fbpx

প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন ডা. জাফরুল্লাহ

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দেশে করোনা পরিস্থিতিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে সরকারের প্রয়োজনীয় কী কী পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে চিঠি দিয়েছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। খবরটি নিশ্চিত করেছেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রেস উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর হোসেন মিন্টু। 

আজ সোমবার (১৯ এপ্রিল) বেলা সাড়ে ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে চিঠিটি জমা দেন জাফরুল্লাহ চৌধুরীর উপদেষ্টা জাহাঙ্গীর হোসেন মিন্টু।

জাফরুল্লাহ চৌধুরী তার চিঠিতে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরে ১১টি পরামর্শ দিয়েছেন। চিঠিতে উল্লেখিত ১১টি করণীয় পদক্ষেপ হলো —

১. ওষুধ, অক্সিজেন, মেডিকেল যন্ত্রপাতি ও সামগ্রী থেকে বিশেষ এসআরও’র মাধ্যমে সবধরণের শুল্ক, অগ্রিম আয়কর, মূসক ইত্যাদি প্রত্যাহার করা।

২. আইসিইউ পরিচালনা করার জন্য জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক ও নার্স প্যারামেডিকদের প্রশিক্ষণব্যবস্থা করা। যেমন, আইসিইউতে দ্রুত অক্সিজেন দেওয়া, নন-ইনভেসিব শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়া, শ্বাসতন্ত্রে টিউব দিয়ে অক্সিজেন সরবরাহ, অন্যান্য নিয়ন্ত্রিত শ্বাস-প্রশ্বাস ব্যবস্থাপনা প্রক্রিয়া এবং শ্বাসনালী ট্যাকিয়া ছিদ্র করে দ্রুত অক্সিজেন সরবরাহ নিশ্চিত করতে ২০০ চিকিৎসক ও ৫০০ নার্স, টেকনিশিয়ানের এক মাসের প্রশিক্ষণব্যবস্থা করা।

৩. সব ওষুধের মূল্য এবং রোগ পরীক্ষার পদ্ধতিগুলোর চার্জ সরকারের পক্ষ থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া।

৪. কারাগারে বন্দি সব আসামিকে দ্রুত টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করা এবং খুন ও দুর্নীতির কারণে দণ্ডিত অভিযুক্ত ছাড়া বাকি সবাইকে জামিনে মুক্তি দেওয়া।

৫. সরকারি-বেসরকারি মেডিকেল কলেজগুলোতে প্রতি বছর ২০ হাজার শিক্ষার্থী ভর্তি করানো এবং এমবিবিএস পাসের পর ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এক বছর বাধ্যতামূলক ইন্টার্নশিপ করানো।

৬. আগামী বাজেটে সব ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রের নিরাপত্তাবেষ্টনী সংস্কার, গভীর নলকূপ ও বিদ্যুতায়ন ব্যবস্থার উন্নয়ন, মেডিকেল, নার্সিং, ফিজিওথেরাপি ও টেকনিশিয়ানদের জন্য ডরমিটরি, ক্লাসরুম, লাইব্রেরি, ডাইনিং রুম এবং পাঁচ চিকিৎসক ও ১০ জন নার্সিং, ফিজিওথেরাপি ও টেকনিশিয়ান প্রধানদের জন্য ৬০০-৭০০ বর্গফুটের বাসস্থান, বহিঃবিভাগসহ ৩০ শয্যার হাসপাতাল, ল্যাবরেটরি ও অপারেশন থিয়েটার তৈরির জন্য ছয় কোটি টাকা এবং অপারেশন থিয়েটার, এক্সরে আল্ট্রাসনোলজি, চক্ষু ও বিভিন্ন ল্যাবরেটরির যন্ত্রপাতির জন্য চার কোটি টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করা। এ ধরণের উন্নয়নে ইউনিয়নের প্রায় এক লাখ জনগণের জন্য আধুনিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।

৭. লকডাউন সফল করার জন্য দরিদ্র ও নিম্নবিত্ত পরিবারকে সরাসরি আর্থিক প্রণোদনার পরিবর্তে বিনামূল্যে মাসিক রেশনে চাল, ডাল, আটা, আলু, তেল, চিনি, পেঁয়াজ, রসুন ইত্যাদি দেওয়া। রেশন বিতরণের জন্য সামরিক বাহিনী, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী এবং এনজিওকর্মীদের ব্যবহার সুফল দেবে।

৮. ট্রিপসের বাধ্যতামূলক লাইসেন্সের মাধ্যমে ভ্যাকসিন উৎপাদন সুবিধা সৃষ্টির জন্য নোবেল লরিয়েট ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে আপনার বিশেষ দূত করে ইউরোপে পাঠান।

৯. ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য শূন্য দশমিক ৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করুন, সুফল পাবেন।

১০. গত বছর দ্রুত সিনোজাকের ট্রায়াল অনুমোদন না দিয়ে যে ভুল করা হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি কাম্য নয়।

১১. গণস্বাস্থ্য উদ্ভাবিত এন্টিবডি এন্টিজেন অনুমোদন এক বছরে হয়নি। ড. বিজন কুমার শীলের ভিসা না হওয়ায় বাংলাদেশে ফিরতে পারছেন না। ছয় মাস আগে চার বিজ্ঞানীর তত্ত্বাবধানে রিয়েল টাইম পিসিআর ল্যাবরেটরি স্থাপিত হলেও ব্যবহার শুরু করার জন্য স্বাস্থ্য অধিদপ্তর এখনও অনুমতি দেয়নি। এতে ক্ষতি হচ্ছে দেশের, বিষয়টি আপনাকে পুনরায় অবগত করলাম।

চিঠির শেষে ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী ‘দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণে জাতির কঠিন সমস্যা থেকে মুক্তির সম্ভাবনা অনেক বেশি’ বলে উল্লেখ করেন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুস্বাস্থ্য কামনা করে তাকে বাংলা নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান।

Advertisement
Share.

Leave A Reply