ময়মনসিংহের ঈশ্বরগঞ্জে সরকারি ঘর দেওয়ার নামে এক বৃদ্ধার জমি লিখে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সাবেক এক ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে। ওই জমি দখল নিতে গেলে বাধা দেওয়ায় বৃদ্ধাকে মারধর করা হয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে।
বিষয়টি নিয়ে থানায় মামলা করা হলে পুলিশ গতকাল মঙ্গলবার এ ঘটনায় জড়িত দুই যুবককে গ্রেপ্তার করেছে।
বৃদ্ধা ময়মনসিংহের সোহাগী ইউনিয়নের হাটুলিয়া গ্রামের প্রয়াত কিতাব আলীর স্ত্রী খাইরুন্নেছা বেগম (৬০)। বসবাসের জন্য তার ১০ শতক জমি আছে যাতে তিনি একাই বসবাস করেন।
জানা যায়, ওই বৃদ্ধার বাড়ি পাশেই থাকেন সোহাগী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের সাবেক ইউপি সদস্য সুরুজ মিয়া। প্রতারণা করে অন্তত দুই বছর আগে বৃদ্ধার পুরো জমিই লিখে নেন সুরুজ। বৃদ্ধাকে সরকারি ঘর পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাসও দেন তিনি। বৃদ্ধাকে জমির কাগজপত্র, জাতীয়পরিচয় পত্র ও ছবি দেওয়ার কথা বলেন সুরুজ।
বৃদ্ধা খাইরুন্নেছা বেগম সরকারি ঘর পাওয়ার আশায় সুরুজকে সব কিছু দেন। এর পর সাবরেজিস্ট্রার অফিসে নিয়ে খাইরুন্নেছার বাড়ির দশ শতাংশ জায়গা লিখে নেন ইউপি সদস্য সুরুজ। পরে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা দিয়ে বৃদ্ধাকে বাড়িতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। দলিলে জমির মূল্য লেখা হয় ৪ লাখ টাকা।
এই জমি লিখে নেওয়ার পরেই সুরুজ মিয়া এলাকাবাসীকে বলেন খাইরুন্নেছার বাড়ি তিনি কিনেছেন। প্রতারণার বিষয়টি খাইরুন্নেছা ও তার স্বজনরা বুঝতে পেরে প্রতিবাদ করে এবং জায়গা দখল নিতে বাধা দেয়।
এ নিয়ে গ্রাম্য সালিশ হয়। সালিশে সুরুজকে ২ শতক জায়গা নিয়ে বাকি ৮ শতক জায়গা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা বলা স্থানীয়রা। কিন্তু সুরুজ তা মেনে না নেওয়ায় সালিশ পণ্ড হয়ে যায়।
পরেই গত শুক্রবার সকালে সুরুজ মিয়া তার দলবল নিয়ে বৃদ্ধা খাইরুন্নেছার জায়গায় গাছ লাগাতে আসে। এসময় বৃদ্ধা ও তার ভাইয়ের সন্তানরা গাছ লাগাতে বাধা দিলে তাদের লাঠি দিয়ে মারধর শুরু করে ইউপি সদস্যের লোকজন।
এ ঘটনার পরে বৃদ্ধার ভাতিজী শাহানা আক্তার বাদী হয়ে সোমবার রাতে ঈশ্বরগঞ্জ থানায় ১৪ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দেন।
পুলিশ তদন্ত শেষে মঙ্গলবার বিষয়টি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে। পরে সন্ধ্যায় অভিযান চালিয়ে ওই ইউপি সদস্যের ছেলে মো. কাইয়ুম ও নাতী ফারুককে গ্রেপ্তার করে।
বৃদ্ধা খাইরুন্নেছা জানান, সরকারি ঘর দেবে বলে তার কাছ থেকে কাগজপত্র নেওয়া হয়। এরপর তার জমি লিখে নেয়। যখন তাকে টাকা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয় তখন বুঝতে পারেন কোনো সমস্যা হয়েছে। তিনি নিজের জমি ফেরত চান।