ধরুন, মোবাইলে খুব গুরুত্বপূর্ণ এক কাজ করছেন। ঠিক এই সময় আপনার ফোনের চার্জ শেষ হয়ে গেল। আর মোবাইল চার্জ দেওয়ারও কোনো অপশন আপনার হাতে নেই। তখন নিজের কপাল চাপড়ানো ছাড়া আর কিছুই করার থাকবে না।
কিন্ত এখন যদি এমন হতো যে, আপনি আপনার হাতের আঙুলের ঘাম দিয়েই নিজের ডিভাইসকে চার্জ দিতে পারবেন? চোখ বন্ধ করে ভাবুন তো এক মুহূর্ত? কেমন হতো?
এমনই এক প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার বিজ্ঞানীরা। তাদের দাবি, এবার থেকে মানুষের ঘাম থেকে উত্পন্ন শক্তি দ্বারাই চার্জ করা যাবে স্মার্টফোন। ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এমন তথ্যই জানিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা দাবি করেন, তারা এক ধরনের বায়োব্যাটারি তৈরি করেছে। সেই ব্যাটারি স্টিকারের মতো লেগে থাকবে মানুষের আঙুলে। হাতের ঘাম থেকে উৎপন্ন হবে বিদ্যুৎ। সেই বিদ্যুতে চার্জ হবে স্মার্ট ফোন।
ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া, সান ডিয়েগোর একদল গবেষক এই যুগান্তকারী চিন্তাটিকে বাস্তবায়িত করেন। তিনি বলেন, ক্যালরি ‘বার্ন’ করলে ঘাম হয়। আর সেই ঘামের মতো পদার্থ থেকে শক্তি উত্পাদন করা যায়। এই চিন্তাশক্তির দ্বারা চালিত হয়েই এই গবেষণা করেন বিজ্ঞানীরা। তবে এই স্ট্রিপে বিদ্যুৎ উতপাদন করতে হলে, আপনাকে কষ্ট করে ঘাম ঝরাতে হবে না।
জানা গেছে, এই যন্ত্রটি ইলেক্ট্রিক কন্ডাক্টর এবং কার্বন ফোম দিয়ে তৈরি। কার্বন ফোম ঘাম শুষে নেয়। এই স্ট্রিপে এনজাইম বা এক ধরনের প্রোটিন, যা ল্যাকটেটকে পাইরুভিক অ্যাসিড-এ রূপান্তর করে। ফলে দুটি ইলেকট্রন উন্মুক্ত হয়। ইলেকট্রন চার্জ, যা থেকে বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন হয়। ঘামে যত বেশি ল্যাকটেট থাকে, তত বেশি বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপন্ন হয়। একটি যন্ত্রের সাহায্যে এই বিদ্যুৎ মাপা যায়। তা থেকে ঘামে ল্যাকটেট-এর ঘনত্বও বোঝা যায়।
ল্যাকটেট থেকে পাওয়া বিদ্যুৎ দিয়ে শুধু মোবাইল চার্জ নয়, বরং ছোট ছোট আরও অনেক ইলেকট্রনিক যন্ত্রও চালানো যায়৷ যেমন হার্টরেট মনিটর, স্মার্ট ফোন ইত্যাদি। তবে সেন্সরটি খুব ছোট হলেও তা দশ ঘণ্টা পরে থাকলে চার হাজার মিলিজুল শক্তি উত্পন্ন করবে। একটি ইলেক্ট্রনিক ঘড়ি তাতে ২৪ ঘণ্টার পর্যন্ত চালানো যায়।