এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের (এডিবি) মতে অর্থনৈতিক করিডরের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বাংলাদেশের। আর এই সুবিধা কাজে লাগানো গেলে ২০৫০ সাল নাগাদ দেশে কর্মসংস্থান হতে পারে ৭ কোটি ১৮ লাখ। পাশাপাশি একই সময়ের মধ্যে দেশের বাণিজ্য সুবিধা বাড়বে ২৮৬ বিলিয়ন ডলার। যা টাকার অঙ্কে ৩১ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা।
‘বাংলাদেশ ইকোনমিক কোরিডর ডেভেলপমেন্ট হাইলাইটস’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে এসব তথ্য তুলে ধরেছে এশিয়ান ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক (এডিবি)। বুধবার রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে এটি প্রকাশ করা হয়।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিব) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন এডিবির সিনিয়র কান্ট্রি স্পেশালিস্ট মি. সুন চ্যাং হোং। আলোচক ছিলেন এডিবির পাবলিক সেক্টর ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড গভর্ন্যান্স ডিরেক্টর সব্যসাচী মিত্র, প্রাণ-আরএফএল’র পরিচালক (অর্থ) উজমা চৌধুরী এবং পলিসি এক্সচেঞ্জের চেয়ারম্যান ড. মাসরুর রিয়াজ। সমাপনী বক্তব্য দেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের নির্বাহী সদস্য অভিজিৎ চৌধুরী।
প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান। বিশেষ অতিথি ছিলেন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) অতিরিক্ত সচিব মোস্তাফিজার রহমান ও বাংলাদেশ ইকোনমিক জোন অথরিটির (বেজা) নির্বাহী চেয়ারম্যান শেখ ইউসুফ হারুন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, যদি করিডর সুবিধা ব্যবহার করা না যায় তাহলে ২০৫০ সালে কর্মসংস্থান হবে ৩ কোটি ১১ লাখ। আর এ সুবিধা কাজে লাগানো গেলে কর্মসংস্থান হবে ৭ কোটি ১৮ লাখ। এছাড়া এ সুবিধা ব্যবহার করা না গেলে ২০২৫ সালে হবে ১ কোটি ৩৪ লাখ, ব্যবহার করা গেলে হবে ১ কোটি ৫৭ লাখ।
২০৩০ সালে সুবিধা ব্যবহার করা না গেলে ১ কোটি ৭০ লাখ হবে, আর ব্যবহার করা গেলে হবে ২ কোটি ৩৪ লাখ কর্মসংস্থান। সুবিধা কাজে না লাগানো গেলে ২০৩৫ সালে কর্মসংস্থান হবে ২ কোটি ১০ লাখ, সুবিধা কাজে লাগালে হবে ৩ কোটি ৪৭ লাখ। এছাড়া ২০৪০ সালে কর্মসংস্থান হবে ২ কোটি ৪৮ লাখ। তবে করিডর সুবিধা কাজে লাগানো গেলে হবে ৪ কোটি ৬২ লাখ।
এমএ মান্নান বলেন, এই করিডরগুলো সারা দেশের উন্নয়নকে একীভূত করবে। এখানে যেমন অর্থনৈতিক উন্নয়ন হবে একইসঙ্গে কর্মক্ষেত্রের সুযোগও বাড়াবে। তবে এজন্য অবকাঠামো উন্নয়নের সঙ্গে দরকার নীতিনির্ধারণী সাপোর্টও। আমরা উন্নয়নে আগ্রহী। তবে এ উন্নয়নে কিছু রাজনৈতিক সামাজিক বাধা রয়েছে। এ বাধাগুলোকে কাটিয়ে উঠতে হবে।
তিনি বলেন, এ করিডরগুলোয় সারা দেশের যুক্ত হওয়ার পেছনে বড় বাধা হবে ঢাকা। এজন্য বাইপাস সড়ক করতে হবে। না হলে ইকোনমিক করিডর ব্যবহারের সুযোগ বাধাগ্রস্ত হবে। আমাদের চারদিকে খুলে কাজ করতে হবে। বাধাগুলো দূর করতে হবে। প্রত্যেক দেশের সঙ্গে প্রত্যেক দেশের ইনফরমাল বর্ডার ট্রেড রয়েছে। আমরা ইনফরমাল বর্ডার ট্রেড করতে চাই না। আমরা আরও উদার হতে চাই। বাংলাদেশ সবার সঙ্গে উদার ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চায়। তবে এর জন্য প্রয়োজন সামাজিক ও রাজনৈতিক স্থীতিশীলতা। যাতে শ্রমিকরা শান্তিতে কাজ করতে পারেন। তাহলেই দেশের উন্নয়ন হবে।