প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র [টিএসসি] ভবনটিকে নতুন রুপে দেখতে চান বলে ঘোষণা দিয়েছিলেন। এরপর থেকেই ভবনটি ভাঙা হবে বলে গুঞ্জ শুরু হয়।
প্রধানমন্ত্রীর ওই বক্তব্যের পর টিএসসি ভবন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে চলে পক্ষে বিপক্ষে আলোচনা। আর সেই আলোচনার অবসান ঘটাতে সার্বিক উন্নয়ন ও সম্প্রসারণের বিষয়ে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মতামত জানতে চেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
বিষয়টি নিয়ে বিবিএস বাংলাও কথা বলেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থীর সাথে।
শিক্ষার্থীদের অনেকেই এই পুরাতন স্থাপত্যটি ভাঙার বিপক্ষে কথা বলেন। এ সময় টিএসসিকে নিয়ে জড়িয়ে থাকা স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে আবেগ আপ্লুত হয়ে পড়েন অনেকে। কেউ কেউ বলেন, টিএসসির এই ভবনটা না হয় তাদের জাদুঘর হিসেবে থাক, বাইরে থেকে নতুন করা হলেও ভেতরের টিএসসিকে বর্তমান রূপেই দেখতে চান শিক্ষার্থীরা।
১৯৬৪ সালে নির্মিত ভবনটির নকশা করেছিলেন ডক্সিয়াডিস। তিনি বাংলার গ্রামীণ বসতির চিরায়ত ঐতিহ্যে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের সংস্কৃতি ও আবহাওয়ার বিষয়টি মাথায় রেখেই টিএসসির নকশা করেছিলেন।
তবে বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র–শিক্ষকের সংখ্যা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতে টিএসসির অবকাঠামো বাড়ানোর প্রয়োজনে বলে মনে করছেন ঢাবি কর্তৃপক্ষ।
এ বিষয়ে শুধু বর্তমান নয়, কথা বলেছি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী সিআইডির এসপি রেজাউল মাসুদের সাথে। টিএসসি নিয়ে তারও আছে অনেক স্মৃতি, আছে হারানোর আবেগ।
তিনি জানান, টিএসসি ভাঙা হলে দহন হবে সব শিক্ষার্থীর মনে, তবে উন্নয়নের স্বার্থে তো কতো কিছুই বদলায় তাই পরিবর্তনও প্রয়োজন বলে মনে করেন এসপি মাসুদ।
পরিকল্পনা, নান্দনিকতা ও ব্যবহারিক দিক বিচারে এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম প্রধান জনসমাগমের জায়গা। সেই স্থানে টিএসসি ভেঙে বহুতল ভবন করার সিদ্ধান্ত অনেকের মনেই দাঁগ কাটছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা মনে করছেন আধুনিকায়নের চাপে এলাকাটি তার প্রাণের স্পন্দন হারাবে, একই সঙ্গে বিলীন হয়ে যাবে টিএসসির সঙ্গে জড়িত ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
তবে ষাটের দশকে নির্মিত টিএসসির দৃষ্টিনন্দন স্থাপনাটির নতুন রূপ কেমন হবে, সে বিষয়ে এখনো কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।
টিএসসি নিয়ে বিবিএস বাংলার বিশেষ প্রতিবেদন দেখে নিতে পারেন