সিনিয়র এক ছাত্রকে প্রকাশ্যে থাপ্পড় ও লাঞ্ছনার অভিযোগে দুই ছাত্রীকে সাময়িক বহিষ্কার করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ওই দুই শিক্ষার্থী হলেন- বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃবিজ্ঞান বিভাগের ৪৬তম আবর্তনের সুমাইয়া বিনতে ইকরাম ও আনিকা তাবাসসুম মীম। এরা দুইজনই প্রীতিলতা হলের আবাসিক ছাত্রী।
মঙ্গলবার (২৫ জানুয়ারি) রাত আটটায় অনুষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ের এক জরুরি সিন্ডিকেট সভায় তাদের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ ও সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক রাশেদা আখতার এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ছাত্রকে থাপ্পড় দেওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত সুমাইয়া বিনতে ইকরামকে এক বছরের বহিষ্কার করা হয়েছে। ভুক্তভোগী ছাত্রের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ দেওয়ায় আরেক ছাত্রী আনিকা তাবাসসুম মীমকে ছয় মাসের জন্য বহিষ্কার করা হয়েছে।
বহিষ্কার হওয়া দুই ছাত্রী ক্লাস-পরীক্ষায় অংশগ্রহণ, হলে অবস্থানসহ, পরিবহন ব্যবহার থেকে বিরত থাকবে বলেও জানান তিনি।
এর আগে সোমবার রাত ৮ টার দিকে সরকার ও রাজনীতি বিভাগের ছয় শিক্ষার্থী বটতলার রাস্তা ধরে হাঁটছিলেন। এসময় সুমাইয়া ও তার বান্ধবী আনিকা একই রাস্তা ধরে আসছিলেন। সুমাইয়া ওই ছয় শিক্ষার্থীকে রাস্তা ছেড়ে দিতে বলেন। তখন রাস্তা যথেষ্ট ফাঁকা থাকায় সুমাইয়া ও তার বান্ধবীকে সেই রাস্তা ধরে হাঁটার কথা বলেন। এসময় সুমাইয়া উচ্চবাচ্য শুরু করেন এবং অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। তবে সেখানে কয়েকজন শিক্ষার্থীর হস্তক্ষেপে তখনকার মতো বিষয়টি থেমে যায়। এর কিছুক্ষণ পর সেখানে সুমাইয়ার ছেলেবন্ধু শিহাব খান দিগন্ত সেখানে যান। তিনি ওই ছয়জন শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করেন। এক পর্যায়ে সুমাইয়া পেছন থেকে গিয়ে ওই ছয়জনের মধ্যে একজনের শার্টের কলার ধরে উপস্থিত সবার সামনে থাপ্পড় দেন। তখন উপস্থিত শিক্ষার্থীদের মধ্যে শোরগোল শুরু হয়। অবস্থা বেগতিক দেখে সুমাইয়া ও তার এক বান্ধবী বটতলার একটি দোকানে ঢুকে পড়েন।
পরে বিভিন্ন হলের শিক্ষার্থীরা, শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং নেতা-কর্মীরা সেখানে উপস্থিত হয়। তারা সকলেই হেনস্তাকারীর বিচার দাবি করে।
রাত সাড়ে ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসে উভয় পক্ষই লিখিত বক্তব্য জমা দেন। শিক্ষার্থীরা এসময় অভিযুক্তর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।