জাতীয় সংসদে ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেটে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেয়েছে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাখাত। প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাখাতে বরাদ্দকৃত অর্থের পরিমাণ ৩২ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। শতাংশ হিসেবে যার পরিমাণ পাঁচ দশমিক ৪ শতাংশ।
করোনা মোকাবিলায় গৃহীত কার্যক্রমসমূহ অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিবেচনায় স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনাখাতে এ বরাদ্দের প্রস্তাব করেন অর্থমন্ত্রী।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি। সে হিসেবে এবার প্রস্তাবিত বাজেটে স্বাস্থ্যখাতে ৩ হাজার ৪৮৪ কোটি টাকা বেশি অর্থ বরাদ্দের প্রস্তাব করা হয়।
বৃহস্পতিবার (৩ জুন) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল জাতীয় সংসদে বাজেট পেশকালে স্বাস্থ্যখাতে বরাদ্দের এ তথ্য জানান। এদিন তিনি দেশের ইতিহাসে সবচেয়ে বড় আকারের ছয় লাখ ৩ হাজার ৬৮১ কোটি টাকার বাজেট পেশ করেন।
গত অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে এ খাতে বরাদ্দের পরিমাণ ছিল ২৯ হাজার ২৪৭ কোটি টাকা। শতাংশের হিসাবে যা ছিল পাঁচ দশমিক দুই শতাংশ।
এদিকে মহামারি করোনাভাইরাস মোকাবিলায় গত অর্থবছরের মতো এই অর্থবছরেও জরুরি চাহিদা মেটাতে আবারও ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দের প্রস্তাব করেছেন অর্থমন্ত্রী।
অর্থমন্ত্রী বলেন, বিগত বাজেটে করোনা মোকাবিলায় স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের আওতায় বিশেষ কার্য়ক্রম বাস্তবায়নের জন্য বিপুল বরাদ্দ রাখা হয়। এছাড়া যেকোনো জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য ১০ হাজার কোটি টাকার থোক বরাদ্দ রাখা হয়।
তিনি আরও বলেন, ‘প্রথম প্রাদুর্ভাবের পর বছর ঘুরে এলেও বিশ্বব্যাপী করোনা মহামারির ভয়াবহ প্রকোপ বিদ্যমান রয়েছে। বিগত বাজেটের মতো এবারও করোনা মোকাবিলায় যা যা করা দরকার সরকার করে যাবে। এ কারণে আগামী অর্থবছরে জরুরি চাহিদা মেটানোর জন্য পুনরায় ১০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করেন।
২০২১-২২ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে রাজধানী ঢাকার বাইরে অবস্থিত জেলা শহরগুলোতে হাসপাতাল প্রতিষ্ঠায় ১০ বছরের কর অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়েছে। তবে এই সুবিধা পেতে তাদের কিছু শর্ত মানতে হবে।
অর্থমন্ত্রী বলেন, টেকসই উন্নয়ন অভীষ্ট অর্জনে প্রত্যেক নাগরিকের জন্য সুলভ এবং মান সম্পন্ন স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিতে সরকার প্রতিটি ওয়ার্ডে কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা দিচ্ছে। ইতোমধ্যে বিশেষায়িত স্বাস্থ্যসেবার উন্নতি সাধারণ হয়েছে। তবে বেসরকারি খাতের এসব ভূমিকা শহরকেন্দ্রিক। ফলে সরকারি উদ্যোগের পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবাকে ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর ও চট্টগ্রাম জেলার বাইরে সহজলভ্য করার লক্ষ্যে এ খাতে কর প্রণোদনার প্রস্তাব করছি।
জেলা শহরে শিশু ও নবজাতক, নারী ও মাতৃস্বাস্ত্য, অনকোলজি, ওয়েল বিং ও প্রিভেন্টিভ মেডিসিন ইউনিট থাকা সাপেক্ষ ন্যূনতম ২৫০ শয্যার সাধারণ এবং ন্যূনতম ২০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল স্থাপিত হলে শর্ত সাপেক্ষে ১০ বছরের জন্য কর অব্যাহতির প্রস্তাব করা হয়।