fbpx

ঘর পেলেও মিলেনি তিন বেলা খাবারের নিশ্চয়তা

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

এক সময় সান শওকত সবই ছিল, ছিল বিলাসী জীবন। গফরগাঁও পৌরশহর ও ঢাকায় বিলাসবহুল বাড়িও  ছিল। কাজ করেছেন মানুষের কল্যাণে। যে কিনা দু হাত ভরে দান করেছেন। এলাকার উন্নয়নে ছিলেন নিবেদিত প্রাণ। শেষ সম্বল ১২ শতাংশ জমি মসজিদের নামে লিখে দিয়েছিলেন।

ভ্যাগ্যর নির্মমতায় তিনিই আজ ঠাই পেলেন সরকারের আশ্রয়ণ প্রকল্পের ঘরে।

এনামুল হক জজ মিয়ার কথা বলছি। ১৯৮৬ ও ১৯৮৮ সালে জাতীয় পার্টির হয়ে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন । তিনি শুধু সাবেক সংসদ সদস্যই নন নিজেকে মুক্তিযোদ্ধা বলেও দাবি তাঁর। কিন্তু কেন তাঁর এই পরিণতি? এর পেছনের কারণ কী? এসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে বিবিএস বাংলা।

বিবিএস বাংলাকে তিনি শুনিয়েছেন তাঁর জীবনের অতীত আর বর্তমান। শুনিয়েছেন এক সময়কার এমপির জীবনে বিপর্যয় নেমে আসার গল্প ।

প্রথম জীবনে ভালোবেসে বিয়ে করেন নাজমাকে, প্রথম স্ত্রী নাজমা তাকে ডিভোর্স দিয়ে অন্যজনকে বিয়ে করে বিদেশে পাড়ি জমান। পরে ঢাকায় এক শিক্ষিকাকে বিয়ে করেন জজ। গ্রামে পিতার সব সম্পত্তি বিক্রি করে রাজধানী ঢাকায় জমি কিনে বাড়িও করেন। দ্বিতীয় স্ত্রীর ঘরে জজ মিয়ার দুই মেয়ে রয়েছে। পরম ভালোবাসা ও বিশ্বাসে দুই মেয়ে ও স্ত্রীর নামে সমস্ত সম্পত্তি লিখে দেন। এরপরই তাঁর জীবনে অন্ধকার নামতে শুরু করে। দ্বিতীয় স্ত্রীর সাথে বনিবনা না হওয়ায় গফরগাঁওয়ে গিয়ে বাস করতে শুরু করেন।

এরই মধ্যে কেটে যায় বহু বছর। সময় বদলায়। ক্ষমতার পালাবদলে বদলে যায় জজ মিয়ার জীবন।

বৃদ্ধ জজ মিয়াকে সহযোগিতা করার তো দূরের কথা তাঁর কোনো খোঁজও নেন না তাঁর মেয়েরা। তাই বাধ্য হয়েই আবার বিয়ে করেন তিনি। বর্তমানে তৃতীয় স্ত্রীর ঘরে জজ মিয়ার ৮ বছরের এক ছেলে রয়েছে। ছেলেটির নাম নূর-ই এলাহী। এই নিয়েই তাঁর বর্তমান জীবন-সংসার।

গফরগাঁও পৌর শহরের সালটিয়া গ্রামে একটি ভাড়া বাসায় তৃতীয় স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন এতোদিন। এমন কী একটি  খাট কেনার সামর্থ্য ছিল না, তাই স্ত্রী সন্তানকে নিয়ে মেঝেতেই ঘুমাতেন তিনি।

কীভাবে সংসার চলে? প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘আমার দুই বোন প্রতি মাসে ২ হাজার টাকা করে ৪ হাজার টাকা না দিলে, আমাকে পরিবার নিয়ে না খেয়েই থাকতে হতো। আমার মতো অসহায় দরিদ্র লোকের প্রতি প্রধানমন্ত্রীর দয়া হয়েছে বলেই আজ আমি একটা থাকার জায়গা পেলাম।’

থাকার জায়গার নিশ্চয়তা পেলেও রোজ খাবার জুটবে কিনা সেই নিশ্চয়তা নেই জজ মিয়ার।

জজ মিয়া একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা হয়েও তালিকায় নেই তাঁর নাম, অসহায় অবস্থায় ভাতা তো দূরের কথা পাননি কোন সনদ। তাই প্রধানমন্ত্রীর কাছে জজ মিয়ার আর্জি তাঁর মুক্তিযোদ্ধার সকল বৈধ কাগজ পত্র দেখেই তাকে মুক্তিযোদ্ধা সনদ দেয়া হোক।

Advertisement
Share.

Leave A Reply