fbpx

বিজিবি, র‍্যাব ও শিল্প পুলিশশ্রমিক বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে প্রস্তুত

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

দেশের শিল্প অধ্যুষিত এলাকাগুলোয় শ্রম অসন্তোষ অব্যাহত ছিল গতকালও। কাঙ্ক্ষিত মজুরির দাবিতে পথে নেমেছেন মিরপুর, গাজীপুর ও আশুলিয়া এলাকার শ্রমিকরা। পোশাক শ্রমিকদের নিম্নতম মজুরি বোর্ড গঠন হলেও এখনো এ নিয়ে চূড়ান্ত কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। সার্বিক দিক বিবেচনায় অনাকাঙ্ক্ষিত যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা ও বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্তসংখ্যক র‍্যাব, বিজিবি ও শিল্প পুলিশ মোতায়েনের প্রস্তুতিও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

গার্মেন্টস খাতের শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণে গঠিত বোর্ডের চতুর্থ সভা অনুষ্ঠিত হয় গত ২২ অক্টোবর। ওই সভায় ন্যূনতম মজুরি পুনর্নির্ধারণে শ্রমিক পক্ষের প্রস্তাব ছিল ২০ হাজার ৩৯৩ টাকার। মালিক পক্ষের প্রস্তাব ছিল ১০ হাজার ৪০০ টাকার। ওই দিনই বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন শিল্প অধ্যুষিত এলাকার শ্রমিকরা। অসন্তোষেরও শুরু তখনই। এরপর গত ১২ দিন ধরে শ্রমিক অসন্তোষ অব্যাহত রয়েছে। এর মধ্যে ঢাকায় অসন্তোষ দৃশ্যমান হয় ৩১ অক্টোবর, যা গতকালও অব্যাহত ছিল। এখন পর্যন্ত এ শ্রম অসন্তোষে দুজন শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

গতকাল বিক্ষোভ তুলনামূলক নিয়ন্ত্রণে ছিল বলে দাবি করছেন আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বড় কোনো দুর্ঘটনা ঘটেনি। আজ ও আসন্ন অবরোধের মধ্যে বিক্ষোভ নিয়ন্ত্রণের সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। বিক্ষুব্ধ এলাকাগুলোয় এরই মধ্যে বিজিবির টহল শুরু হয়েছে। বিক্ষোভের সম্ভাব্য তীব্রতা মোকাবেলায় বিজিবির পাশাপাশি র‍্যাব ও শিল্প পুলিশ বাহিনীকেও প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

গাজীপুর মহানগরসহ বিভিন্ন স্থানে গতকালও বেতন বৃদ্ধির দাবিতে পোশাক শ্রমিকদের বিক্ষোভ অব্যাহত ছিল। শ্রমিকরা গত ২৩ অক্টোবর থেকেই এখানে নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। বুধবার বিক্ষোভ কিছুটা কম থাকলেও গতকাল তা বেড়ে যায়। সকাল থেকেই শ্রমিকরা গাজীপুর মহানগরীর বিভিন্ন স্থানে বিক্ষুব্ধ জমায়েতের চেষ্টা চালায়। এখানকার অধিকাংশ কারখানাই গতকাল বন্ধ ছিল।

গাজীপুরে সকাল সাড়ে ৮টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের ইটাহাটা ও নাওজোর এলাকায় কোস্ট টু কোস্ট কারখানার সামনে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এক পর্যায়ে শ্রমিকরা এলোপাতাড়িভাবে আশপাশের কারখানাগুলোয় ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে ভাংচুর চালায়। খবর পেয়ে বিজিবি, র‍্যাব, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাঁদানে গ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে শ্রমিকদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। একই সময়ে গাজীপুর মহানগরের ভোগড়া বাইপাস এলাকার টিএম ফ্যাশন লিমিটেড, চৌধুরীবাড়ী এলাকায় বেলমন্ড গার্মেন্টস, ব্রাদার্স ফ্যাশন লিমিটেড ও রুয়া ফ্যাশন লিমিটেডসহ অন্যান্য কারখানার শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে কারখানার সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করতে থাকে। এ সময় বাসন সড়ক এলাকায় আলেমা ও মীম ডিজাইন কারখানার সামনে বিক্ষোভ হয়। এক পর্যায়ে মহানগরের চৌধুরীবাড়ী

এলাকার বেলমন্ড গার্মেন্টস, ব্রাদার্স ফ্যাশন লিমিটেড, রুয়া ফ্যাশন লিমিটেডসহ আশপাশের কারখানার শ্রমিকরা বেতন বাড়ানোর দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে। ভোগড়া বাইপাস এলাকার আশপাশের কারখানার শ্রমিকরা মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে মহাসড়ক থেকে তাদের সরিয়ে দেয়।

রাজধানীর বিজয়নগরে গতকাল শ্রম ভবনে শ্রমিক নেতাদের সঙ্গে সরকারের প্রতিনিধিদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক নৌ-পরিবহনমন্ত্রী ও শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের সভাপতি শাজাহান খানসহ শ্রমিক সংগঠনের শীর্ষ নেতারা। বেলা ৩টায় শুরু হয়ে এ বৈঠক শেষ হয় সন্ধ্যা ৬টায়।

Advertisement
Share.

Leave A Reply