জঙ্গিবাদ ছেড়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে নয় ব্যক্তি ‘আত্মসমর্পণ’ করেছেন। আজ ১৪ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলায় র্যাব সদর দপ্তরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাঁরা ‘আত্মসমর্পণ’ করেন।
এই নয়জন স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রত্যয় জানালে বিনা শর্তে তাঁদের পুনর্বাসনের উদ্যোগ নেয় র্যাব। র্যাবের পক্ষ থেকে এমনটাই জানানো হয় ।
নয়জন ব্যক্তি হলেন সিলেটের শাওন মুনতাহা ইবনে শওকত, নুসরাত আলী জুহি, কুমিল্লার আবিদা জান্নাত, আবদুর রহমান সোহেল, চাঁদপুরের মোহাম্মদ হোসেন ওরফে হাসান গাজী, মো. সাইফুল্লাহ , ঝিনাইদহের মো. সাইফুল ইসলাম, চুয়াডাঙ্গার মো. আবদুল্লাহ আল মামুন ও মো. সাইদুর রহমান ।
র্যাব জানিয়েছে, আত্মসমর্পণকারী নয়জনের মধ্যে ছয়জন জেএমবি ও তিনজন আনসার আল ইসলামের সক্রিয় সদস্য ছিলেন। তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পেরে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। তাদের পুনর্বাসনের ব্যাপারে র্যাবের সঙ্গে তাঁদের যোগাযোগ হয়, তার পরিপ্রেক্ষিতে আজ তাঁরা ‘আত্মসমর্পণ’ করেন ।
র্যাব জানায়, এই নয়জন জঙ্গিবাদে জড়িয়ে পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যান। বিভিন্ন স্থানে পালিয়ে বেড়াতেন তারা, এমনকি নিজেদের নাম পরিচয়ও ব্যবহার করতে পারতেন না । আর এই সব মিলিয়ে তাঁরা মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েন পরে নিজেদের ভুল বুঝতে পারেন । এবং র্যাবের মাধ্যমে তাঁরা আত্মসমর্পণের সিদ্ধান্ত নেন, এ ব্যাপারে র্যাব তাঁদের উৎসাহী করে বিনা শর্তে আত্মসমর্পণের সুযোগ দেয়।
র্যাবের ভাষ্যমতে, স্বাভাবিক জীবনে ফেরার লক্ষ্যে তারা নয় ব্যক্তিকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করেছে। এ ছাড়া তাঁরা পুনরায় যাতে জঙ্গিবাদে জড়িয়ে না পড়েন, সে জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নজরদারি অব্যাহত থাকবে বলেও জানায় র্যাব ।
র্যাব জানায়, শাওন নামের একজন সিলেটের একটি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সময়ে হিযবুত তাহ্রীরে যুক্ত হন। ২০০৯ সালে তিনি আনসার আল ইসলামে যোগ দেন। ২০১১ সালে মেডিকেল শিক্ষার্থী নুসরাতকে বিয়ে করেন। এরপর নুসরাতও জঙ্গিবাদে উদ্বুদ্ধ হন। পরে সংগঠনের নির্দেশনায় তাঁরা ঢাকায় চলে আসেন। জঙ্গিবাদে জড়ানোয় শাওন ও নুসরাতের সঙ্গে তাঁদের স্বজনদের দূরত্ব তৈরি হয়। এতে করে পারিবারিক জীবনে অশান্তি আসে । এক পর্যায়ে তাঁরা নিজেদের ভুল বুঝতে পারে ও র্যাবের সঙ্গে যোগাযোগ করে ‘আত্মসমর্পণ’ করেন । এভাবেই একজনের মাধ্যমে অন্যজন করে ৯জনই আত্মসমর্পণ করেন ।
আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বেনজীর আহমেদ, র্যাবের মহাপরিচালক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।