fbpx

১০ লাখ মুসল্লির অংশগ্রহণে হজের আনুষ্ঠানিকতা শুরু

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

প্রায় দুই বছর বন্ধ থাকার পর আবারও লাখো মুসল্লির সমাগমে মুখরিত সৌদি আরবের মক্কা নগরী। সেই পবিত্র নগরীতে শুরু হয়েছে হজের আনুষ্ঠানিকতা। যেখানে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ১০ লাখ মুসল্লি, যার মধ্যে বাংলাদেশি আছেন ৬০ হাজার।

বৃহস্পতিবার (৭ জুলাই) মক্কায় কাবা তাওয়াফের মাধ্যমে হজ কার্যক্রম শুরু হয়। মক্কায় তাপমাত্রা ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস, সেখানে তাই তীব্র গরমের হাত থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই বিভিন্ন জায়গায় তাবু টানিয়েছেন। আরব নিউজের এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

এর আগে বুধবার হাজিরা মক্কায় কাবা শরীফ তাওয়াফ করেন। এদিন রাতে এশার নামাজের পর থেকে জড়ো হতে শুরু করেন কাবা শরিফের ১০ কিলোমিটার দূরে তাবুনগরী মিনায়।

এসময় মক্কা নগরীতে হাজিদের সমবেত কন্ঠে বার বার ধ্বনিত হতে থাকে, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক, লাব্বাইক লা শারিকা লাকা লাব্বাইক, ইন্নাল হামদা ওয়াননি’মাতা লাকা ওয়াল মুলক’। অর্থাৎ ‘আমি হাজির। হে আল্লাহ আমি হাজির, তোমার কোনো শরিক নেই; সব প্রশংসা ও নিয়ামত শুধু তোমারই, সব সাম্রাজ্যও তোমার।’

আর বৃহস্পতিবার সকালে হজযাত্রীরা মিনার উদ্দেশ্য যাত্রা শুরু করেন। গ্রান্ড মসজিদ থেকে মিনার দূরত্ব প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। আগামীকাল শুক্রবার সবাই জড়ো হবেন আরাফাতের ময়দানে, যাকে হজের মূল অনুষ্ঠান বলা হয়। শনিবার সৌদি আরবে ঈদুল আজহার দিন পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে এবারের হজ পর্ব শেষ হবে।

করোনার কারণে গত দুই বছর হজ হয়েছে সীমিত পরিসরে। ২০২০ সালে সৌদি আরবে অবস্থানরত ১০ হাজার বিদেশিকে হজের সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। ২০২১ সালে ৬০ হাজার বিদেশি মুসল্লি হজ পালনের সুযোগ পান। আর ২০২২ সালে এই সংখ্যা ছাড়িয়ে ১০ লাখে পৌঁছেছে।

হজের মূল আনুষ্ঠানিকতা শুরু হবে আরাফাত ময়দানে, তাই শুক্রবার সকালের মধ্যেই সবাই সেখানে হাজির হবেন। মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)’র ঐতিহাসিক বিদায় হজের স্মৃতিজড়িত সেই ময়দানে সবার পরনে থাকবে সেলাইবিহীন সাদা কাপড়। এই কাপড় পরেই আরাফাত ময়দানে তারা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত থাকবেন।

আরাফাত ময়দানের দৈর্ঘ্য প্রায় চার বর্গমাইল। এই বিশাল সমতল মাঠের দক্ষিণ দিকে মক্কা হাদা তায়েফ রিং রোড, উত্তরে সাদ পাহাড়। সেখান থেকে আরাফাত সীমান্ত পশ্চিমে আরও প্রায় পৌনে ১ মাইল বিস্তৃত।

পবিত্র এই ভূমিতে মুসল্লিরা নিজেদের সুবিধাজনক জায়গা বেছে নিয়ে ইবাদত করবেন, হজের খুতবা শুনবেন এবং এই ময়দানেই জোহর ও আসরের নামাজ আদায় করবেন।

মুসলিম ধর্মানুসারীদের বিশ্বাস, আদিপিতা হযরত আদম (আ.) ও মা হাওয়া (আ.) পৃথিবীতে পুনর্মিলনের পর এই আরাফাতের ময়দানে এসে আল্লাহর কাছে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছিলেন। এই ময়দানেই শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ (স.) বিদায় হজের ভাষণ দিয়েছিলেন।

হজের বিধান অনুযায়ী, এই আরাফাতে উপস্থিত না হলে হজের আনুষ্ঠানিকতা পূর্ণাঙ্গ হয় না। তাই হজে এসে যারা অসুস্থ হয়ে পড়েন বা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন, তাদেরও অ্যাম্বুলেন্সে করে আরাফাতের ময়দানে নিয়ে আসা হয়। এ বছর আরাফাতের ময়দানে হজের খুতবা দেবেন মসজিদে নামিরার খতিব মুহাম্মাদ আবদুল করীম আল-ঈসা।

শুক্রবার সন্ধ্যায় আরাফাত থেকে মিনায় ফেরার পথে মুযদালিফায় মুসল্লিরা মাগরিব ও এশার নামাজ পড়বেন। মুযদালিফায় তারা রাত্রিযাপন করবেন ও সেখান থেকে পাথর সংগ্রহ করবেন, যা তারা শয়তানের উদ্দেশ্যে নিক্ষেপ করবেন।

শনিবার সকালে মিনায় পোঁছে সেই পাথর তারা প্রতীকী শয়তানকে লক্ষ্য করে ছুঁড়বেন। পরে পশু কোরবানি দিয়ে ইহরাম ত্যাগ করবেন এবং সবশেষে কাবা শরিফকে বিদায়ী তাওয়াফের মধ্যে দিয়ে শেষ হবে হজের আনুষ্ঠানিকতা।

এবছর সৌদি কর্তৃপক্ষ হজযাত্রীদের চিকিৎসা ও নিরাপত্তায় বিশেষ প্রস্তুতি নিয়েছে। সৌদি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় মক্কা ও মদিনায় ২৩টি হাসপাতাল ও ১৪৭টি স্বাস্থ্যকেন্দ্র প্রস্তুত রেখেছে।

Advertisement
Share.

Leave A Reply