ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ উপলক্ষে প্রণয়ন করা মাস্টারপ্ল্যান দেখেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আর তা দেখে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। পাশাপাশি, সরকারপ্রধান এই মাস্টারপ্ল্যানের কিছু জায়গায় সংযোজন ও দ্রুত বাস্তবায়নের তাগিদ দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
গতকাল সোমবার (১১ অক্টোবর) প্রধানমন্ত্রীর কাছে মাস্টারপ্ল্যানটি উপস্থাপন করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান। পরে তিনি সংবাদমাধ্যমকে এসব তথ্য জানান।
উপাচার্য জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তার মাতৃসম বিশ্ববিদ্যালয়ের মাস্টারপ্ল্যান দীর্ঘসময় ও আগ্রহ নিয়ে দেখেছেন। তিনি কিছু অবজারভেশন দিয়েছেন, সেগুলো সমন্বয় করতে বলেছেন। সবমিলিয়ে মাস্টারপ্ল্যানটি দেখে তিনি এতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন এবং ধন্যবাদ দিয়েছেন। পাশাপাশি, যত দ্রুত এই কাজগুলো পর্যায়ক্রমে করা যায়, সে বিষয়ে ভাবার জন্য তাগিদ দিয়েছেন। যথাসময়ে গুণগতমান বজায় রেখে কাজ করারও নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এর আগে, উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সভাপতিত্বে ২০২০ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের সভায় এই মাস্টারপ্ল্যান অনুমোদন করা হয়।
মাস্টারপ্ল্যানের প্রাথমিক খসড়া বিশ্লেষণে দেখা গেছে, তিন ধাপে ৯৭টি ভবন নির্মাণ করা হবে। এর মধ্যে একাডেমিক ভবন থাকবে ১৭টি, ছাত্রী হল ৮টি, ছাত্রদের ১৬টি, হাউজ টিউটর ভবন ২২টি, শিক্ষক ও অফিসারদের জন্য ১২টি, স্টাফদের জন্য ৯টি ভবন। অন্যান্য ক্যাটাগরিতে থাকছে আরও ১৩টি ভবন।
এছাড়া, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের মূল বেদি ঠিক রেখে পুরো এলাকাকে নতুন করে সাজানো হবে। মূল বেদির পেছনে থাকবে গাছের বেস্টনী আর দুই পাশে দু’টি সবুজ চত্বর। সামনের দিকে থাকবে চারটি চত্বর। এরপর ঢাকা মেডিকেলের দিক থেকে যে রাস্তাটা শিববাড়ির দিকে গেছে, তাতে পুরোপুরি যান চলাচল বন্ধ থাকবে। একইসাথে, শহীদ মিনার থেকে পলাশীর দিকে যাওয়ার রাস্তাও বন্ধ থাকবে। এ দুই রাস্তা প্রাইভেট সড়ক হিসেবে ব্যবহৃত হবে। কোন ধরনের যান চলাচল থাকবে না।
জগন্নাথ হল আর শিববাড়ির রাস্তার মাঝখানে থাকা শিক্ষকদের আবাসিক ভবনটি ভেঙে ফেলা হবে। সেখানে সবুজের মিশেলে থাকবে দৃষ্টিনন্দন চত্বর। যেখানে বিভিন্ন অনুষ্ঠান, বিশিষ্টজনদের মৃত্যুর পর শ্রদ্ধা নিবেদন ও গল্প বা আড্ডার জন্য নির্ধারিত থাকবে। এর বিপরীতে থাকা বঙ্গবন্ধু টাওয়ারের পাশে পুকুরটিকে দৃষ্টিনন্দন লেকে পরিণত করা হবে, যার মধ্যে থাকবে ঝরনা।
ঢাকা মেডিকেলের দিকে যেতে যে রাস্তা, তা বন্ধ থাকবে। শুধুমাত্র বিশেষ অনুষ্ঠানের দিন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী প্রবেশের জন্য সে রাস্তা খোলার ব্যবস্থা থাকবে। এছাড়া, আইন অনুষদের জন্য প্রস্তাবিত নতুন ভবনের দেওয়ালে থাকবে ডিজিটাল স্ক্রিন।
ছাত্রীদের জন্য আলাদা খেলার মাঠ, যানজট নিরসনে পাবলিক প্রাইভেট সড়ক, টানেল, লাইব্রেরি, সাইকেল লেন, সবুজের পরিমাণ বাড়ানোসহ নানা ধরনের বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে এই মাস্টারপ্ল্যানের মধ্যে।