fbpx

ফেসবুকে প্রেম, গাজীপুরে মার্কিন যুবকের বিয়ে

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

ভালোবাসা না জাতি মানে, না ধর্ম, বর্ণ, স্থান, কাল। যুগে যুগে ভালোবাসার অনেক দৃষ্টান্ত আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে এই  সত্যতার প্রমাণ দিয়ে গেছে। ইউসুফ-জুলেখা, শিরি-ফরহাদ, লাইলী-মজনু বার বার তাদের প্রেমের প্রমাণ দিয়ে প্রেমকে অমর করে গেছে।

সৃষ্টির শুরু থেকে চলে আসা সেই প্রেম কখনো হারাবার নয়। এখনও মানুষ প্রেমের টানে সব কিছু ছেড়ে প্রিয় মানুষকে কাছে পাবার তাড়নায় সব বিসর্জন দিতেও প্রস্তুত। ঠিক তেমনি এক দৃষ্টান্ত আবারও আমাদের সামনে উপস্থাপন করলেন  আমেরিকার এক তরুণ।

ভালোবাসার মানুষটির হাত ধরতে, তার সান্নিধ্য পেতে সে যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে বাংলাদেশের গাজীপুরে এসে এক নারীকে বিয়ে করেছেন।

মার্কিনী সেই যুবক যুক্তরাষ্ট্রের মিজুরি অঙ্গরাজ্যের ক্যানসাস সিটির নাগরিক রাইয়ান কফম্যান (২৭)। আর তার প্রেয়সী গাজীপুর নগরীর বাসন থানার ভোগড়া মধ্যপাড়া এলাকার মোশারফ হোসেন মাস্টারের নাতনি সাইদা ইসলাম (২৬)।

গত ২৯ মে রাইয়ান বাংলাদেশে আসেন। পরিবারের সম্মতিতে বুধবার (১ জুন) সাইদার সঙ্গে তার বিয়ে হয়।

এই বিয়ে নিয়ে এলাকাবাসীর মনে কৌতূহলের শেষ নেই। আমেরিকার সেই যুবইককে এক নজর দেখার জন্য বিয়ে বাড়িতে অনেকে ভিড় জমায়।

কনের নানা মোশারফ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, তার মেয়ের জামাই ঢাকার দনিয়া এলাকার বাসিন্দা সিকন্দার আলী ২০১৯ সালে মারা যান। তার মৃত্যুর পর সাইদা মা ও ছোট বোনকে নিয়ে তার বাসায় ওঠে এবং তখন থেকে তারা এখানেই থাকছে। সাইদা তার বাবা মারা যাওয়ার এক বছর পর ২০২০ সালে মানবিক বিভাগ থেকে স্নাতক পাশ করে।

অন্যদিকে নিজেদের মধুর সম্পর্ক কীভাবে হয়েছিল, এমন প্রশ্নের উত্তরে সাইদা বলেন, ২০২১ সালের  এপ্রিলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাইয়ানের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তারা নিজেদের ফোন নম্বর ও ফেসবুক আইডি বিনিময় করেন। এরপর থেকে তাদের নিয়মিত যোগাযোগ শুরু হয়। ধীরে ধীরে প্রণয় আরও বাড়তে থাকে। অবশেষে দুজনেই বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন।

সাইদার পারিবার থেকে জানা যায়, রাইয়ান বিয়ে করার জন্য তার দেশেই খ্রিস্টানধর্ম ত্যাগ করে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তার ও সাইদার পরিবারের সম্মতিতে বাংলাদেশে আসেন তিনি। ওইসময় প্রথমবার দুজনের সামনা সামনি দেখা হয়। তারপর সাইদার সঙ্গে গাজীপুরে তার নানার বাড়িতেই ওঠেন রাইয়ান। পরে সামাজিক ও ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বিয়ের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করেন তারা।

বাংলাদেশে আসার আগেই বিয়ের গয়না ও কাপড় কেনার জন্য সাইদার কাছে অর্থ পাঠান রাইয়ান। তিনি আসার আগেই ওই অর্থ দিয়ে বিয়ের প্রয়োজনীয় কেনাকাটা করেন সাইদা।

এদিকে বাংলাদেশি আথেতিয়তায় মুগ্ধ রাইয়ান। তিনি বলেন, “আমেরিকায় অচেনাদের সঙ্গে কেউ খুব একটা কথা বলে না। কিন্তু বাংলাদেশে আসার পর দেখছি, আমার প্রতি সবাই খুবই আন্তরিক। আমার ক্ষুধা না লাগতেই লোকজন আমাকে খাওয়ানোর জন্য ব্যস্ত হয়ে পড়েন। আমাকে আদর, আপ্যায়ন করতে সবসময় ব্যস্ত থাকেন তারা, যা আমেরিকায় বিরল।”

সাইদাকে যুক্তরাষ্ট্রে নিয়ে যাওয়ার কথা জানিয়ে রাইয়ান বলেন, আনুষঙ্গিক কাগজপত্র ও ভিসা প্রসেসিং করতে কয়েক মাস সময় লাগতে পারে। এসব সম্পন্ন হলেই সাইদাকে আমেরিকা নিয়ে যাবেন। পরে সেখানেই তারা সংসার করবেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply