বানরের দেহে প্রতিস্থাপন করা হয়েছিল জিনগত প্রকৌশলের মাধ্যমে বদলে দেওয়া একটি শূকরের কিডনি। সেই কিডনি প্রতিস্থাপনের পর বানরটি সুস্থ-স্বাভাবিক অবস্থায় জীবিত ছিল প্রায় দুই বছর। বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই সফল প্রতিস্থাপনের ফলে মানুষের দেহে অন্য প্রাণীর কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রক্রিয়াটি আরও এগিয়ে গেল। এতে প্রতি বছর লাখো মানুষের জীবন বাঁচানো সম্ভব হবে।
গতকাল বুধবার বিজ্ঞানবিষয়ক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত এক নিবন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের বিজ্ঞানীরা বিষয়টি প্রকাশ করেছেন। তাঁরা বলছে, প্রাইমেট গোত্রীয় বানরটির দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার ফলে মানুষের দেহ উপযোগী অন্য প্রাণীর কিডনি প্রতিস্থাপনের বিষয়টি সফল হওয়ার পথে আরও একধাপ এগিয়ে গেল।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের ই-জেনেসিস নামের একটি জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা চালিয়েছে। তাঁরা মূলত অত্যাধুনিক জিনোম প্রকৌশলের ওপর ভিত্তি করে কাজ করেছেন। অত্যাধুনিক এই জিনোম প্রযুক্তিটির নাম হলো—জিন এডিটিং বা জিন সম্পাদনা।
এই নতুন আবিষ্কার নিয়ে যথেষ্ট আশাবাদী অনেকে। তাদেরই একজন যুক্তরাষ্ট্রের ইউনিভার্সিটি অব ম্যারিল্যান্ডের স্কুল অব মেডিসিনের কার্ডিয়াক জেনোট্রান্সপ্ল্যান্টেশন প্রোগ্রামের পরিচালক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। তিনি বলেন, এই নিবন্ধ আমাদের দেখিয়ে দিয়েছে যে, গুরুত্বপূর্ণ এই প্রযুক্তিতে এখন সরাসরি মাঠ পর্যায়ের চিকিৎসায় প্রয়োগের সময় এসেছে।
চিকিৎসকেরা আশা করছেন, এই প্রতিস্থাপন সফল হলে প্রতি বছর লাখো মানুষ বেঁচে যাবে। পরিসংখ্যান বলছে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রতি ১ লাখ মানুষের ৪০ শতাংশই নানা ধরনে কিডনি জটিলতায় ভোগেন এবং তাদের অধিকাংশেরই অঙ্গ প্রতিস্থাপন করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। কেবল যুক্তরাষ্ট্র নয় বিশ্বের অন্যান্য দেশেও কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা একেবারে কম নয়।