ঢাকাই সিনেমায় ভিলেন চরিত্রে অভিনয় করে যেসব অভিনেতারা দর্শকপ্রিয়তা পেয়েছেন, নাসির খান তাদের মধ্যে একজন। আশির দশকে সিনেমার জগতে পা রাখেন। আমৃত্যু তিনি সিনেমার সাথেই ছিলেন।
নাসির খান ১৯৫৯ সালের ১৭ সেপ্টেম্বর বরিশালের অন্তর্গত বর্তমানে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার রাজাপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পড়াশোনা করেছেন জগন্নাথ কলেজে, হিসাববিজ্ঞানে এম কম। জগন্নাথ কলেজের ছাত্র সংসদের সাংস্কৃতিক সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।
কলেজে থাকাকালীন অভিনয়ের প্রতি ঝোঁক তৈরি হয়। যাতায়াত শুরু করেন মঞ্চে। সেখান থেকেই সিনেমায় নাম লেখান।
প্রথম সিনেমা ‘চোর’ মুক্তি পায় ১৯৮৫ সালে। নিজেকে খল চরিত্রে জনপ্রিয় করে তোলেন এই অভিনেতা। নিজের অভিনয় গুণে দর্শকের হৃদয়ে আজও অমলিন নাসির খান।
দুর্দান্ত একজন অভিনেতা না হলে হুমায়ুন ফরীদি, এটিএম শামসুজ্জামান, রাজিব, আহমেদ শরীফ, সাদেক বাচ্চুদের মতো খলনায়কদের ভিড়ে নিজেকে আলাদাভাবে নিজেকে চেনাতে পারতেন না।
বেদের মেয়ে জোসনা, বিক্ষোভ, অন্তরে অন্তরে, দেন মোহর, মায়ের অধিকার, স্বপ্নের নায়ক, এই ঘর এই সংসারসহ অসংখ্য জনপ্রিয় সিনেমার অভিনেতা নাসির।
১৯৯৭ সালে নাসির খান পরিচালিত দুটি সিনেমা মুক্তি পায়। একটা প্রয়াত নায়ক সালমান শাহ অভিনীত ‘স্বপ্নের নায়ক’ এবং ইলিয়াস কাঞ্চন অভিনীত ‘একজন বিদ্রোহী’।
অভিনয়, পরিচালনার পাশাপাশি বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সহ-সভাপতির দায়িত্ব পালন করেছেন এই অভিনেতা। সর্বাধিক ভোটে নির্বাচিত সদস্যও ছিলেন দীর্ঘদিন।
২০০৭ সালের ১২ জানুয়ারি অকালেই না ফেরার দেশে পাড়ি জমান নাসির খান। জীবদ্দশায় তেমন কোনো সম্মাননা পাননি এই অভিনেতা। তবে বাংলা সিনেমার দর্শক তাকে আজও মনে রেখেছে। একজন অভিনেতার জন্য এর চেয়ে আর বড় সম্মাননা কী হতে পারে।