২০২১ সালে ব্যাংকিং খাতে আর্থিক অনিয়ম চিহ্নিত করা হয়েছে ১০ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। ২০১৩ সালে যার পরিমাণ ছিল ৬৫২ কোটি টাকা। সে হিসেবে নয় বছরে এই খাতে অনিয়ম বেড়েছে ১৬ দশমিক ৮৬ গুণ। বাংলাদেশ কম্পট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর প্রতিবেদন এমনটিই দাবি করছে।
তাদের অডিট রিপোর্ট বলছে, সরকারি অর্থের অনিয়মের ৫২ দশমিক ১৮ শতাংশ হচ্ছে শুধু ব্যাংকিং খাতেই। ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এই চার বছরের অডিট রিপোর্টে মোট ৫৯ হাজার ৪৬৬ কোটি টাকার অনিয়ম চিহ্নিত করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি।
রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকে ২০১৮ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৩১ হাজার কোটি টাকার অনিয়ম হয়েছে বলেও দাবি করছে প্রতিষ্ঠানটি।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ২০২১ সালে ব্যাংকিং খাতের অনিয়মের পরিমাণ ১০ হাজার ৯৯৫ কোটি টাকা। ২০১৯ সালে যার পরিমাণ ছিল ৫ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। আর ২০১৮ সালে যা ছিল ৮ হাজার ৮৮৫ কোটি টাকা।
সিএজির প্রতিবেদনে বলা হয়, অস্তিত্বহীন প্রতিষ্ঠান ও ঋণ শোধের যোগ্যতাহীন প্রতিষ্ঠানকে ভুয়া বন্ধকি নিয়ে ঋণ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ভুয়া জমি, সরকারি খাসজমি মর্টগেজ রেখে গ্রাহককে ঋণ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি পর্যাপ্ত জামানত ছাড়া ঋণ বিতরণ, শ্রেণিকৃত দায় থাকার পরও ত্রুটিপূর্ণ সহায়ক জামানতের বিপরীতে এবং গ্রাহকের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও ঋণ দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
সেখানে আরও বলা হয়, অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ খাতে ঋণ ইস্যু ও নিয়ন্ত্রণহীন এলাকার বাইরে তড়িঘড়ি করে ঋণ মঞ্জুর, শাখার আপত্তি উপেক্ষা ও বন্ধকি সম্পত্তি মূল্যায়ন ছাড়া ঋণ ইস্যু, মঞ্জুরি শর্ত অমান্য করে অনিয়মিতভাবে ওডি ঋণ দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, অধিকাংশ অনিয়মের ক্ষেত্রে ব্যাংকের ঋণ বিতরণ নীতিমালা অনুসরণ করা হয়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপন, আর্থিক বিধিবিধান ও সরকার কর্তৃক বিভিন্ন সময়ের আদেশও অমান্য করা হয়েছে।
এই খাতে অ্যানন টেক্স, ক্রিসেন্ট গ্রুপ ও হলমার্ক গ্রুপের কেলেংকারির কথা ভোলার মতো নয়।