fbpx

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

মোরশেদ মিশু। নামেই যার পুরো পরিচয় দেওয়া হয়ে যায়। তবে খাতায় কলমে পরিচয় দিতে গেলে, বলতে হয় তিনি একজন ‘উন্মাদ’। না না যা ভেবেছেন তেমন কিছু না।  তিনি উন্মাদ পত্রিকার একজন কার্টুনিস্ট।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

খালের আগের ও পরের অবস্থা

এখানেই আসলে তার পরিচয়ের শেষ না। তিনি একই সঙ্গে একজন অভিনেতা ও উপস্থাপক। আর এসব পরিচয় ছাপিয়ে তার সবচেয়ে সুন্দর পরিচয়, তিনি একজন পরিষ্কার মানুষ। যিনি তার আশপাশ পরিষ্কার করে ফেলেন তার নিজের ‘স্টাইলে’

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

এই তো কিছুদিন আগে নিজ এলাকায় এক কাণ্ড ঘটিয়ে ফেললেন। এলাকার মানুষ যাতায়াতের এক জায়গায় ময়লা ফেলে নোংরা করে রেখেছে। মিশু হঠাৎ উদ্যোগ নিয়ে রাতারাতি সেই জায়গা পরিষ্কার করে সেখানে দেখালে দারুণসব থিম এঁকে ফেললেন।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

মিশুদের সাথে ছিলেন স্বয়ং আহসান হাবিব

এরপরই আসলো তার ‘খালে হবে’। যা প্রায় আলোড়ন তুলে ফেলেছে। কী এই ‘খালে হবে’ প্রজেক্ট? কিভাবে শুরু? কী করেছেন মিশু ও তার গ্যাং?

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

কাজের শেষে ব্রিজ রঙ করা হয়

মিশুর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ঘেটে পাওয়া গেলো এই ‘খালে হবে’- এর ইতিহাস।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

মোহাম্মদপুর সোসাইটি লিমিটেডের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় নাকে বিশ্রি গন্ধ আসে। খালে ভেসে থাকে কয়েক স্তরের ময়লা। নামেই শুধু খাল কিন্তু পানির অস্তিত্বই যেন নেই। এই চিরচেনা চেহারাকে মাত্র দুই দিনে পাল্টে দিয়েছেন মিশু ও তার দল।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

সিটি কর্পোরেশনের কর্মীরাও সাহায্য করেছেন

এমন ম্যাজিক দেখালেন, এলাকার মানুষই যেনো চিনতে পারছে না এই খাল। অনেকে তো বলেই ফেলেছেন, এই ময়লার নিচে যে পানি ছিল সেটাই তো ভুলে গিয়েছিলাম!

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

ময়লায় ভরা খাল

কেমন করে শুরু হলো তার পেছনের গল্পটা হলো, কিছুদিন আগে যখন কয়েক ঘণ্টার বৃষ্টিতে ঢাকা শহর ডুবে গেলো তখনই একজনের একটা ভিডিও ফেসবুকে নজরে আসে মিশুর। সেটা দেখেই মনে হলো খাল পরিষ্কার করে ফেলতে পারলে কেমন হয়। কিন্তু একা তো সম্ভব ছিলো না। সাথে কেউ কাজ করতে চায় কিনা সেই প্রশ্ন ফেসবুকের মাধ্যমে জিজ্ঞেস করলে প্রায় একশ জন ইচ্ছা পোষণ করেন।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

মোর্শেদ মিশু

কিন্তু এত মানুষ এক সাথে কাজ করতে তো খরচও লাগবে অনেক। এই স্বেচ্ছাসেবকদের খাওয়া, পানি, খরচের টাকা কোথা থেকে আসবে ভাবতে গিয়ে দেশ বিদেশের বন্ধুদের কাছ থেকে বেশকিছু আর্থিক সহযোগিতাও পেয়ে যান। তাদের এই আয়োজনে যুক্ত হয়ে গেলেন স্বয়ং স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার।  তিনি এলাকার সব পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের সঙ্গে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

২৮ ও ২৯ সেপ্টেম্বর দুই দিনে ১ থেকে ৪ নম্বর ব্র্রিজের পুরো অংশ পরিষ্কার করতে সক্ষম হয় মিশু ও তার দল। সাথে রঙ করা হয় ছোট ছোট ব্রিজগুলো। এশিয়ান পেইন্ট ও অ্যাওয়ারনেস থ্রি সিক্সটি এই রঙ সরবারহ করে।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

ওয়ার্ড কমিশনার তার যথাসাধ্য সাহায্য করেছেন।

মিশুর ফেইসবুকেরই একটি ভিডিও থেকে জানা যায়, এমন কোনো জিনিস নেই যা এই খালে ফেলা হতো না। কাপড়, কম্বল, প্যাড, ডায়াপার, এমনকি ভাঙ্গা শোলা, ভাঙা কমোড, ভাঙ্গা সোফার অংশও।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

চলছে রঙের কাজ

এই বিশাল এলাকা পরিষ্কার করতে দুই দিনে খরচ হয়েছে মাত্র ৮৬ হাজার ৫৩০ টাকা। কার কাছ থেকে কত টাকা এসেছে এবং সেটা কীভাবে খরচ হয়েছে সেই হিসাবও দেওয়া হয়েছে ইতোমধ্যে।

মোরশেদ মিশুর ‘খালে হবে’

পাখির চোখে

ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে মিশু বলেন, ‘আগামী দুই বছরের মধ্যে ২০০ এবং ৫ বছরের মধ্যে ৫০০ জায়গা পরিষ্কার করে সুন্দরভাবে রঙ করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছি। আমাদের এই আন্দোলনকে আপডেটিং সোসিও-ওয়াল নেটওয়ার্ক বলছি।’

Advertisement
Share.

Leave A Reply