চট্টগ্রাম নগরের সিআরবি এলাকায় কয়েক প্রজাতির ১৮৩ টি ঔষধি গাছ পাওয়া গেছে যা ক্যান্সার হৃদরোগসহ জটিল রোগের ওষুধ তৈরিতে প্রয়োজনীয় বলে জানিয়েছে ইফেক্টিভ ক্রিয়েশন অন হিউম্যান ওপিনিয়ন (ইকো) নামের একটি গবেষণা প্রতিষ্ঠান।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ওমর ফারুক রাসেলের নেতৃত্বে নগরের ২০ টি এলাকার গাছের ওপর চার মাস ধরে একটি গবেষণা চালানো হয়। তাতে দেখা যায়, সিআরবি এলাকায় ২২৩ প্রজাতির উদ্ভিদ পাওয়া গেছে। যার মধ্যে গুল্মজাতীয় উদ্ভিদ আছে ৩৪ প্রজাতির, লতা জাতীয় উদ্ভিদ ২২ প্রজাতির, প্রায় বিপন্ন প্রজাতির ৯ টি, প্রায় বিলুপ্ত প্রজাতির ৬৬ টি উদ্ভিদ এবং বড় বৃক্ষ রয়েছে ৮৮ টি।
অধ্যাপক ওমর ফারুক রাসেল গণমাধ্যমকে জানান, ‘নগরের ফুসফুস খ্যাত সিআরবি এলাকায় যে ঔষধি গাছগুলো পাওয়া গেছে, তা ক্যান্সার, হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, জন্ডিস, পেটব্যথা, ডায়ারিয়া, আমাশয়, শ্বেতী বাতব্যাথাসহ নানা কঠিন ও জটিল রোগের জন্য যে ওষুধ বানানো হয়, তার জন্য খুবই প্রয়োজনীয়।’
সিআরবি এলাকাটি একটি প্রাকৃতিক হাসপাতাল উল্লেখ করে ওমর ফারুক বলেন, সিআরবি এলাকায় বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণের যে পরিকল্পনা চলছে, তাতে এসব ঔষধি গাছ ধ্বংস তো হবেই, পরিবেশেরও বিরাট ক্ষতি হবে।
ইকোর গবেষণায় দেখা যায়, সিআরবি এলাকায় টোনা, অর্জুন, লজ্জাবতী, আপাং, নিসিন্দা, টগর, শজনে, দেবকাঞ্চন, মাটমিন্দা, সর্পগন্ধা, বকুল, শিমুল, পিতরাজ, দুধকুরুস, বাকা গুলঞ্ছ, সোনাতলা, দুরন্ত ইত্যাদি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঔষধি গাছ পাওয়া গেছে।
গবেষণায় অংশ নেওয়া চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, সিআরবি এলাকায় ভবিষ্যতে বিলুপ্ত হতে পারে এমন উদ্ভিদগুলোর মধ্যে রয়েছে সর্পগন্ধা, বকুল, শিমুল, পিতরাজ, দুধকুরুস, বাকা গুলঞ্ছ, সোনাতলা, দুরন্ত ইত্যাদি।
গত এক মাস ধরে সিআরবি এলাকায় হাসপাতাল নির্মাণের বিরোধিতা করে আন্দোলন করে আসছে বিভিন্ন সামাজিক ও পরিবেশ নিয়ে কাজ করা সংগঠনগুলো। নগরের সবুজ এলাকা নয় অন্য কোন স্থানে হাসপাতালটি তৈরি করার দাবিও জানায় তারা।
উল্লেখ্য, সিআরবি এলাকায় ছয় একর জমিতে বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।