শীত মৌসুমে সমুদ্র শান্ত থাকে। তাই সেই মৌসুমে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে সি-ক্রুজ চালু হওয়ার সম্ভাবনার কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বুধবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) সকালে গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করেন বাংলাদেশে নব নিযুক্ত মালদ্বীপের হাইকমিশনার শিরুজিমাথ সামির। এসময় প্রধানমন্ত্রী গভীর সমুদ্রে মৎস সংগ্রহে মালদ্বীপের সাথে বাংলাদেশের অভিজ্ঞতা ও সহযোগিতা বিনিময়ের উপর গুরুত্বারোপ করে এই সম্ভাবনার কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রীর উপ-প্রেস সচিব হাসান জাহিদ তুষার পরে সাংবাদিকদের কাছে বিষয়টি তুলে ধরেন।
উপ-প্রেস সচিব জানান, প্রধানমন্ত্রী এ সাক্ষাতে মালদ্বীপে বসবাসরত বাংলাদেশী শ্রমিকদের যেন করোনা টিকা দেওয়া হয় সে বিষয়ে অনুরোধ করেন। এর প্রেক্ষিতে, হাইকমিশনার মালদ্বীপের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশী শ্রমিকরা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছেন উল্লেখ করে বলেন, তার সরকার সেখানে কর্মরত শ্রমিকদের টিকা দেওয়া শুরু করতে যাচ্ছেন।
আলোচনায় বাংলাদেশে বসবাসরত মালদ্বীপের নাগরিকদের কথা তুলে ধরে হাইকমিশনার বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় মালদ্বীপের শিক্ষার্থীরা মেডিকেল কলেজে লেখাপড়া করছে। এর প্রেক্ষিতে শেখ হাসিনা বলেন, প্রথমে শিক্ষকদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে শিক্ষার্থীদেরকেও টিকা দেওয়া হবে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এ সময় মালদ্বীপের আরো বেশি শিক্ষার্থীকে বাংলাদেশে পড়াশোনার আহ্বান জানালে মালদ্বীপের হাইকমিশনারও বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের সেখানে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যেহেতু মালদ্বীপ পর্যটনে ভালো, তাই বাংলাদেশের শিক্ষার্থীরা সেখানে পর্যটন বিষয়ে পড়াশোনা করতে যেতে পারে।
এ সময় বাংলাদেশের সাথে বাণিজ্য বাড়ানোর আগ্রহের কথা জানিয়ে মালদ্বীপের হাইকমিশনার বলেন, মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির বাংলাদেশের সূ্বর্ণ জয়ন্তিতে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা। সে সময় এ বিষয়ে একটি সমঝোতা স্মারক সই হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
মালদ্বীপের রাজধানী মালে আইল্যান্ডের পাশে একটি নতুন শহর গড়ে তোলা হচ্ছে জানিয়ে হাইকমিশনার সেখানে বাংলাদেশকে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান। এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিশারিজ ছাড়াও বাংলাদেশের কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য, চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রয়েছে। এগুলোর পাশাপাশি সিরামিক, ওষুধ, তথ্য প্রযুক্তি খাতেও মালদ্বীপ বিনিয়োগ করতে পারে।
শিরুজিমাথ সামির এসময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। পাশাপাশি তিনি রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তরকে ‘খুবই ভালো উদ্যোগ’ বলেও উল্লেখ করেন। এছাড়া, করোনা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে শেখ হাসিনার ভূমিকা ও বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করেন তিনি।
করোনার পরিস্থিতি মোকাবেলায় মালদ্বীপকে ১শ’ মেট্রিক টন খাদ্য সামগ্রী, ওষুধ ও চিকিৎসা সরঞ্জামাদি নৌ-বাহিনীর জাহাজের মাধমে পাঠিয়েছে বাংলাদেশ সরকার তার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে হাইকমিশনার বলেন, খুব কঠিন সময়ে মালদ্বীপকে অনুদান দিয়েছিল বাংলাদেশ।
এ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা হাইকমিশনারের মাধ্যমে শুভেচ্ছা জানান মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টকে। গণভবনের এই সাক্ষাতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সচিব মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল নকিব আহমেদ চৌধুরীসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।