fbpx

আগস্টে সড়ক দুর্ঘটনায় মোট নিহত ৫১৯

Pinterest LinkedIn Tumblr +
Advertisement

২০২২ সালের আগস্ট মাসে সারাদেশে ৪৫৮টি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। এই দুর্ঘটনায় মোট নিহত হয়েছেন ৫১৯ জন, আহত ৯৬১ জন। নিহতদের মধ্যে নারী ৬৪ ও শিশু ৬৯ জন। এই দুর্ঘটনার মধ্যে মোটরসাইকেল দুর্ঘটনা ঘটেছে ১৮৩টি। যেখানে প্রাণ হারিয়েছেন ১৭২ জন, যা মোট নিহত মানুষের ৩৩ দশমিক ১৪ শতাংশ। শনিবার (৩ আগস্ট) রোড সেফটি ফাউন্ডেশনের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা বলা হয়েছে।

সংস্থাটি ৯টি জাতীয় দৈনিক, ৭টি অনলাইন নিউজ পোর্টাল এবং ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমের তথ্যের ভিত্তিতে এ প্রতিবেদন তৈরি করেছে।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, মোটরসাইকেল দুর্ঘটনার হার ৩৯ দশমকি ৯৫। দুর্ঘটনায় ১০৯ জন পথচারী নিহত হয়েছেন, যা মোট নিহত মানুষের ২১ শতাংশ। যানবাহনের চালক ও সহকারী নিহত হয়েছেন ৯৪ জন, অর্থাৎ ১৮ দশমিক ১১ শতাংশ। আগস্টে ১১টি নৌ দুর্ঘটনায় ৮ জন নিহত হয়েছেন; নিখোঁজ ৬ জন। ২৩টি রেলপথ দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ৯ জন আহত হয়েছেন।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, মোটরসাইকেল চালক ও আরোহী ১৭২ জন (৩৩.১৪%), বাসযাত্রী ২১ (৭.০৪%), ট্রাক-কাভার্ডভ্যান-পিকআপ-ট্রলি-লরির আরোহী ৪৫ (৮.৬৭%), মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার-জিপের যাত্রী ২৯ (৫.৫৮%), থ্রি-হুইলারের যাত্রী (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-হিউম্যান হলার) ১০১ (১৯.৪৬%), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহনের যাত্রী (নছিমন-ভটভটি-মাহিন্দ্র-টমটম-ইট ভাঙার মেশিন) ২৩ (৪.৪৩%) এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল ভ্যানের আরোহী ১৯ জন (৩.৬৬%) নিহত হয়েছেন গত মাসে।

সংস্থাটির পর্যবেক্ষণ ও বিশ্লেষণ বলছে, দুর্ঘটনাগুলোর মধ্যে ১৮৭টি (৪০.৮২%) জাতীয় মহাসড়কে, ১৫২টি (৩৩.১৮%) আঞ্চলিক সড়কে, ৭৯টি (১৭.২৪%) গ্রামীণ সড়কে, ৩১টি (৭.৭৬%) শহরের সড়কে এবং অন্যান্য স্থানে ৯টি (১.৯৬%) সংঘটিত হয়েছে। এর মধ্যে ৭২টি (১৫.৭২%) মুখোমুখি সংঘর্ষ, ২১১টি (৪৬.০৬%) নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে, ১১৩টি (২৪.৬৭%) পথচারীকে চাপা বা ধাক্কা দেওয়া, ৪৬টি (১০.০৪%) যানবাহনের পেছনে আঘাত করা এবং ১৬টি (৩.৪৯%) অন্যান্য কারণে ঘটেছে।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের মধ্যে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান-পিকআপ ভ্যান-প্রিজন ভ্যান ২৩ দশমিক ৭৩ শতাংশ, ট্রাক্টর-ট্রলি-লরি ৩ দশমিক ৫৪, মাইক্রোবাস-প্রাইভেট কার-অ্যাম্বুলেন্স-জিপ ৫ দশমিক ১৮, যাত্রীবাহী বাস ১৪ দশমিক ৭৩, মোটরসাইকেল ২৬ দশমিক ৪৬, থ্রি-হুইলার (ইজিবাইক-সিএনজিচালিত অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-হিউম্যান হলার) ১৭ দশমিক ৮৭, স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন (নছিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র-ইট ভাঙার মেশিন) ৫ দশমিক ৩২ এবং বাইসাইকেল-প্যাডেল রিকশা-প্যাডেল ভ্যান ৩ দশমিক ১৩ শতাংশ।

