১৯০০ সালের এই দিনে (১ ডিসেম্বর) জন্মগ্রহণ করেন এ জনপদের বরেণ্য বিজ্ঞানী ড. মুহাম্মাদ কুদরাত-ই-খুদা । তিনি ছিলেন একাধারে রসায়নবিদ, গ্রন্থকার এবং শিক্ষাবিদ। বাংলাদেশের মরচে ধরা শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন এবং একটি স্বাধীন সার্বভৌম শিক্ষাব্যবস্থা প্রণয়ন করতে প্রাণান্ত ছিলেন এই বিজ্ঞানী। নিজ কীর্তিগুণে ১৯৭৬ সালে লাভ করেন একুশে পদক।
বিজ্ঞানী মুহাম্মাদ কুদরাত-ই-খুদা বাংলা ভাষায় বিজ্ঞানচর্চাকে জনপ্রিয় করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখেন। মাতৃভাষা বাংলায় তাঁর রচিত অসংখ্য বিজ্ঞান প্রযুক্তি বিষয়ক গ্রন্থ রয়েছে ।যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য বিজ্ঞানের সরস কাহিনী, বিজ্ঞানের বিচিত্র কাহিনী, বিজ্ঞানের সূচনা, জৈব রসায়ন (চার খন্ড), পূর্ব পাকিস্তানের শিল্প সম্ভাবনা, পরমাণু পরিচিতি এবং বিজ্ঞানের পহেলা কথা ইত্যাদি । বিজ্ঞান চর্চার পাশাপাশি স্বাধীনতা আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন এই বিজ্ঞানী।
জৈব রসায়ন নিয়ে গবেষণা করেছেন তিনি। আগ্রহী ছিলেন পাট, লবণ, কাঠকয়লা, মৃত্তিকা ও খনিজ পদার্থের ওপর গবেষণাকার্য পরিচালনায়। গাছ-গাছড়া থেকে জৈব রাসায়নিক উপাদান নিষ্কাশনে সক্ষম হন তিনি। যা ঔষধ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে এখন।তাঁর সবচেয়ে বড় বৈজ্ঞানিক অবদান বলা যায় পাটকাঠি থেকে পারটেক্স বোর্ড উৎপাদন। এছাড়া আখের রস ও গুড় থেকে মল্ট ভিনেগার, পাট ও পাটকাঠি থেকে রেয়ন এবং পাটকাঠি থেকে কাগজ তৈরি তাঁর উল্লেখযোগ্য বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবন। এই অক্লান্ত বিজ্ঞানী ও তাঁর সহকর্মিবৃন্দ ১৮টি বৈজ্ঞানিক পেটেন্ট এর অধিকারী ছিলেন।
ড. মুহাম্মাদ কুদরাত-ই-খুদা ১৯৭৭ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকায় মৃত্যুবরণ করেন। জন্মদিনে এই মহান বিজ্ঞান সাধকের প্রতি অজর শ্রদ্ধা।