চলে গেলেন একুশে পদকপ্রাপ্ত সংগীতশিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী। আজ বুধবার (৭ এপ্রিল) বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয়েছে বরেণ্য এই শিল্পীর।
গত বৃহস্পতিবার মহাখালী মেট্রোপলিটন হাসপাতালে তার করোনা পরীক্ষা করানো হয় এবং তা পজিটিভ আসে। এছাড়া তার ফুসফুসে ইনফেকশনও ধরা পড়ে। পরবর্তীতে তাকে বঙ্গবন্ধু মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইন্দ্রমোহন রাজবংশী বাংলাদেশী লোকগানের শিল্পী ও মুক্তিযোদ্ধা। তিনি ভাওয়াইয়া, ভাটিয়ালী, জারি, সারি, মুর্শিদী ইত্যাদি গান গেয়ে থাকেন।
তিনি সংগীত কলেজে লোকসঙ্গীত বিভাগের প্রধান হিসেবে কাজ করেছেন দীর্ঘদিন। বাংলাদেশ লোকসংগীত পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ইন্দ্রমোহন রাজবংশী।
চলচ্চিত্র, বেতার, টেলিভিশন ইত্যাদিতে তিনি অনেক গান গেয়েছেন। ১৯৬৭ সালে ‘চেনা অচেনা’ চলচ্চিত্রে গান গাওয়ার মধ্য দিয়ে চলচ্চিত্রে তার প্লেব্যাক শুরু হয়েছিল।
১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হলে ইন্দ্রমোহন রাজবংশী যুদ্ধে অংশগ্রহণের জন্য মনস্থির করেন। কিন্তু পাকিস্তানিদের হাতে ধরা পড়ে যাওয়ায় সম্মুখ যুদ্ধে তিনি যেতে পারেন নি। নিজের নাম পরিচয় গোপন করে পাকিস্তানিদের দোভাষী হিসেবে বেশ কিছুদিন কাজ করেছেন তিনি।
পরবর্তীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা দিতে স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রে গান গাওয়া শুরু করেন। গান গাওয়ার পাশাপাশি দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকগান সংগ্রহ করতেন। এক হাজারের বেশি কবির লেখা কয়েক লক্ষ গান সংগ্রহ করেছেন তিনি।
সংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০১৮ সালে ‘একুশে পদক’ লাভ করেন সংগীতশিল্পী ইন্দ্রমোহন রাজবংশী।
তাঁর সৎকারের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি বলে জানা গেছে।