দুর্ঘটনায় সম্পৃক্ত যানবাহনের সংখ্যা ৭৩৩। এর মধ্যে ট্রাক ১২২, বাস ১০৮, কাভার্ড ভ্যান ২৩, পিকআপ ২৮, প্রিজন ভ্যান ১, ট্রলি ৮, লরি ১৪, ট্রাক্টর ৪, মাইক্রোবাস ৭, প্রাইভেট কার ২১, অ্যাম্বুলেন্স ৫, জিপ ৫, মোটরসাইকেল ১৯৪, থ্রি-হুইলার ১৩১ (ইজিবাইক-সিএনজি-অটোরিকশা-অটোভ্যান-লেগুনা-হিউম্যান হলার), স্থানীয়ভাবে তৈরি যানবাহন ৩৯ (নছিমন-ভটভটি-টমটম-মাহিন্দ্র-ইট ভাঙার মেশিন), বাইসাইকেল ১২, প্যাডেল রিকশা ৩ ও প্যাডেল ভ্যান ৮টি।

রোড সেফটি ফাউন্ডেশন বলছে, সময় বিশ্লেষণে দেখা যায়, দুর্ঘটনাগুলো ঘটেছে ভোরে ৪ দশমিক ৫৮ শতাংশ, সকালে ২৮ দশমিক ৮২, দুপুরে ২২ দশমিক ২, বিকেলে ১৮ দশমিক ৫৫, সন্ধ্যায় ৫ দশমিক ৬৭ ও রাতে ২০ দশমিক শূন্য ৮ শতাংশ।

দুর্ঘটনার বিভাগওয়ারি পরিসংখ্যান বলছে, ঢাকা বিভাগে দুর্ঘটনা ২৭ দশমিক ৭২ শতাংশ, প্রাণহানি ২৭ দশমিক ৩৬ শতাংশ; রাজশাহীতে দুর্ঘটনা ১৫ দশমিক ২৮, প্রাণহানি ১৫ দশমিক ২২; চট্টগ্রামে দুর্ঘটনা ২১ দশমিক ৬১, প্রাণহানি ২১ দশমিক ৫৭; খুলনায় দুর্ঘটনা ১০ দশমিক শূন্য ৪, প্রাণহানি ৯ দশমিক ৮২; বরিশালে দুর্ঘটনা ৪ দশমিক ৮০, প্রাণহানি ৫ দশমিক ৭৮; সিলেটে দুর্ঘটনা ৪ দশমিক ১৪, প্রাণহানি ৪ দশমিক শূন্য ৪; রংপুরে দুর্ঘটনা ৮ দশমিক ৯৫, প্রাণহানি ৮ দশমিক ৮৬ এবং ময়মনসিংহ বিভাগে দুর্ঘটনা ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ, প্রাণহানি ঘটেছে ৭ দশমিক ৩২ শতাংশ।

ঢাকা বিভাগে সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে; ১২৭টি দুর্ঘটনায় ১৪২ জন নিহত হয়েছেন। সিলেট বিভাগে সবচেয়ে কম, ১৯টি দুর্ঘটনায় ২১ জন নিহত হয়েছেন। একক জেলা হিসেবে ঢাকায় সবচেয়ে বেশি দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে। ৩২ দুর্ঘটনায় ৩৭ জন নিহত হয়েছেন। সবচেয়ে কম দুর্ঘটনা ও প্রাণহানি ঘটেছে মাগুরা, ঝালকাঠি ও সুনামগঞ্জ জেলায়। এই তিন জেলায় সাতটি দুর্ঘটনা ঘটলেও কোনো প্রাণহানি ঘটেনি। রাজধানী ঢাকায় ২৬টি দুর্ঘটনায় ২৪ জন নিহত ও ২৯ জন আহত হয়েছেন।

গণমাধ্যমে প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে পুলিশ সদস্য ৯ জন, সেনাসদস্য ২, বিজিবি সদস্য ১, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার শিক্ষক ১৭, চিকিৎসক ২, প্রকৌশলী ৩, সাংবাদিক ৪, আইনজীবী ২, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক উপমহাব্যবস্থাপক ১, বিভিন্ন ব্যাংক কর্মকর্তা-কর্মচারী ৯, এনজিও কর্মকর্তা-কর্মচারী ১২, বন কর্মকর্তা ২, মসজিদের ইমাম-মুয়াজ্জিন ৬, ওষুধ ও বিভিন্ন পণ্যসামগ্রীর বিক্রয় প্রতিনিধি ২৩, স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ব্যবসায়ী ৩৭, পোশাকশ্রমিক ৬, নির্মাণশ্রমিক ৩, রংমিস্ত্রি ২, প্রবাসী ৩, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতা ১১, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীসহ সারা দেশের বিভিন্ন স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৩ জন শিক্ষার্থী নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া ১৮ পুলিশ সদস্য ও ২ সেনাসদস্য আহত হয়েছেন।

Advertisement
Share.

Leave A Reply