্ধান্তের সঙ্গে শ্রমিক ইউনিয়ন একাত্মতা প্রকাশ করেছে। সে কারণে আমরা কোনো গাড়ি চালাচ্ছি না।

তবে বিএনপির দাবি, শনিবারের গণসমাবেশ বাধাগ্রস্ত করতে ও বিপুল মানুষের উপস্থিতি ঠেকাতে ষড়যন্ত্র করে ধর্মঘট ডাকা হয়েছে।

এদিকে বাস চলাচল বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। বিশেষ করে সমাজসেবা কার্যালয়ের ইউনিয়ন সমাজকর্মী নিয়োগ পরীক্ষা দিতে আসা ব্যক্তিদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। সব রুটের বাস বন্ধ থাকায় সকাল থেকে ইজিবাইক ও ভ্যানে করে খুলনায় এসেছেন তারা।

আগামীকাল শহরের ডাকবাংলো ও ফেরিঘাট মোড়ের মাঝামাঝি সোনালী ব্যাংক চত্বরে বিভাগীয় গণসমাবেশ করবে বিএনপি। সমাবেশ ঘিরে ব্যাপক প্রচার-প্রচারণা চলছে। প্রস্তুত হচ্ছে সমাবেশস্থলও।

ধর্মঘট প্রসঙ্গে বিএনপির অভিযোগ, সমাবেশে যাতে বেশি লোকের সমাগম না হতে পারে, সে জন্য ষড়যন্ত্র করে বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও লাখো মানুষ সমাবেশে যোগ দেবেন বলে আশা স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতাদের।

খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কুদরতই-আমির এজাজ খান বলেন, খুলনার বিভিন্ন উপজেলা এবং বিভাগের অন্যান্য ৯টি জেলা থেকে গণসমাবেশে নেতাকর্মীদের আসা বাধাগ্রস্ত করতেই পরিকল্পিতভাবে বাস বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। সেজন্য ১০ জেলার নেতাকর্মীদের বিকল্পভাবে সমাবেশে আসতে আহ্বান জানানো হয়েছে।

এজাজ বলেন, বাধাবিপত্তি ঠেলে বিভাগের আশপাশের বিভিন্ন জেলার নেতাকর্মীরা বৃহস্পতিবার খুলনা অভিমুখে যাত্রা করেছেন। কোথাও কোথাও চিড়া, গুড়-মুড়ি নিয়ে ট্রেনে, বাসে চড়ে বসেছেন কর্মীরা।

বাস বন্ধের ঘোষণায় অনেক স্থান থেকে ছোট ছোট দলে ভাগ হয়ে তারা গণসমাবেশের একদিন আগেই খুলনা শহরে আসতে শুরু করেছেন।

স্মরণকালের বৃহৎ সমাবেশ বলে উল্লেখ করে তিনি জানান, সমাবেশে যোগ দিতে এর মধ্যেই খুলনায় নেতাকর্মীরা আসতে শুরু করেছেন। তারা পুলিশি ঝামেলা এড়াতে আত্মীয়-স্বজনের বাড়ি, আবার কেউ কেউ হোটেলে অবস্থান করছেন।

খুলনার জেলা-উপজেলার মানুষ প্রয়োজনে হেঁটে এসেই সমাবেশে যোগ দেবে উল্লেখ করে এজাজ আরো বলেন, কোনো প্রতিবন্ধকতাই নেতাকর্মীদের আটকে রাখতে পারবে না।

তবে বিএনপি নেতাদের অভিযোগ অস্বীকার করে খুলনা নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা জানান, বিএনপি পূর্বনির্ধারিত সমাবেশ আহ্বান করেছে। এটা প্রতিহত করতে হবে বা বাধা দিতে হবে, এটা আমরা বিশ্বাস করি না। বাস বন্ধ করেছে বাস মালিক সমিতি। এটা তাদের নিজস্ব ব্যাপার।

Advertisement
Share.

Leave A Reply