হঠাৎ করেই অস্ট্রেলিয়া জুড়ে হাজার হাজার টন আঙুর ধ্বংস করে ফেলা হচ্ছে। এর কারন হিসেবে বলা হচ্ছে, অধিক ফলনে আঙুরের দাম কমে গেছে। তাছাড়া বিশ্বজুড়ে কমছে মদের চাহিদাও। এতে হুমকিতে পড়েছে আঙুর চাষী ও মদ প্রস্তুতকারকদের জীবিকা। ফলে উৎপাদনের রাশ টেনে ধরতে চাষীরা ভেঙে ফেলছেন আঙুরক্ষেত। এতে হাজার হাজার টন আঙুর ধ্বংশ হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে মদের চাহিদা কমতে থাকায় অস্ট্রেলিয়া বিশেষভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিশেষত, সস্তা লাল মদের (রেড ওয়াইন) চাহিদা দ্রুত কমায় সমস্যা দেখা দিয়েছে। কারণ, অস্ট্রেলিয়ায় লাল মদই বেশি তৈরি হয়।
সাম্প্রতিক কয়েক বছরে চীনের বাজারের ওপরই অস্ট্রেলিয়ার মদ সবচেয়ে বেশি নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে রাজনৈতিক বিরোধের কারণে চীন ২০২০ সালে মদ আমদানি বন্ধ করায় বিপত্তি দেখা দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়া বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম ওয়াইন রপ্তানিকারক দেশ। ২০২৩ সালের মধ্যভাগে দেশটিতে ২০০ কোটি লিটারের বেশি মদ ছিল। অর্থাৎ, প্রায় দুই বছরের উৎপাদন মজুত ছিল। এ পরিস্থিতিতে কিছু মদ নষ্ট হচ্ছে। অনেক মদ উৎপাদকই যে কোনও দামে বাজারে মদ ছেড়ে দিতে উদ্যত হচ্ছেন।
ট্রেজারি ওয়াইনস ও কার্লাইল গ্রুপের মতো মদ প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠানগুলো এখন দামী মদ উৎপাদনে জোর দিয়েছেন। কারণ,দামী মদই বিক্রি হচ্ছে ভাল। ফলে সস্তা লাল মদের আঙুর জোগানদাতা চাষিরা বিপত্তিতে পড়েছেন। গাছে শুকিয়ে যাওয়া আঙুর দিনের পর দিন বাড়ছেই।
অস্ট্রেলিয়ার ক্ষেতে স্তুপাকারে পড়ে থাকা বিপুল পরিমাণ আঙুর তুলে পরিস্কার করাটাও এখন কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ্রিফিথ অঞ্চলে প্রায় ১১ লাখ আঙুরগাছের অবশেষ রয়েছে। যতদূর চোখ যায় স্তুপাকারে পড়ে থাকতে দেখা যাবে এই অবশেষ।
এ পদক্ষেপ নেওয়া হলে ১২ হাজার হেক্টর এলাকাজুড়ে ধ্বংস হবে ২ কোটিরও বেশি আঙুরক্ষেত; যা অস্ট্রেলিয়ার মোট আঙুরক্ষেতের প্রায় ৮ শতাংশ। ওয়াইন অস্ট্রেলিয়ার হিসাব অনুযায়ী এই পরিসংখ্যান দিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
কেবল অস্ট্রেলিয়াই নয়; চিলি, ফ্রান্স এবং যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশও আঙুরের বাড়তি উৎপাদনে ক্ষতির শিকার হচ্ছে। এই দেশগুলোও হাজার হাজার আঙুরক্ষেত ধ্বংস করছে।