fbpx

চাকরি পেয়েও অভাবের সংসারে হাল ধরা হলো না প্রীতির

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

সন্তানকে হারিয়ে শোকে কাতর বাবা-মা। সকাল হতেই ছুটে এসেছেন প্রীতির কবরের কাছে। সন্তানের নানা আবদারের কথা জানিয়ে বিলাপ করছেন মা। কারও কাছে বিচার চাইবার নেই তার। কিন্তু সে যা হারিয়েছেন তা কি আর ফিরে পাবেন।

২৭ মার্চ (রবিবার) রাজধানীর শাহজাহানপুর কবরস্থানে সকাল হতেই ছুটে এসেছেন প্রীতির পরিবার ও স্বজনেরা। আহাজারিতে বুক ভাসাচ্ছেন মা। তাদের ছোট্ট সংসারে একটাই মেয়ে প্রীতি। সংসারের বড় হওয়ায় নানা দ্বায়িত্ব ছিল তার কাঁধে। প্রতিনিয়ত মা, ভাই ও বাবার খেয়াল রাখাতেন। বাসায় ফেরার আগে মাকে ফোন করে জানতে চাইতেন ঘরে কিছু লাগবে কিনা। এখন আর কেউ এভাবে জানতে চাইবে না, বলেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন তার মা।

মালিবাগের শান্তিবাগে বাবা-মা ও এক ভাইকে নিয়ে ছিল প্রীতির ছোট্ট সংসার। বাবার টানাটানির সংসারের হাল ধরতেই বহুদিন ধরেই চাকরির খোঁজ করছিলেন প্রীতি। পরে একটি বে সরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিও পেয়ে ছিল সে। ১৫ হাজার টাকা বেতনে আসছে মাসেই চাকরিতে যোগ দেবার কথা ছিল প্রীতির। কিন্তু  সে স্বপ্ন আর বাস্তবে রুপ নিল না। এক আজানা ঝড়ে শেষ হলো প্রীতি ও তার পরিবারের সব স্বপ্ন।

গত ২৪ মার্চ (বৃহস্পতিবার) রাতে বান্ধবীকে সাথে করে রিকশায় বাসায় ফিরছিলেন প্রীতি। শাহজাহানপুরের আমতলা মসজিদ এলাকায় আসলে ট্রেনের সিগন্যালে আটকে পড়েন তারা। ওই রেলগেটের পাশেই জ্যামে আটকে থাকা প্রাইভেটকারে মতিঝিল আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপুকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি করে দুর্বৃত্তরা। হঠাৎ শব্দে রিকশা থেকে লাফ দিতে গিয়ে দূর্বৃত্তদের ছোড়া এলোপাথারি গুলিতে গুলিবিদ্ধ হন বদরুন্নেসা সরকারি কলেজের ছাত্রী  সামিয়া আফনান প্রীতি।

পরবর্তীতে তাকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সময় টিপুর গাড়িচালক মুন্নাও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। এবং সেদিন ঘটনাস্থলেই মারা যান আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম টিপু।

বাবা- মা ও স্বজনেরাই শুধু প্রীতিকে হারাইনি, তাকে হারিয়েছে শখের বিড়াল টুকটুকিও। গেল কদিন ধরে কোন খাবার খায়না টুকটুকি। কি যেন হারিয়ে সে স্তব্ধ, অসহায়ের মত বসে থাকা যেন প্রীতির অপেক্ষায়।

বাবাও চায়না কোনো বিচার কিন্তু সন্তান হারাবার ব্যথাও যে সইবার নয়। অভাবের সংসারে মেয়েকে লেখাপড়া শিখাতেই হিমশিম খেতে হয়েছে তার। এখন তো স্বপ্ন দেখার স্বপ্নটাও হারিয়েছেন তিনি।

এলাকাবাসী বলছেন, এভাবে যেন আর কোনো বাবা- মায়ের বুখ খালি না হয়, রাজনীতির বলি হয়ে অকালেই যেন ঝড়ে না যায় আর কোন প্রাণ।

Advertisement
Share.

Leave A Reply