fbpx

নির্বাচন নিয়ে বড় দুই দলের অনড় অবস্থা খুবই বিপজ্জনক: সিইসি

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

নির্বাচন কোন্ ব্যবস্থাপনায় হবে সেই ইস্যুতে দেশের দুটি বড় দল এখনও অনড় অবস্থানে আছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। অনড় অবস্থাটা দেশের জন্য খুবই বিপজ্জনক উল্লেখ করে সিইসি বলেন, যদি নির্বাচন অনড় অবস্থানের মধ্যে হয় এবং কোনও একটি বড় দল অংশগ্রহণ না করে, আমি প্রধান নির্বাচন কমিশনার হিসেবে বলবো, নির্বাচনের মূল ফলাফলের ওপর একটি ঝুঁকি থাকতে পারে।

বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) বিকালে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মতবিনিময় শেষে সিইসি এসব কথা বলেন। ইলেকশন মনিটরিং ফোরামের সঙ্গে কয়েকজন বিদেশি প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন।

আগামী নির্বাচনের আগে নির্বাচন ইস্যুতে রাজনৈতিক সমঝোতা হবে এমন আশাবাদ ব্যক্ত করে সিইসি বলেন, আশা করি আগামী কয়েক মাসে হয়তো দেখবো একটা রাজনৈতিক সমঝোতা হয়েছে এবং সব দলগুলো নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে। আমাদের বিভিন্ন দল থেকে বলা হয়েছে, তারাও বিশ্বাস করেন একটি সমাঝোতা হবে। আমরাও আশাবাদী। আমরা আগামী নির্বাচনটা চাই অবাধ, নিরপেক্ষ ও উৎসবমুখর পরিবেশে। ফলপ্রসূভাবে নির্বাচনটি অনুষ্ঠিত হবে।

সমঝোতা ছাড়া নির্বাচনের ঝুঁকির প্রসঙ্গে সিইসি আরও বলেন, যেমন নির্বাচন মানা হলো না, একটি ল অ্যান্ড অর্ডার সিচুয়েশন ক্রিয়েট করে ফেলা হলো। মানুষ বিপদগ্রস্ত হলো। আইনশৃঙ্খলা নিয়ে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হলো। আমি সেটাই বলছি। আমরা চাই না এ ধরনের পরিস্থিতি। সেজন্য আমরা বলবো, প্রধানতম দল-সরকারে অধিষ্ঠিত দলের প্রতিও আমার আহ্বান থাকবে আপনারাও আন্তরিকভাবে চেষ্টা করে যান বিরোধী দলগুলোকে সঙ্গে নিতে। তারাও যেন নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে নির্বাচনটাকে যেন অবিতর্কিতভাবে তুলে আনতে পারি। পুরো জাতির কাছে এই নির্বাচনটাকে যেন একটি গ্রহণযোগ্য, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। দেশে ও বিদেশে সেই স্বীকৃতি লাভ করতে পারি।

নির্বাচন কমিশন আগামী নির্বাচনটি দেশে ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও অবাধ, নিরপেক্ষ ও বিশ্বাসযোগ্য হয়েছে এমনটি দেখাতে চায় উল্লেখ করে সিইসি বলেন, তবে কিছু চ্যালেঞ্জ এখনও রয়ে গেছে। বিভিন্ন পক্ষ-বিপক্ষ মূল যে বিভক্তিটা…. ‘নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে’। ‘নির্বাচন তত্ত্বাবধায়কের আমলে হবে’। সেটার নিরসন কিন্তু এখনও হয়নি। এই প্রশ্নে কিন্তু দুটি দল এখনও অনড় অবস্থানে আছে।

তিনি বলেন, আমাদের সীমাবদ্ধতাটা বলতে চাই। আমরা নির্বাচন করবো সংবিধানের বিধান অনুযায়ী। যেটা বর্তমানে বহাল আছে। সেভাবে আমাদের নির্বাচন করতে হবে। একইভাবে আমাদের প্রত্যাশা থাকবে সব রাজনৈতিক দল-প্রধানতম রাজনৈতিক দলগুলো যেন অতি অবশ্যই নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক করে। কারণ নির্বাচনে এবং নির্বাচনের ভোটকেন্দ্রগুলোতে ইফেকটিভ প্রতিদ্বন্দ্বিতা না হলে প্রত্যাশিত ভারসাম্য সৃষ্টি হবে না।

ইলেকশন ওয়ার্কিং গ্রুপের সঙ্গে আলোচনার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, এটা ছিল একাডেমিক ডিসকাশন। উনারা আমাদের কোনও পরামর্শ দেননি। আমরাও কিছু দেইনি। গণতন্ত্রের চ্যালেঞ্জ ও সীমাবদ্ধতাগুলো আলোচিত হয়েছে। আমরা বলেছি সহযোগিতাটা যেন অব্যাহত থাকে। নির্বাচনকে আরও বেশি সহজ-সরল ও গণমুখী কীভাবে করা যায় সেটা নিয়ে সার্কভুক্ত দেশে যদি গবেষণা হয়, একটি সমঝোতা যদি হয়- সেটাও আন্তর্জাতিকভাবে মেনে চলার একটি বাধ্যবাধকতার সৃষ্টি করে।

নির্বাচনি ব্যয় নিয়ে প্রতিনিধিরা আলোচনা করেছেন উল্লেখ করে সিইসি বলেন, উনারা বলেছেন নির্বাচনে যে অর্থ ব্যয় করতে হয় সেটা সাধারণ গরিব মানুষের পক্ষে ব্যয় করা সম্ভব হয় না। এই অর্থব্যয়কে আরও লিমিটেড করে এটাকে যদি আরও গণতান্ত্রিক করা যেতে পারে। এটা খুবই কঠিন ও জটিল। উনারা স্বীকার করেছেন। আমরাও স্বীকার করেছি। এটা হয়তো ইনহ্যারেন্ট (সহজাত) একটি সীমাবদ্ধতা।

প্রতিনিধি দলে নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত ছিলেন উল্লেখ করে হাবিবুল আউয়াল বলেন, উনারা আমাদের দেশে নির্বাচন কেমন হয় তা জানতে চেয়েছেন। উনারা আশা করেছেন আমাদের আগামী নির্বাচনটা যেন সুন্দরভাবে হয়। জানতে চেয়েছেন পর্যবেক্ষককে আমরা স্বাগত জানাই কি-না? আমরা বলেছি পর্যবেক্ষকের বিষয়ে আমরা খুবই উন্মুক্ত। আমরা স্বচ্ছতা চাচ্ছি। আর স্বচ্ছতার জন্য অবশ্যই গণমাধ্যম লাগবে। পর্যবেক্ষক লাগবে। মিডিয়া ও পর্যবেক্ষকরা বস্তুনিষ্ঠভাবে রিপোর্ট করতে পারলে তাহলে অনেক বেশি স্বচ্ছতা নিশ্চিত হতে পারে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply