মহামারী ও যুদ্ধের প্রভাবে ২০২৩ সালে বিশ্বে দুর্ভিক্ষের যে আভাস মিলেছে, সেটি থেকে বাংলাদেশকে বাঁচাতে উৎপাদন বাড়ানোর পাশপাশি খাবারের অপচয় না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সোমবার (১৭ অক্টোবর) রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে ‘বিশ্ব খাদ্য দিবস’ উপলক্ষে এক অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমি আবারো অনুরোধ করছি, কোন খাদ্যের অপচয় নয়। খাদ্য উৎপাদন বাড়ান। যার যেখানে যতটুকু জমি আছে বাড়ান। সারা বিশ্বে যে দুর্যোগের ঘনঘটার আভাস আমরা পাচ্ছি, তার থেকে বাংলাদেশকে সুরক্ষিত করুন।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের খাবার নিজেরা উৎপাদন করার চেষ্টা করবেন, যাতে পরিবেশের উপর চাপ কমে, বাজারের উপর চাপ কমে এবং সকলে মিলে আমরা কাজ করলে অবশ্যই আমাদের বাংলাদেশের কোনো রকম আঘাত আসবে না। আমি বিশ্বাস করি সকলের প্রচেষ্টায় এটা করা সম্ভব।’
কৃষি প্রক্রিয়াজাত শিল্প গড়ে তোলায় সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘একশ শিল্পাঞ্চল, সেখানে সেই ব্যবস্থাটা আমরা নেব। আমরা শুধু নিজেরাই গ্রহণ করব না, আমরা প্রক্রিয়াজাত করে এটা (কৃষি পণ্য) রপ্তানি করে অনেক দেশের খাদ্য ঘাটতিতে সহায়তা যাতে করতে পারি, সেটা মাথায় রেখে আমাদের সকল পদক্ষেপ নিতে হবে।’
তার সরকার পুষ্টিকর খাদ্য, সুষম খাদ্য, নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে চায়, যা কেবল দেশে নয়, পুরো বিশ্বের মানুষেরই প্রয়োজন। কাজেই যত উৎপাদন বৃদ্ধি করতে পারি, আর যত বেশি খাদ্য চাহিদা মেটাতে পারি, ততই আমাদের মঙ্গল হবে বলে আমি বিশ্বাস করি, জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ‘এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘আমার মাটির সঙ্গে, আমার মানুষের সঙ্গে আমার কালচারের সঙ্গে, আমার ব্যাকগ্রাউন্ডের সঙ্গে, আমার ইতিহাসের সঙ্গে যুক্ত করেই আমার ইকোনমিক সিস্টেম গড়তে হবে। আমিও এটা বিশ্বাস করি, যে আমাদের মাটি ও মানুষ এটাই আমাদের লক্ষ্য।’
কৃষিবিদদের ধন্যবাদ জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘তাদের সাথে আমাদের কৃষকরাও, তাদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা জানাই এবং ধন্যবাদ জানাই যে তারা আজকে আমাদের এই খাদ্যের জোগান দিচ্ছে। কাজেই তাদের সম্মান করা, তাদের সহযোগিতা করা এটা একান্তভাবে অপরিহার্য।’
প্রবাসী বাংলাদেশিদের উদ্দেশে শেখ হাসিনা বলেন, ‘নিজের দেশ, গ্রাম, মাটি– তাকে ভুলে যাবেন না। সেদিকে একটু নজর দেন। নিজের যদি কোনো পতিত জমি থাকে, তাহলে সেটাও চাষের আওতায় নিয়ে আসেন। তাহলে দেখবেন আমাদের দেশ কখনো পিছিয়ে থাকবে না।’