রাঙ্গামাটিতে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা জাতিগোষ্ঠীর ২৮ হাজার ৭৪৬ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে তাদের মাতৃভাষায় ৬৪ হাজার বই বিতরণ করা হচ্ছে। ১ জানুয়ারি সকাল থেকেই সরকারি নিদের্শনা অনুসারে স্বাস্থ্যবিধি মেনে জেলার সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূূত্রে জানা যায়, চলতি বছর প্রাথমিক পর্যায়ে রাঙ্গামাটিতে ৮৫ হাজার ২৮ জন শিক্ষার্থীকে ৩ লাখ ৭৯ হাজার ৯০০ বই বিতরণ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া চাকমা, মারমা, ত্রিপুরা ভাষায় প্রাক-প্রাথমিক থেকে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত ২৮ হাজার ৭৪৬ জন শিক্ষার্থীকে ৬৪ হাজার ৩০৫টি নিজস্ব মাতৃভাষায় বই বিতরণ শুরু হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি বছর জেলায় মাধ্যমিক পর্যায়ে ৮ লাখ ৯০ হাজার বই বিতরণ করা হচ্ছে। প্রথম দিনে মাধ্যমিকে বই পেয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থীরা, পর্যায়ক্রমে অন্যান্য শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের মাঝে বই বিতরণ করা হবে।
রাঙ্গামাটি জেলা শহরের পৌর জুনিয়র উচ্চবিদ্যালয়ের ষষ্ঠ শ্রেণীর শিক্ষার্থী খুমই ত্রিপুরা; দুর্গম পাহাড়ি গ্রামে জন্ম নেয়া এই শিক্ষার্থী পারিবারিক অসচ্ছলতায় উচ্চশিক্ষা অর্জনে এসেছে শংকর মিশন অনাথ আশ্রমে। খুমই ত্রিপুরা জানান, বছরের প্রথম দিনে নতুন বই পেয়ে আমরা খুব খুশি লাগছে। নতুন বইয়ের ঘ্রাণ আমার খুব ভালো লাগে, প্রথম দিন শুধু বইয়ের প্রতিটি পাতাই আমি খুলে দেখব। নতুন বই হাতে পেয়ে খুমইয়ের মতো খুশি যুবরাজ, সালকাসাংরাও।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাজ্জাদ হোসেন জানান, আমাদের হাতে যে বই এসেছে তা জেলার দুর্গম এলাকা পর্যন্ত সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। বছরে প্রথম দিনেই সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একযোগে বই বিতরণ শুরু হয়েছে। জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জানিয়েছেন, চাহিদা অনুসারে বই আসছে। এরই মধ্যে যেসব বই এসেছে তা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পৌঁছে দেয়া হয়েছে। কিছু বই এখনো আসেনি; সেগুলো কিছুদিনের মধ্যে চলে আসবে।
প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার ৪৬ বছর পর ২০১৭ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসতরত ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী শিশুদের জন্য মাতৃভাষায় প্রাক-প্রাথমিকে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। পর্যায়ক্রমে ২০১৮ সালে প্রাথমিক পর্যায়ে প্রথম শ্রেণী ও ২০১৯ সালে প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণী ও ২০২০ সালে তৃতীয় শ্রেণী পর্যন্ত মাতৃভাষায় পাঠদান কার্যক্রম শুরু হয়।