২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ‘International Competition: Innovation in Moving Images’ বিভাগে যৌথভাবে সেরা ছবির পুরষ্কার ‘গোল্ডেন রয়েল বেঙ্গল টাইগার’ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশের সিনেমা ‘কূড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’। সিনেমাটির নির্মাতা ও প্রযোজক মুহাম্মদ কাইয়ুম। ‘কূড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ সিনেমার সাথে যৌথভাবে উৎসবের সেরা ছবির পুরষ্কার পেয়েছে স্পেনের সিনেমা ‘আপন এন্ট্রি’।
খবরটি নির্মাতা নিজেই জানিয়েছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। নির্মাতা পোস্টে লিখেছেন, ‘যৌথভাবে শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র! এই পুরষ্কার প্রিয় বন্ধু, প্রয়াত গাজী মাহতাব হাসান এবং সকল কলাকুশলী ও অভিনয় শিল্পীদের প্রতি উৎসর্গ করছি।‘
উৎসবের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বিভাগে একমাত্র বাংলাদেশি সিনেমা হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিল ‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’। ছবিটি এমনিতেও প্রশংসা কুড়িয়েছে কলকাতার দর্শক মহলে। ছবির কাহিনি ও নির্মাণ নিয়ে ইতিবাচক আলোচনা করেছেন কলকাতার দর্শক।
‘কুড়া পক্ষীর শূন্যে উড়া’ ছবিটির কাহিনি আবর্তিত হয়েছে হাওরের ধান কাটা কৃষক পরিবারের জীবনসংগ্রাম নিয়ে। হাওরের দরিদ্র কৃষকদের জীবিকার লড়াই নিয়ে।
ছবিটি বাংলাদেশে প্রথম মুক্তি পায় গত ৪ নভেম্বর। এটি পরিচালকেরও প্রথম ছবি।
ছবিটির কেন্দ্রীয় চরিত্রে অভিনয় করেছেন উজ্জ্বল কবির হিমু। তিনি এমন একটি খবরে দারুণ খুশি। হিমু বলেন, আসলে এত এত অবহেলা করা হয়েছে সিনেমাটি নিয়ে। যারা কাছের তারাও অনেক নেতিবাচক কথা বলেছেন। হল পাওয়া যাচ্ছিলো না। সবকিছু মিলিয়ে আমাদের সংগ্রাম করতে হয়েছে সবাইকে। এখন দেশের জন্য সিনেমাটি এত ভালো একটা খবর বয়ে নিয়ে আসলো, খুব ভালো লাগছে। এটা শুধু সিনেমার অভিনেতা-অভিনেত্রীদের জন্যই নয়, এটি পুরো দেশের জন্য গর্বের।’
ধ্রুপদি চিত্রলোক নিবেদিত পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রটিতে উজ্জ্বল কবির হিমু ছাড়াও অভিনয় করেছেন জয়িতা মহলানবিশ, সুমী ইসলাম, সামিয়া আখতার, বাদল শহীদ, মাহমুদ আলম ও আবুল কালাম আজাদ। সংগীতায়োজন করেছেন সাত্যকি ব্যানার্জি।
১৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া ২৮তম কলকাতা আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবের উদ্বোধন করেন অমিতাভ বচ্চন। অতিথি হিসেবে আরও ছিলেন জয়া বচ্চন, শাহরুখ খান, শত্রুঘ্ন সিনহা, রানী মুখার্জী সহ পশ্চিম বাংলার গুণীজনরা। এমনকি মঞ্চে ছিলেন বাংলাদেশের চঞ্চল চৌধুরী। পুরষ্কার ঘোষণার মধ্য দিয়ে পর্দা নামলো উৎসবের।
উল্লেখ্য, ব্যবসায়িক সাফল্য নিয়ে শঙ্কা থেকে কোনো প্রেক্ষাগৃহ সিনেমাটি প্রদর্শনে আগ্রহী হচ্ছিল না। এতে হতাশায় ডুবেছিলেন নির্মাতা মুহাম্মদ কাইউম। পরবর্তীতে ‘স্টার সিনেপ্লেক্স’ সিনেমাটি প্রদর্শনে রাজি হয়।
১১৭ মিনিটের এই সিনেমাটি বসুন্ধরা সিটির স্টার সিনেপ্লেক্সে প্রদর্শনের পর নারায়ণগঞ্জ ও চট্টগ্রামেও দেখানো হয়েছে।