জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধিকে ‘অযৌক্তিক ও গণবিরোধী’ হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। সংগঠনটি বলছে, অস্বাভাবিক এই মূল্যবৃদ্ধিতে জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছে। অবিলম্বে এই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।
জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদে শনিবার বিকেলে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এক প্রতিবাদ সভা ও মানববন্ধনে এই অভিমত ও দাবি জানানো হয়।
শুক্রবার রাতে অনেকটা আকষ্মিকভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় সরকার। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ১১৪ টাকা, পেট্রলের দাম ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা করা হয়। রাত ১২টার পর থেকেই নতুন এই দাম কার্যকর হয়েছে।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেন, সরকার গত নভেম্বরে ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারে ১৫ টাকা বাড়িয়েছিল। তখন দাম নির্ধারণ করা হয় লিটারপ্রতি ৮০ টাকা। এরপর বাসভাড়া বাড়ানো হয় প্রায় ২৭ শতাংশ, লঞ্চভাড়া বাড়ানো হয় ৩৫ শতাংশ, যা তেলের দাম বাড়ানোর হারের চেয়ে অনেক বেশি।
যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, নিত্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতিতে দেশের সাধারণ মানুষ দিশেহারা, তখন দুঃসময়ে জ্বালানি তেলের দাম একলাফে প্রায় ৫০ শতাংশের কাছাকাছি বাড়ানো হয়েছে। এতে জনজীবনে চরম দুর্ভোগ নেমে এসেছে। পরিবহন ব্যয় দ্বিগুণ বেড়ে যাবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সাধারণ মানুষের সামর্থ্যের বাইরে চলে যাবে। ইত্যমধ্যে পরিবহন খাতে অস্থিরতা দেখা দিয়েছে।
তেলের দাম যে পরিমাণ বাড়ে, তার চেয়ে কয়েক গুণ বেশি বাস ও অন্যান্য গণপরিবহনের ভাড়া বাড়ে বলে উল্লেখ করেন মোজাম্মেল হোসেন চৌধুরী। তিনি বলেন, পণ্য পরিবহন ভাড়াও ইচ্ছামত বাড়িয়ে দিয়েছেন ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান মালিকেরা। বাসমালিক-শ্রমিক নেতারা মিলেমিশে কয়েক গুণ বাড়তি ভাড়া আদায় করছেন।
মোজাম্মেল হোসেন আরও বলেন, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম নিম্নমুখী। এই সময় বাজার পর্যবেক্ষণ না করে, কেবল আইএমএফের পরামর্শ বাস্তবায়নে জ্বালানির তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক ও গণবিরোধী। অনতিবিলম্বে বর্ধিত দাম প্রত্যাহার করে আগের দাম পুনর্বহাল করতে হবে।