করোনাভাইরাসের সংক্রমণরোধে সরকার ঘোষিত লকডাউনে স্বাস্থ্যবিধি মানা ও চলাচলে নিষেধাজ্ঞা নগরবাসী মানছে কিনা, তা নজরদারি করছে ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন।
ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মোবাইল কোর্ট বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে স্বাস্থ্যবিধি না মানা, অকারণে ঘর থেকে বের হওয়া ও লকডাউনে বিধিনিষেধ না মানার অপরাধে ১৪ টি মামলায় সর্বমোট ১৩ হাজার ৯ শত টাকা জরিমানা আদায় করেছে।
১৫ এপ্রিল বৃহস্পতিবার মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে ডিএনসিসি এলাকার অঞ্চল-৪ এর ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে সরকারের আদেশ অমান্য, মাস্ক ব্যবহার না করা, সামাজিক দূরত্ব মেনে না চলা, হোটেল, রেস্টুরেন্ট ও দোকান খোলার দায়ে ৭ টি মামলায় ৭০০০ টাকা এবং অঞ্চল-৯ এর ৩৯ ও ৪০ নম্বর ওয়ার্ডে অপর ৭টি মামলায় আরও ৬৯০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়।
এভাবে ১৪টি মামলায় আদায়কৃত জরিমানার সর্বমোট পরিমাণ ১৩ হাজার ৯ শত টাকা। এসময় সকলকে সরকারের নির্দেশনাসমূহ যথাযথভাবে মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয় বলে জানায় ডিএনসিসি।
এদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মোবাইল কোর্ট লকডাউনের দ্বিতীয় দিনে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে সরকারি বিধিনিষেধ ও স্বাস্থ্যবিধি ভঙ্গ করায় মোট ১১টি মামলা করেছে। ডিএনসিসির আঞ্চলিক নির্বাহী কর্মকর্তাদের পাশাপাশি করপোরেশনের সম্পত্তি বিভাগের তিনজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ১০টি মোবাইল কোর্টের নেতৃত্ব দেন।
ডিএনসিসি’র আঞ্চল-১ বেইলী রোড, মগবাজার, হাতিরপুল ও নিউ মার্কেট এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। বেলা ৩টার পর যেসব দোকানপাট, কাঁচাবাজার, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা ছিল সেসকল বন্ধ করা হয়। হাতিরপুল ও নিউমার্কেট কাঁচাবাজারে ব্যবসায়ীদেরকে বাজারের বাইরে রাস্তার একাংশে বসে সাময়িকভাবে মাছ-মাংস, তরিতরকারি বিক্রিকে উৎসাহিত করেন।
অঞ্চল-২, অঞ্চল-৩, অঞ্চল-৪ এর ৩২, ৩৪, ৪২ ও ৪৩ নম্বর ওয়ার্ডের বাবুবাজার, কাপ্তানবাজার, ধোলাইখাল, বাহাদুর শাহ পার্ক ও লালকুটি এলাকা, এবং অঞ্চল-৫ এর ৭ নং ওয়ার্ডের মানিকনগর বাজার ও ৪৪ নং ওয়ার্ডের সূত্রাপুর বাজারে অভিযান পরিচালনা করে ডিএনসিসির মোবাইল কোর্ট। এ সময় প্রায় ১৫০টি দোকান ও ব্যক্তিকে বিভিন্ন কারণে সতর্ক করা হয়।
খিলগাও ও সিপাহীবাগ বাজারসহ অঞ্চল ২ এর অন্যান্য বাজার ও দোকানপাট পরিদর্শন করে সরকারী বিধিনিষেধ ভঙ্গ করার দায়ে ৫টি মামলা দায়ের ও নগদ ৮ হাজার ৩ শত টাকা জরিমানা আদায় করেন সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
এ সময় আদালত সরকারের আদেশ না মেনে দোকান খোলা রাখা, মাস্ক না পরে জনসমাগমস্থলে ঘুরে বেড়ানোর অপরাধে ৪ টি মামলা দায়ের করেন এবং ৫ হাজার ৯ শত টাকা অর্থদণ্ড আদায় করেন।
ডিএসসিসির সম্পত্তি কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. মুনিরুজ্জামানের বলেন, ‘জনগণ স্বতস্ফূর্তভাবে এবারের লকডাউন দৃশ্যমানভাবে মেনে চলছে। তারপরও কিছু কিছু জায়গায় সরকারি বিধিনিষেধ না মানার প্রবণতা আমরা দেখেছি। সাধারণত আমরা জনগণকে জরিমানা করতে চাই না। কিন্তু জাতির বৃহত্তর স্বার্থ বিবেচনায় এবারের লকডাউনে আমাদেরকে একটু কড়াকড়ি আরোপ করতেই হচ্ছে। সেই আলোকে আজ সরকারি বিধিনিষেধ ভঙ্গ করে দোকানপাট খোলা রাখায় ৫টি মামলা দায়ের ও তাদেরকে জরিমানা করেছি।‘
