fbpx

পদ্মা সেতু নির্মাণের অভিজ্ঞতা পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য: শেখ হাসিনা

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

পদ্মা সেতু আশ্চর্য সৃষ্টি, সেতু নির্মাণের অভিজ্ঞতা পাঠ্যবইয়ে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্যতা রাখে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শনিবার (২৫ জুন) সকালে মুন্সীগঞ্জের মাওয়ায় সুধী সমাবেশে যোগ দিয়ে সেতুর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বক্তব্যের শুরুতে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের জনগণকে স্যালুট জানান। শেখ হাসিনা দেশবাসী ও পদ্মাপাড়ের দুই পাড়ের মানুষের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, আমি আনন্দিত, গর্বিত, উদ্বেলিত। এ সেতু শুধু ইট-সিমেন্টের অবকাঠামো নয়, এ সেতু আমাদের মর্যাদার শক্তি। এর সঙ্গে জড়িত আমাদের আবেগ, সৃজনশীলতা, সহনশীলতা।

কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা আবৃত্তি করে তিনি বলেন, ‘জ্বলে পুড়ে মরে ছারখার, তবু মাথা নোয়াবার নয়। আমরা মাথা নোয়াইনি, আমরা মাথা নোয়াব না। জাতির পিতা আমাদের মাথা নোয়াতে শিখান নাই।’

এ সময় তিনি ষড়যন্ত্রকারীদের শুভবুদ্ধি ও দেশপ্রেমের উদয় হওয়ার আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, মানুষের শক্তিই বড় শক্তি। সে শক্তিতে বলীয়ান হয়েই পদ্মা সেতু নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, অনেকের মতামত ছিল, নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু কীভাবে নির্মাণ করা যাবে, কিন্তু জাতির পিতা বাংলাদেশকে আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে শিখিয়েছেন। সে জায়গা থেকে বাংলাদেশ নির্মাণকাজ শুরু করে সেতু করে দেখিয়েছে।

সরকারপ্রধান বলেন, যমুনা নদীর ওপর সেতু নির্মাণের যে পদক্ষেপ বঙ্গবন্ধু নিয়েছিলেন, সেটা পূরণ করতে পারেননি। আমাদের সৌভাগ্য আমরা যমুনায় বঙ্গবন্ধু সেতু নির্মাণ করি। সেই সেতুতে রেল, গ্যাস ও বিদ্যুৎ লাইন সংযোজন করেই আমরা সেটি নির্মাণ করি।

আমার কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ, অনুযোগ নেই। তাদের (বিরোধী) হয়তো আত্মবিশ্বাসের অভাব আছে। আশা করি এখন থেকে তাদের সে আত্মবিশ্বাস বাড়বে বলেও মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, আলহামদুলিল্লাহ পদ্মা সেতু হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতি ধসে পড়েনি। সমগ্র বিশ্বের কাছে বাংলাদেশ প্রমাণ করেছে, এ দেশ জাতির পিতার স্বপ্নের বাংলাদেশ।

এ সেতুর ১২২ মিটার গভীর পর্যন্ত পাইল বসানো হয়েছে। শুধু বাংলাদেশ নয়, আঞ্চলিক যোগাযোগের ক্ষেত্রেও এ সেতু অবদান রাখবে বলেও সভায় জানান প্রধানমন্ত্রী।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, পদ্মা সেতুর জন্য ৬ হাজারের বেশি একর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। বাস্তুহারাদের পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেতু সংলগ্ন এলাকায় বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য করা হয়েছে, যাতে পরিবেশ ও প্রতিবেশ রক্ষা পায়।

রেলপথ চালু হলে ২১টি জেলা সুফল পাবে। পদ্মাপাড়ের মানুষ আর অবহেলিত থাকবে না বলেও জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হলে জিডিপি প্রত্যাশিত ১.২৩ শতাংশের চেয়ে বেশি হবে। এ বছরের শেষে বঙ্গবন্ধু টানেল শেষ হবে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে। আমাদের অর্থনীতি গতিশীল হবে।

তিনি বলেন, বাবা, মা, ভাই সব হারিয়ে পঁচাত্তরের পর ছয় বছর রিফিউজি থাকতে হয়েছে। অনেক বাধা সত্ত্বেও দেশে এসেছিলাম একটি লক্ষ্য নিয়ে। বাংলাদেশের জন্য কিছু করতে চেয়েছিলাম। আমার মা, আমার বাবা সবসময় তাদের দোয়া আমার ওপর রেখেছেন। তা না হলে অতি সাধারণ বাঙালি মেয়ে এত কাজ করতে পারতাম না বলেও উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা।

পদ্মা সেতুর উদ্বোধনী বক্তব্য শেষে স্মারক ডাকটিকিট অবমুক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন উপলক্ষে একশ’ টাকার স্মারক নোটও অবমুক্ত করেন তিনি। পরে প্রকল্পের ব্যবস্থাপকসহ সংশ্লিষ্টরা প্রধানমন্ত্রীর হাতে পদ্মা সেতুর রেপ্লিকা তুলে দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ফটোসেশনে অংশ নেন পদ্মা সেতু নির্মাণে সংশ্লিষ্টরা।

Advertisement
Share.

Leave A Reply