দূষিত বায়ুর শহরের তালিকায় বিশ্বে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার অবস্থান পঞ্চম। আর দূষিত বায়ুর কারণে ২০১৯ সালে ঢাকায় ২২ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংগঠন হেলথ ইফেক্টস ইনস্টিটিউট ও ইনস্টিটিউট ফর হেলথ মেট্রিকস অ্যান্ড ইভালুয়েশনের ‘এয়ার কোয়ালিটি অ্যান্ড হেলথ ইন সিটিস’ শীর্ষক প্রতিবেদন থেকে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। প্রতিবেদনটি বুধবার (১৭ আগস্ট) প্রকাশের কথা রয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ঢাকার প্রতি ঘনমিটার বাতাসে বার্ষিক গড় সূক্ষ্ম বস্তুকণার (পিএম২.৫) উপস্থিতি ৭১ দশমিক ৪ মাইক্রোগ্রাম আর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের (এনও২) উপস্থিতি ২৩ দশমিক ৬ মাইক্রোগ্রাম।
এই বায়ুদূষণের অন্যতম উপাদান নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইড প্রধানত পুরোনো যানবাহন, বিদ্যুৎকেন্দ্র, শিল্পপ্রতিষ্ঠান এবং আবাসিকে রান্না ও পোড়ানো জ্বালানি থেকে সৃষ্টি হয়। যেহেতু শহরের মানুষ ব্যস্ত সড়কের কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন, তাই তারা গ্রামীণ এলাকার বাসিন্দাদের তুলনায় অধিকহারে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের দূষণের শিকার হন।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) বায়ুমান নির্দেশিকা অনুসারে, প্রতি ঘনমিটারে বার্ষিক পিএম২.৫ উপস্থিতি ৫ মাইক্রোগ্রাম আর নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতি ১০ মাইক্রোগ্রাম সহনীয় মাত্রা।
প্রতিবেদনে বলা হয়, বিশ্বের সবচেয়ে বড় বড় শহর ও শহর এলাকাগুলোয় বায়ুমান সবচেয়ে খারাপ। এতে সাত হাজারেরও বেশি শহরের বায়ুদূষণ ও স্বাস্থ্যের ওপর এর প্রভাব পর্যালোচনা করা হয়েছে।
২০১০-১৯ সালের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এতে বলা হয়, বায়ুদূষণের প্রধান দুটি উপাদানের সংস্পর্শে আসার বৈশ্বিক ধরনটি একেবারেই ভিন্ন। পিএম ২.৫–এর সংস্পর্শে আসার প্রবণতা নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর শহরে বেশি। অন্যদিকে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোর পাশাপাশি উচ্চ আয়ের দেশগুলোর শহরেও নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের সংস্পর্শে আসে লোকজন।
প্রতিবেদন বলছে, ২০১৯ সালে ৭ হাজার শহরের মধ্যে ৮৬ শতাংশ শহরেই ডব্লিউএইচওর বেঁধে দেওয়া প্রতি ঘনমিটারে নাইট্রোজেন ডাই-অক্সাইডের উপস্থিতি ১০ মাইক্রোগ্রামের সহনীয় মাত্রা ছাড়িয়ে যায়। এতে ২৬০ কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হন।
বাংলাদেশে বায়ুদূষণের প্রধান কারণ- জীবাশ্ম জ্বালানি ও কাঠ পোড়ানো, ফিটনেসবিহীন গাড়ি থেকে নির্গত ধোঁয়া, ইটভাটা ও ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকাণ্ড। শুধু ঢাকার বাসিন্দারাই নয়, সিলেট, খুলনা ও রাজশাহীসহ অন্যান্য শহরের বাসিন্দারাও এই বায়ুদূষণের শিকার হন।
