রংপুরের আসমা, কাজ হারিয়ে গ্রামে চলে গিয়েছিলেন। জমানো টাকা শেষ। দুই চোখে অন্ধকার। কোলের শিশুর ক্ষুধার দাবি মেটাতে আবার ধরেছেন শহরের পথ। যদিও জানেন না এই শহরে কীভাবে মিলবে কাজের সুযোগ ?
তবুও সরকারের কঠোর বিধিনিষেধ উপেক্ষা করে কোলের শিশুকে নিয়ে ফিরলেন ঢাকায়। গ্রামে না খেয়ে থাকার চেয়ে শহরে একটা কাজ জুটে যাবে সেই আশায় আছমা এসছেন ঢাকায়। লকডাউনের কারণে রংপুর থেকে পণ্যবাহী ট্রাকে করে ২ হাজার টাকা ভাড়া দিয়ে ঢাকায় এসেছেন তিনি।
চলছে কঠোর লকডাউন, পুলিশের কড়া টহল। আছমার মতোই ওসবের ধার ধারছেনা কেউ। দেশের নানা জেলা থেকে রাজধানীতে ঢুকছে নানা পেশার মানুষ। সড়কগুলোতে ব্যক্তিগত গাড়ির চাপতো আছেই। ঢাকায় ফেরা মানুষ বলছেন চাকরি বাঁচাতেই নিরুপায় হয়ে পথ পাড়ি দিয়েছেন।
ঢাকায় আসতে অনেক বেগ পেতে হয়েছে তাদের। কখনো সিএনজি কখনো রিকশা আবার কখনো পায়ে হেঁটেই ঢাকায় ফিরেছেন কর্মজীবী মানুষ।
ঢাকায় ফিরছে মানুষ শুধু এমন নয়। গ্রামে ফিরে যাওয়ার মিছিলও বেশ লম্বা। রাজধানীতে বেকার বসে থেকে ক্ষুধার জ্বালায় মরতে চাননা এদের অনেকে।
অনিক গাজিপুরে একটি কারখানায় কাজ করেন, তাকে বলা হয়েছিল ঈদের পরে অফিস খোলা হবে। সেই আশায় ঈদের পর দিন ঢাকায় এসেছিলেন। কিন্তু এখন অফিস বন্ধ থাকায় অনিকের ঢাকায় থাকাই দায় হয়ে গেছে। তাই আবার বাধ্য হয়ে বেশি খরচে ফিরছেন নিজ গ্রাম পাবনায়। তার মতো অনেকেই ইনকাম না থাকায় খাওয়া বা বাসা ভাড়া দেওয়ার চিন্তায় ফিরে যাচ্ছেন গ্রামে।
রাজধানীতে আশা-যাওয়ার মিছিলের বড় একটা অংশ প্রবাসী শ্রমিক। অনেকের ভ্যাকসিন নিতে ঢাকায় আসতে হয়, প্রয়োজনে ফিরতে হয় গ্রামে। এই আসা-যাওয়া করতে গিয়ে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে দাবি দেশে আটকা পড়া প্রবাসীদের।
লকডাউন কার্যকরী করার ক্ষেত্রে চলমান জটিলতায় কতটা বেকায়দায় আছে আইন-শৃঙ্খলাবাহিনী?
কার্যকরী লকডাউনের অভাবে, করোনা সংক্রমণ বাড়ছেই, রেকর্ড মৃত্যু হচ্ছে দিনের পর দিন। কার্যকরী সমাধান কবে, কীভাবে হবে, জানেনা কেউ।