রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে স্থানীয়দের সংঘর্ষের ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে দুদিনের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা স্থগিত ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। শনিবার (১১ মার্চ) রাতে জনসংযোগ দপ্তরের প্রশাসক প্রদীপ কুমার পাণ্ডে স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘আগামী ১২ মার্চ রোববার ও ১৩ মার্চ সোমবার অনিবার্য কারণবশত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ থাকবে। আগামী ১৪ মার্চ মঙ্গলবার থেকে ক্লাস ও পরীক্ষাসমূহ যথারীতি চলবে।’ উপাচার্যের আদেশক্রমে এ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের কথা জানায় জনসংযোগ দপ্তর।
সংঘর্ষের ঘটনায় দুই পক্ষের অন্তত দুই শতাধিক মানুষ আহত হয়েছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে মাথা, হাত-পা’সহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাত নিয়ে চিকিৎসা নিতে আসতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বগুড়া থেকে মোহাম্মদ বাসে চড়ে রাজশাহী আসছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের ২০১৭-১৮ সেশনের শিক্ষার্থী আলামিন আকাশ। বাসে সিটে বসাকে কেন্দ্র করে গাড়ির ড্রাইভার শরিফুল ও সুপারভাইজার রিপনের সঙ্গে তার কথাকাটাকাটি হয়। এ ঘটনায় বাসটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিনোদপুর গেটে পৌঁছলে আবারো ঝামেলা শুরু হয়। তখন স্থানীয় এক দোকানদার এসে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে তর্কে জড়ান। একপর্যায়ে উভয়ের মধ্যে ধাক্কাধাক্কির ঘটনা ঘটে। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং স্থানীয় দোকানদারের সঙ্গে তাদের কথাকাটাকাটি শুরু হয়।
একপর্যায়ে স্থানীয়রা একজোট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালায়। তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরাও পাল্টা ধাওয়া করেন। এ সময় দায়িত্ব পালনকালে বাংলাদেশ প্রতিদিনের বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধিসহ কয়েকজন সাংবাদিকের ওপরও হামলা চালায় স্থানীয়রা। সংঘর্ষ চলাকালে বিনোদপুর গেটে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়কে অবস্থান নিয়ে ক্যাম্পাসের ভেতরে ইটপাটকেল ছোড়ে কয়েকশ স্থানীয়। তাদের ছোড়া ইটে আহত হন শতাধিক শিক্ষার্থী। একসময় বিনোদপুর বাজার রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। আগুন দেয়া হয় বিনোদপুর গেটের সীমানাপ্রাচীর-সংলগ্ন কয়েকটি দোকান ও পুলিশ বক্সেও। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসে শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে পুলিশ। রাত প্রায় ১১টা পর্যন্ত থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে।
