করোনা মহামারিতে ক্ষতিগ্রস্ত অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে বাংলাদেশকে অর্থনৈতিক উন্নয়ন সহযোগিতা তহবিলের (ইডিসিএফ) আওতায় ১০ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দেবে দক্ষিণ কোরিয়া। বাংলাদেশি মুদ্রার হিসেবে প্রতি ডলার ৮৫ টাকা করে এ ঋণের পরিমাণ প্রায় ৮৫০ কোটি টাকা।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) ঢাকায় দক্ষিণ কোরিয়া দূতাবাসের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইডিসিএফ হচ্ছে, উন্নয়নশীল দেশগুলোর আর্থসামাজিক উন্নয়নে সহায়তার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার একটি উন্নয়ন অর্থায়ন কর্মসূচি।
মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগে (ইআরডি) বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের মধ্যে এ সংক্রান্ত ‘প্রোগ্রাম লোন ফর সাসটেইনেবল ইকোনমিক রিকভারি’ ঋণচুক্তি সই হয়েছে। বাংলাদেশের পক্ষে ইআরডি’র অণুবিভাগের এশীয় উইংয়ের প্রধান (অতিরিক্ত সচিব) মো. শাহরিয়ার কাদের সিদ্দিকী এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পক্ষে কোরিয়া এক্সিম ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক কিম তে সু চুক্তিতে সই করেন।
কোরিয়া এক্সিম ব্যাংক থেকে এ মাসের মধ্যেই অর্থ ছাড় করা হবে। ঋণের সুদের হার বার্ষিক শূন্য দশমিক শূন্য ৫ শতাংশ এবং ১৫ বছরের ‘গ্রেস পিরিয়ড’সহ ম্যাচুরিটি সময়কাল ৪০ বছর।
এ সম্পর্কিত বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, করোনার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশকে সহায়তার অংশ হিসেবে ইকোনমিক ডেভেলপমেন্ট কো-অপারেশন ফান্ড (ইডিসিএফ) থেকে এ ঋণ সহায়তা দিচ্ছে দক্ষিণ কোরিয়া। ২০২১ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত নতুন ইডিসিএফ ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তির অধীনে এটিই প্রথম ঋণচুক্তি। চুক্তি অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়া পাঁচ বছরের জন্য বাংলাদেশকে ৭০ কোটি ডলার পর্যন্ত স্বল্প সুদে ঋণ দেবে।
ইআরডি জানায়, এ প্রোগ্রামের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের ঘাটতি বাজেটের জন্য বৈচিত্র্যময় উৎস সৃষ্টি হবে। এর আওতায় ইসলামিক ব্যাংকগুলোকে সরকারের ঋণ গ্রহণ কার্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করা, ডিজিটালাইজেশনসহ উন্নত কর ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কর ফাঁকি রোধ এবং ভ্যাট আদায় নিশ্চিত করা হবে। পাশাপাশি, এ কর্মসূচির মাধ্যমে করদাতার সংখ্যা বৃদ্ধি এবং আয়কর আহরণ বাড়ানো হবে।
এর আগে, দক্ষিণ কোরিয়া ২০২০ সালের ডিসেম্বরে করোনা মহামারি মোকাবেলায় বাংলাদেশকে বাজেট সহায়তা হিসেবে ৫০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা দিয়েছিল।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ইডিসিএফ ঋণপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ। এ পর্যন্ত দক্ষিণ কোরিয়া ইডিসিএফের মাধ্যমে বাংলাদেশের ২৪টি উন্নয়ন প্রকল্পে মোট ১২০ কোটি ডলার অর্থায়ন করেছে।